পেছনে ফিরে তাকালে কতশত মূর্ত আতংকিত মুহূর্ত যে দরজায়-
করা নেড়ে গেছে তার কোন ঠিক নেই।
ঘুমন্ত সদ্যপ্রসূত শিশুকে না জাগিয়ে উড়িয়ে ফেলে দেয়া মস্তিষ্ক-
মায়ের আঁচলে প্রাণপণে অবারিত শান্তি খুঁজতে গিয়ে দেখে-
মাতৃজঠর দিকভ্রান্ত নির্যাতিত ওদের চৌকাঠে-
বিবর্ণ ক্লান্ত হয়েছে অজস্র এমন কত যে অনাচার আর গ্লানি।
কুরে খাচ্ছে আজো যেন সেই তীব্র আর্তনাদ-
স্বাধীনতার পঞ্চাশ ছুঁয়ে কথা বলে দিকবিদিক এক করে-
অবিচল গুনে শকুনের চঞ্চু মর্মন্তুদ সেই বিষাক্ত রাত্রিদের-
এফোঁড়ওফোঁড় গন্ধে ভরা সারা দেহ প্রতিজ্ঞা এমন-
যেন আবার যদি আসতো ফিরে একাত্তর,
তবে ওদের বুনো উল্লাস টুকরো টুকরো করে-
রক্তের আঁখরে ভাসিয়ে ভাষার বুকে লাথি মেরে পিপাসা মেটানো-
নরঘাতকদের উর্দি ছিঁড়ে কুটিকুটি করে-
পদ্মার বুকে ছড়িয়ে দিতো নয় মাসের জিঘাংসায় খণ্ডিত-
ছিন্নভিন্ন ক্ষুণ্ণ বিনাশ হওয়া নারীত্বের পূর্ণগ্রহণ।
যে জোর ঝড়ো বাতাসে এলোপাথাড়ি গণব্রজ ঝংকারে-
লেলিয়ে দেয়া বজ্রাহতে মূক হয়ে পুরুষের সর্বনাশ চোখের সামনে,
দিব্যি কাপড় খুলে দেখা-
কে মুসলিম আর কেইবা হিন্দু হলে ধরে নিয়ে আগুনশিখায় দাহ!
বিনাপরাধে মারাত্মক যে অনাচার অপাচার পাপাচার,
কলঙ্ক ছড়ানো ধর্মের গ্রহে দুর্গন্ধে ঠাঁসা তেঁতো ওদের মুখের বচন,
ভয়ঙ্কর দম্ভে পোড়া মুখের দেহে ঠাটানো চোখের প্রতি ইশারায়-
ঘৃণ্য বর্বরতা যখন ইচ্ছে যেভাবে হোক ভোগের কলসে জল খুঁজেছে।
ন্যাক্কারে জ্বলে আজো কত ঘরের কত প্রদীপ।
ভয়াবহ ওদের জাতিসত্তা এখনো মুখ লুকায়,
মনের গহীনে দগ্ধ ওরা সে ঢের উপাত্তে।
জাগ্রত চোখেদের ভিড়ে এখনো চায়নি ক্ষমা।
প্রতিউত্তরে আমাদের অহংকার চোখ বুজে দেখে-
হতাশ যেন বিবর্তনে একচ্ছত্র জোড়া পার্শ্বপ্রতিমে বন্ধুত্বের উজালায়।
এখনো বাতাসে শুকায়নি নাগরিক দহন।
নরকের কীটের মতো এদেশের মাটির বুনটে জেগে উঠা-
ত্রাসের দিগম্বরদের বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতার সুবাসিত ঘ্রাণ-
কেন যেন ভালো লাগে না কোন সুখের পদব্রজে!
এদেশের মাটি চেয়েছিল ওরা; মানুষ নয়।
স্পষ্ট করে বলে দিলে ভালো হতো মরুভূমির বালুকাও-
চিকমিকে ছিকে হঠাৎ সিক্ত মেঘেদের তালে শুষে নেয়-
পা দেয়া মানুষের দেহও দূরে যেন জলের বহরে-
পুড়তে থাকা তেষ্টার চোটে মরীচিকা ডাকে-
দৃষ্টির সুরে বোনা জীবনের লয়।
অনেক পোড়া জলজ্যান্ত স্বাধীনতার পথ সুবর্ণে স্বরূপ খুঁজে-
মানুষের প্রহর তরঙ্গে তোরণে হাসে ইতিহাসের সাক্ষী-
চিরযৌবনের বলয়।
ত্রাসের পর ত্রাস এসেছে নোঙ্গর ঠিকি ফেলেছে উদ্ভাসিত সেই আহ্বান।
তারপরও চোখ মুছেছে জাতির বিবেক-
অবিন্যস্ত অপদার্থ ঘাতকের আঘাতে আবার যেন ভূলুণ্ঠিত-
স্বাধীনতার সুস্বাদের পাতে ছাই ছড়ানো প্রাণের স্তুতির পাড়ে কবর-
আজন্ম পরব্রতের।
এক জীবনের পরের জীবন অসম্ভবে বুনেছে আশার প্রতিচ্ছায়া,
প্রতিটি ঘাসের বুকে জমা প্রতিবিন্দু শিশিরে পা ভিজিয়ে-
স্বদেশের পথের হৃদিকে প্রান্তরে মানুষের আলিঙ্গনে-
আজ মুখরিত সৃষ্টির কাব্যে উঠে জেগে ভোরের শিশু-
খুঁজে অনুভূতির উষ্ণ অনুরাগ।
ধর্ম যদি হয় ভিন্নতা তবে সংস্কৃতি রীতি একের অপরের-
কেন ভালো লাগে?
কেন ভালো লাগে চেয়ে দেখতে পাশের গ্রহকে?
অপরুপ যে দেশ আমাদের প্রতি অভ্যুদয়ে সূর্যসমান হেসে-
জানিয়ে ফিরে বারবার অত্যাশ্চর্যে গভীর কোলাহলে মেশে,
দীপ্তিময় ভালোবেসে যে চোখের ইশারায় ছুঁতে আসে-
শীতের হিমেল বর্ণে গন্ধে মিশে যাওয়া-
বন্ধুত্বের প্রোতপূর্ত হৃদয়ঘন অভিলাষে।
প্রতি বুকে যারা আত্মত্যাগ গুনেছে,
জেগে উঠে রক্তলালের শপথ দৃপ্তে হর্ষে বিষাদে বিলুপ্ত কখনো নয়।
সঠিক ইতিবৃত্তে মেপে কথা চলুক উদ্ভ্রান্তের মতো নয়।
বিভ্রান্তির চোরাছক আর কতো?
উজানে আজান-পূজা-প্রার্থনার অবিলম্বে কোটি চোখ,
হাতে রেখে হাত সমুখে রক্ততরঙ্গের সতেজ দৃষ্টি-
বিভিন্ন অবলোকনে অভিন্ন সে আলোর সুবর্ণস্রোত।