শতপদী!তোর কোমরটা ভঙ্গুর
পা গুলিতে নেই কোনো জোর।
বসতে অপারগ বলে রাতদিন
দাঁড়িয়ে থাকিস যেন অর্বাচীন।


দেহটা হয়েছে কঙ্কালের মতো
বেড়িয়ে পড়েছে বুকের পাঁজর      
সমস্ত শরীরটা কাঁপছে থর থর    
ম্যালেরিয়াতে কাঁপুনির মতো।


মাংসপেশির দেখা নাই মোটে  
হা-ভাতে যেমন পরের উচ্ছিষ্ট
উদরে পোড়ে তেমনি অবশিষ্ট
যেটুকু থাকে তোর ভাগে জোটে?


রোগে বিদীর্ণ দেহখানি তোর  
বিষক্রিয়ায় মৃত-প্রায়ের মতো  
মুখ দিয়ে গ্যাঁজা ঝরছে নিয়ত  
দৃষ্টি!সেটিও আবছা ঘন ঘোর।


অকাল-বার্ধক্যে তুই হীন-বলি  
রঙ-এর প্রলেপে লাবণ্য ফিরে
পেয়ে উৎসুকে জনতার ভিড়ে      
তুই ভার বইতে কেন গেলি?


বোঝা বইতে দেহটি অপারগ  
একথা বোঝে না পার্শ্বস্থ সড়ক।  
বোঝা চাপাচ্ছে ওরা নিরবধি
ওরা কি দেবে তোকে সমাধি?


‘উড়ালপুল’ বলে চেনে তোকে
ঘুঘু পাখীরা পিঠে বসে থাকে।  
ওরা তোর খাবারটুকুও কেড়ে
মৃত্যু-পরোয়ানাও জারি করে।


মৃত্যুর পরে দিতে হবে সমাধি
ওরা সবাই জানে নিয়ম বিধি।
সেই সমাধি নির্মাণের ফরমান
লিখেছে তাদের বিশ্বস্ত যজমান।


শতাধিক মজদুর সবাই ছুটলো  
গিনিপিগের মতো একত্রে এলো।  
তাদের হাতে সময়ের সংকুলান
ত্বরায় সমাধি গড়বার ফরমান।  


ওরা সদলে গড়ছে সেই সমাধি
পড়ন্ত বেলায় বসে সেসব দেখি।
মরমে মরি তীব্র দহন যন্ত্রণায়  
যখন দেখি ঘুঘুরা ভয়ে পালায়।


মজদুরদের চক্ষুগুলি অশ্রু ঝরা
যেন শ্রাবণের ক্ষিপ্ত বারি ধারা।
উচ্ছ্বাস হারা তোর জীবন ধন
শুনতে পেয়েছে নিয়তির সমন।  


বার্তাবহের সাথে যাস পরপারে
ছায়াপথকে ধরে মুক্তির তরে।  
মজুররা সেই চত্বর সাফ করে  
ধুপাগ্নি জ্বালাবেই তোর শিয়রে।