নিস্তব্ধ রাতে আমি একা ।
নেই কোন স্বজন, নেই কোন প্রিয়জন
ধরণীকে মনে হয় যেন ফাঁকা ফাঁকা ।
সকল মানুষ ,প্রাণী কোথায় যে গেছে চলে
নিস্তব্ধ রাতে আমাকে একা ফেলে ।
মাঝে মাঝে শুনি আমি বাহিরে
নিশাচর প্রহরীর ডাক।
মধ্যরাতে ভেঙ্গে যে যায় ঘুম,
নয়ন আমার দেখে হুতুম পেঁচার ঝাঁক।
কেমনে কাটাব আমি এ নিস্তব্ধ রাত !
একাকী পেয়ে মোরে
জ্বালাময় স্মৃতি দেয় যে আঘাত ।


পাশের বাড়ির কাজের মেয়ে নুরি ।
এক নিস্তব্ধ রাত্রিতে তার চিৎকারে
আঁখি দিয়ে বর্ষেছিল অজস্র অশ্রুসারি ।
আমি অধম শুধু কেদেঁছি-
তার সাথে সুর মিলিয়ে ।
নীরবে সকল অত্যাচার যায় সে সয়ে ;
কারণ,  সে যে  ছিল কাজের মেয়ে !
যদি সেদিন আমি ভুলে যেতাম ক্রন্দন,
আমায় দেখতে হতোনা এ কিশোরী মরণ ।
নিস্তব্ধ এ রাতে নুরি আমায় বলে আজ-
দাদা; দূর করো তুমি সকল ভয় আর লাজ।
যে লজ্জা ছিল আমার তা এখন আর নেই।
কারণ আমার যে মানবী  শরীর ছিল;
সেটা এখন কীট-পতঙ্গের দখলে
এটা বোধহয় তোমার জানা নেই।
নিস্তব্ধ রাতে থামাতে পারিনা আমি অশ্রুকে ।
যখন মনে পড়ে যায়-
রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো সেই অসহায় বৃদ্ধকে।
যার সন্তান তার ভার নিতে পারেনি ।
সন্তান সে নরককীট - এটা আমি জানি ।
নিস্তব্ধ এ রাত আমায় নিদ্রা দেয়না,
কেননা শুনতে পাই আমি অবিরত
ঐ দুঃখিনী মায়ের  কান্না   ।
মায়ের অশ্রুমুল্য যে দেয়না;
ক্ষণে ক্ষণে সে পায় নরক যন্ত্রণা ।
নিস্তব্ধ এ রাতে প্রশ্ন করে আমার মন-
কেন এক শিশুর হাতে  রবে কলম ?
অন্য শিশুর হাতে  কেন  ঘাতক বোম ?
কেন এক শিশু দুধ করে পান ?
অন্যদল করে কেন  ধুমপান ?
কত মা মাতৃত্বের স্বাদ নেবার জন্য
বিনা চিকিৎসায় মারা যায়  ।
আবার কত ঘৃণ্য  নরখাদকের জন্য
হাজারো ভ্রুণ  যে নষ্ট হয়ে যায় ।
নিস্তব্ধ এ রাতে আমার পাখি আমায় বলে-
কতদিন প্রিয়  তুমি থাকবে  ছন্নছাড়া ?
আর কত ফেলবে তুমি অশ্রুর বারিধারা ?
একবার দিব্যচক্ষু দিয়ে আমায় তুমি দেখনা;
তোমার এ  বিষাদ যে আমার আর সয়না ।
নিস্তব্ধ এ রাতে তোমায় মিনতি করি হে ভগবান-
সৃষ্টির সকলে যেন থাকে বিপদমুক্ত ।
সহিষ্ণুতা দাও মোরে ধরিত্রীসম ।
শক্তি দাও মোরে পবনতুল্য ।
অশঙ্ক করে তুলো সব্যসাচীর ন্যায় ।
ক্ষত্রিয় কর্ম  মেনে চলে যেন এ হৃদয় ।
ভস্ম করতে পারি যেন সকল অন্যায় ।
নিজের জন্য  চায়না কিছু এ প্রভাকর
যে কার্যের জন্য পাঠিয়েছ তুমি
সে কর্ম যেন সমাপ্ত করতে পারি
এই প্রার্থনা করছে  আমার এ অন্তর ।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ আন্দলিত
হয়েছে তরুন তরুনীদের মনে মনে,
প্রদ্বীপের আলো থেকে বর্ধিত  হয়
যেন সে বিদ্রোহ  সূর্যালোকে ক্ষণে ক্ষণে ।