এ পথ ছিল ধূসর ধুলোমাখা,
দেখেছ কি, তুমি?
এখানেই সেই পুরনো পুকুরটা ছিল,
লতাকবঞ্চ আর কলমী লতায় ঘেরা,
দেখেছ কি, তুমি?
মনে আছে সেই ভ্রামণিক ভাঁটফুল?
যা ছোট্ট শিশুটির হাতে ফুটেছিল,
যেন তিয়াষার তৃণলিপি।
দেখেছ কি, তুমি?
হরিৎ চিরল বাঁশপাতা চিরে ভেসে আসা,
সেই যে ডাহুকের কু তান,
শুনেছ কি, তুমি?
এটাই সে পথ,
যে পথে ভাসতো অলীক বনঘুঘুর গান,
যে পথে নাচত শতরঙ্গা প্রজাপতি আর
যে পথে সাজতো কুমারী।
ভুলে গিয়েছ কি, তুমি?
নগ্ন বনদেবী যে পথে গাইতে থাকে আত্মরতিগান,
পদ্মভাসা সরোবরে
ঠিক যেখানে সটান বেয়ে পড়ে শুদ্ধ জলধারা,
সেখানে তুমি
দেখ নি কি কিশোরীর স্নান?
এখনও তুমি,
অনুমানেই ব্যাস্ত, নীল নীরদমালা?
নীরদমালা,
সেই পথেই,
ঠিক সেই পথেই,
লুকোনো রয়েছে সব মোহ,
মায়া,
ভ্রম আর
বিষাদের দাহগাথা,
মর্মচেরা দুঃখক্রম।
কেননা এই পথেই প্রথম পরিচয় হয়েছিল তোর সাথে,
বিচ্ছেদটাও তো
এই পথেই।
আর
সেই ধূসর ধুলোমাখা পথ, লতাকবঞ্চ-কলমী লতা ঘেরা পুরনো পুকুর, ভ্রামণিক ভাঁটফুল, শিশুটি, তিয়াষার তৃণলিপি, ডাহুকের কু তান, বনঘুঘুর গান, শতরঙ্গা প্রজাপতি, সজ্জিত কুমারী, নগ্ন বনদেবী, আত্মরতিগান, স্নানরত কিশোরী
সে তো আর কিছু নয়, কেউ নয়
নীল নীরদমালা তুই স্বয়ং।
ভুলে গিয়েছ কি, তুমি?