ঊষাকাল থেকে নিত্য নতুন সৃষ্টির উল্লাসে
ধুতির শেষভাগটা কোমরে আঁটসাঁট বেঁধে
সৃষ্টিকর্তা নামলেন কাজে।
সারা দেহ থেকে শিশিরের মতো ঘাম ঝড়ে।
অক্লান্ত পরিশ্রম করে বসুন্ধরাকে শস্য শ্যামল  
বাগ বাগিচা দিয়ে সাজালেন অপরূপ সাজে।
সদা হাস্যময়ী রমণী তাঁর সন্তানদের নিয়ে
মাতলেন আনন্দ উল্লাসে।
ক্ষুধিত পাষাণ,বড়ো বেমানান।নতুবা কেন
অসুর দল ছুটে এসে তাণ্ডব নৃত্য করে শেষে
ঠাই নিলো বাগবাগিচার পাশে।ওরা ক্ষুধার্ত
বাঘ যেন।আশৈশব আধপেটা খেয়ে বেহাল।
হুঙ্কার দিয়ে অসুররা ধরণীকে ছিঁড়ে খেতে
করলো আয়োজন।নখর জন্তুদের মতো ওরা
সবার মুখের খাবার কেড়ে নেওয়ার সুতীব্র
লালসায় লকলকে জিভ বের করে বসেছে
উল্লাসে।
এই বিশ্বের সব সম্পদের একছত্র অধিকারী
হওয়ার মানসে অস্ত্র হাতে নিয়ে দিচ্ছে প্রহরা।
ভাবখানা দেখে মনে হয় যেন ওরা নিয়েছে
এই ধরণীর সব সম্পদের ইজারা।
ইদানীং ওরা তাকে জ্বলন্ত সিগারেটের মতো
দুই আঙ্গুলে চেপে ধরে গড়গড় করে দিচ্ছে
টান।কালো ধোঁয়ায় ছেয়েছে আসমান।
বসুন্ধরার নিরীহ প্রাণীদের দম বন্ধ হওয়ার
দশা।ওরা কাশছে খকখক করে,রক্ত বমিও
করছে যক্ষাগ্রস্ত রোগীদের মতো।বাঁচার শেষ
ভরসা খুঁজতে তারা ব্যস্ত।
অসুররা সুখটান দিচ্ছে যত,নিরীহ প্রাণীদের
থেকে ছিনিয়ে নেয়া সব সম্পদ যেন ঢুকছে          
ওদের ফুসফুসে,ফুলছে গ্যাস বেলুনের মতো।
নিকোটিনের মতো সেসব বুকে জমে ওদের
মৃত্যুকে করছে ত্বরান্বিত।
বিধিবদ্ধ সতর্কবার্তাকে উপেক্ষা করলে যেমন      
দুর্যোগ ঘনিয়ে আসে,তেমনি আকাশে মেঘের
কুণ্ডলী দেখা দিলো তীব্র রোষে।  
তীব্র অর্থসংকট হতভাগা মানুষের ঘরে ঘরে
করোনা ভাইরাসের মতো ঢুকে পড়ে।অসুরের
ভয়ে ডরে।ঘরে বসে ফিসফিস করে বলছে,
‘কী যে দিনকাল।বোঝা দায়,এই অসুরদের
হালচাল’।
সূর্য যাচ্ছে নির্বাসনে রঘুপতির মতো।আঁধার
ঝুঁকছে বসুন্ধরার বারান্দায়।অচিরে সে ঢুকবে
ঘরে কালো বিড়ালের মতো।নিবিষ্ট চিত্তে বসে
সব কান পেতে শুনছে আঁধারের দেওয়াল।