পৃথীবীর আলোটাকে যে তোমায় দেখালো
মাঠেঘাটে করে কাজ লেখাপড়া শেখালো
একটাই আশা ছিল শুধু তার বুকে
লেখাপড়া শিখে খোকা রাখবে যে সুখে
অনাহারে থেকে নিজে এনে দিতো খাবার
সব ব্যথা মেনে নিতো হাসি মুখে আবার
ধীরেধীরে খোকা তার বড় হয়ে গেলো
লেখাপড়া শেষ করে চাকরীও পেলো
এইভাবে কিছুদিন থেকেছিল সুখে
শান্তির বাতায়ন দেখা দিলো বুকে
কিছুদিন পরে খোকা করলো যে বিয়ে
ধুমধাম করে তার বৌ এলো নিয়ে
একদিন বৌ তাকে ডেকে বলে শুনো
এই ঘরে থাকবো না করো যদি খুনও
এই শুনে বলে খোকা হয়েছে কী বলো
কোথাও যে দিয়ে আসি বুড়োটাকে চলো
বৌ তাকে এই কথা বলেছিল যখন
খোকা কোনো প্রতিবাদ করেনি'তো তখন।
বুড়ো তার মনেমনে ভাবে শুধু হায়
এই ঘরে থাকা আজ হলো বুঝি দায়!
কিছুদিন পরে এক শিশু এলো ঘরে
মনে জমা কালো মেঘ গেল দূরে সরে।
নাতিটাকে কোলে নিয়ে সব ভুলে গেল
হৃদয়ের নীড়ে তার সুখ ফিরে এলো।
এইভাবে কিছুদিন কেটেছিল তার
বিধাতাও সুখ দেখে মুখ করে ভার!
একদিন বৌ তাকে ডেকে বলে শুনুন
কতদিন এইভাবে থাকবেন বলুন?
সব শুনে বুড়ো তার বৌ-মাকে বলে
কোথায় মা যাবো আমি বলো যাই চলে?
বৌ তাকে রেগে-মেগে কি জানি কি বলে
অভিমান করে বুড়ো যেই যাবে চলে
দূরথেকে খোকা তার সব শুনে এসে
বৌয়ের উপরে সে চড়া হয় শেষে
খোকা বলে তোকে আমি ছেড়ে দিতে পারি
পৃথিবীতে বাঁঁচবোনা আমি বাবা ছাড়ি।
ছোটথেকে এতবড় করেছেন যিনি
কষ্টেতে থাকবেন কেন আজ তিনি?
বাবা যদি সুখে থাকে সুখী হবো আমি
বাবা ছাড়া পৃথিবীতে নেই কিছু দামী।
এই শুনে বুড়োটার চোখে এলো জল
দেখে তার ভালোবাসা হয়নি বিফল।
প্রার্থনা করে বুড়ো বিধাতার কাছে
পৃথিবীতে যেন খোকা বহুদিন বাঁচে।