''ছি ছি! একি করছেন!
আমি ঘুষ খাই না।
আপনার ধুলিপড়া ফাইলটা
আমি এমনিতেই এগিয়ে দিতে পারি
নির্দ্বিধায় বলতে পারি,
'প্লীজ, এইবার ছেড়ে দেন না স্যার
কতো দূর থেকে প্রতিদিন আসে।
নিখাঁদ ভদ্রলোক।'
এটাকে সুপারিশও বলতে পারেন।


এই এই! এভাবে হাতে ধরার কী আছে?
আশ্চর্য!
অর্থনৈতিক আস্ফালন আমাকে দেখিয়ে লাভ নেই
আমি সুদও খাই না।
আমি যা খাই, তা হলো পরিশুদ্ধ মানুষ;
তাঁর অস্থিমজ্জা খাই
সুবুদ্ধি খাই
সুবিবেক, সুবিবেচনা খাই
বিচারবুদ্ধি, বিচক্ষণতা খাই
আরও কিছু কিছু খাই উদ্বৃত্ত যৌবন, সৌন্দর্য!


আমি আগে খেতাম
আগে মানে আগে, যৎসামান্য পূর্বেও
কিছু কিছু অমানুষও খেতাম।
তার অশিক্ষা-কুশিক্ষা খেতাম
হিংসাসমেত হৃদয় খেতাম
খেতাম ধারালো নখ ও তার আঁচড়!


আমি এখন যা খাই
এখন মানে এখন, বর্তমানে;
রহিমের দোকানের একটু-আধটু রং চা
মাঝে-সাঝে এক-দু'টান সিগারেট
সফেদ বইয়ের পাতায় হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত
সমবয়সী একটি-দুটি আঙ্গুল
রাত জাগা ঠোঁট মেলানো ঠোঁটে
সপ্তাহান্তে খাই দু-চারটি লিপলক চুমু।

এখন আর তেমন কোনো গল্প-উপন্যাস খাই না
খাই না রূপকথার গৎবাঁধা কোনো আখ্যান!
দেয়াল জুড়ে ফটোগ্রাফিক চেতনা_
অসুস্থ শব্দ-বাক্য
আমার তেমন একটা সুখাদ্য নয়।
আমার সুখাদ্যগুলো সংখ্যালঘু
তাই রোজকার ডায়েটে
চেষ্টা করি রাখতে, একটু সন্ন্যাসী ঝোল
তিনটি বিপ্লবী রুটি!


আমি এখন অনেক সুখাদ্যই খাই না
আবার অনেক কুখাদ্যই খাই
প্রচলিত অনেক কুখাদ্য শব্দ খাই
প্রচলিত অনেক কুখাদ্য বাক্য খাই
প্রতিরাতে খাই আপনাদের গুডবুক থেকে
ফেলে দেওয়া ডজন খানেক কুখাদ্য কবিতা।


আমি ঘুষখোর নই
আমি সুদখোরও নই
বলতে পারেন কুখাদ্য কবিতাখোর;
রোজ সুয়াদ করে অসংখ্য কবিতা খাই।
আমাকে ঘুষ খেতে দিবেন?
কবিতা দিন।
আমাকে সুদ খেতে দিবেন?
কবিতা দিন।
অন্তত দিন বিস্বাদ দু-একটি পঙক্তি!"