তোমরা বলো শান্তি চাই,শান্তি!
বিশ্বমায়ের হিমবাহের মতো নিয়ত প্রবাহমান
স্নেহ-সম্পদের থেকে তুলে আনা সে যেন
অতি সামান্য আকুতি।
ভাবি বৈকি,বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভয়াবহ যুদ্ধ
সমুদ্রের মতো গর্জে উঠছে,তাই কি এই আকুতি?
তোমরা গাও শান্তির গান, শুনি!
ভেবো না,এ গান শুনে কাঁপে আমার হৃদয়খানি?
কাঁপবে কী? সে হওয়ার নয়!
আকুতি মিনতিতে অস্ত্রের উৎখাত কি হয়?
ভাঙ্গা কাঁসর-ঘণ্টার ধ্বনির মতো এ শান্তির গান
শুনিও না আর!
এসব শোনানোর কী দরকার?
প্রশ্ন অনেক, না-ই বা জিজ্ঞেস করলাম সব,
জিজ্ঞেস করতে বাধ্য হচ্ছি যে গুলোর উত্তর
না-পেলে নয়!
বলবে কি,অস্ত্র কারখানাগুলো গড়ে উঠেছে কি
এলিয়েনদের দেশে কিবা আকাশে?
কে লাগালো এই কারখানাগুলোর গায়ে শিল্পের তকমা?
কেন বিশ্বজুড়ে মারণ-ঘাতী অস্ত্র ব্যবসার রমরমা?
জানি না!বলতে পারো হিংসার বলয়ে থেকে
খাণ্ডব-বনকে দাউদাউ করে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে
মানুষকে কিভাবে দেবে শান্তির ঠিকানা?
একেই বলে নাকি অন্ধত্ব?
বিশ্বের মানবতাবাদী সংঘটনগুলো দেখে কি এ কাণ্ড?
অস্ত্র কারখানার কর্মীরা সব রোবট নয়,নিশ্চয়।
বলি,এই মারণ-ঘাতী অস্ত্র কারখানাগুলিকে
বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিতে কেন ভয়?
বলবে,সমগ্র বিশ্বের অস্ত্র কারখানাগুলির
কাঁচামাল ও অর্থের যোগান দিতে
এলিয়েনরা কি ভিন্ গ্রহ থেকে নেমে আসে?
বলি,গালভরা মিষ্টি কথা শুনিও না আর
কর্মসংস্থানের কী হাহাকার!
তাই অস্ত্রকারখানাগুলো গড়ে তোলা দরকার।
তাহলে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে তাদের নিশানা
করে,বলো,গড়বে আরো আরও অস্ত্রকারখানা?
বলবো কী,গাত্রদাহ হয় দেখে এ কাণ্ডখানা!
বলো,ভাবনায় পাহাড়-প্রমাণ অসংগতি আছে কিনা
যেখানে বেকার যুবক-যুবতীদের হিতে
কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও সেই সাথে
মানুষও মরবে মারণঘাতী অস্ত্রাঘাতে?’
বলো,কী করে মানবতা রক্ষিত হবে একসাথে?
শিশুদের লালিপপ দিয়ে ভুলিয়ে রাখার মতো
এ এক উদ্ভট ব্যবস্থা নয় কি?
বোকার স্বর্গরাজ্যে বাস করছি নাকি?
জানি,বলবে বৈকি,কর্মসংস্থানের এই ব্যবস্থা
করা ছাড়া গত্যন্তর কি?
বলতে বাধ্য হচ্ছি, বিকল্প পথ খুঁজতে হবে ঠিকই।
সেকাজ না-করে নিরীহ মানুষদের বাড়া-ভাতে
ছাই দিতে পারো কি?
ক্ষোভ তুষের আগুনের মতো জ্বলছে,
তোমাদের আজগুবি কাণ্ড দেখে।
তারই সামান্য উগরে দেবো নাকি?
বলো,অস্ত্রের মুক্তবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা কে বা কারা?
জেনে রাখো, অস্ত্র শান্তি রক্ষার উপায় হতে পারে না।
অস্ত্র ,এ বিশ্বে শান্তি রক্ষায় মহামানবদের শান্তির বাণীর
কোনও বিকল্প হতে পারে না কখনও।
শোনো, মিনতি ভরা আকুতি নয়
আমি বলি, যুদ্ধ চাই, যুদ্ধ!
সব অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে,
এ বিশ্ব থেকে সব অস্ত্রের কারখানা গুঁড়িয়ে দিতে।