যে মাটির গন্ধে ভরা মায়ের সোহাগ-
সে মাটিতেই শেষ হয় লাঞ্ছনার দুর্গ্রহ।
নয়টি মাস চোখের দিব্যিতে কালিমা লেপেছে তৎকালীন বর্বরতা।
ঘাপটি মেরে থাকা তীব্র জিঘাংসায় অনাহূত ছিল দেশের প্রাচীর।
লাশের পর লাশ বর্বরতার তীব্র বিষ জানান দিয়েছিলো।
রক্তের লালে পচে দেহের সাক্ষী একাত্তর।
একাত্তর মানে সম্ভ্রমের সর্বনাশ,
পরিজনের প্রতি হীন পরিহাস।
ঘুমের চোখে বেয়নেটের খোঁচা।
একাত্তর মানে এটাই।
একাত্তর মানে সফেদ সাদা বিধবার আকুতিভরা সর্বভিক্ষা।
একাত্তর মানে লেলিহান আগুন।
একাত্তর মানে লালসায় পোড়া দিকবিদিক বাংলার মা।
একাত্তর; তোমার চোখ যেন পরাধীনতার শেকল বাঁধন।
বীরাঙ্গনার মানবিক চারণে উলটানো মস্তিষ্ক।
একাত্তর মানে লুণ্ঠিত ভাইয়ের মন-
চোখের সামনে বোনকে ধর্ষণ।
একাত্তর মানে তরতাজা যুবকের, তরুণের-
জয় বাংলা বলে বাড়িছাড়া হওয়া।
একাত্তর মানে স্ত্রীর কান্না জড়ানো নীরবতা।
একাত্তর মানে ভাইকে হারানো এক গুলিতে কপালে বাস্তবের চশমায়।
একাত্তর মানে বঙ্গবন্ধুর বরফ ঘেরা বন্দিত্ব।
দৃপ্ত সপথে বলীয়ান কাছা গায়ে থ্রি-নট-থ্রির একাগ্র নিশানা।
একাত্তর মানে শোষণ-বঞ্চনার বিদিকে সুতীব্র বিদ্রোহ-
দাঁতভাঙা কঠিন জবাব।
একাত্তর মানে রক্ত-লাশ নিয়ে হলিখেলা।
একাত্তর চেতনায় মহিমান, মহীয়ান।
একাত্তর ফিরে দেখা ভাষার কণ্ঠে বীরগাঁথা-
দেশের জন্য প্রয়াণ।
একাত্তর আমার নিঃশ্বাস, তোমার নিঃশ্বাস।
বাতাস ভারী আজও ত্যাগে ম্রিয়মাণ।
একাত্তর তুমি লাল টকটকে রক্তের স্রোত।
আমার-তোমার খোলা জানালায় সব দিকের বাতাস।
তুমি একাত্তর আজও তো কাঁদো-
সব শবের বিনা জানাজায় একসাথে গণকবরে আবদ্ধ প্রাণের শ্বাস।
তোমাকে ভোলা অসম্ভব; হে একাত্তর।
একাত্তর তুমি দু'বেলা দু'টো ভাতের মতো অহংকার।
একাত্তর মানে বীরের জয়ধ্বনি।
ক'টি দেশের সার্বিক সমর্থন।
একাত্তর তোমাকে নিয়ে লেখা মানে-
মহাসাগরের কালিতে-কলমেও লিখে না শেষ হওয়া
এক অম্লান বিধুর কাহিনী।