নামের বিচারে অলংকৃত যদি জীবন হতো যদি সত্যি হতো-
কিছুটাও হোক না লোনাজল যুদ্ধের স্রোতে-
গা ভাসানো ঘর্মাক্ত দেহের বিরল ক্লান্তি চোখেমুখে রেখেও বলতাম-
আমি তো মানুষ, প্রতি পদে কতো যন্ত্রণা কতো বিলাপ-
কতো যে আহাজারি তীব্র আক্রোশে মর্মাহত বন্ধুর পথও।
যদি বলতে কোন শব্দ অভিধানে থাকা আসলেই কি উচিৎ?
পুরোটাই যে নিখাদ সত্যির উপরে সত্যি।
কতো আপন আশ্রয়েও বিষাক্ত হয়েছে নিঃশ্বাস প্রশ্বাস-
ভারি অবনীল মনের বাতায়ন ঘিরে থাকা মেঘাচ্ছন্ন ঝাপসা-
নিগুঢ় নির্জলা জীবনের আকাশটা।
পৃথিবীর যাপিত প্রথম বেলার সেই নিরালার স্মৃতি ভুলা যায় না।
প্রাণের পরতে রঙিন ঘুড়ি ছিল নাটাই হাতে।
একদিন সুতো ছিঁড়ে কোথায় যে উড়ে গেলো-
নিজ হাতে বানানো বাতাসের দোলাচল!
সেই থেকে শুরু দু’টি বছরও পাড়ি যায়নি,
তমস্রার অঙ্কুর ঘিরে ধরেছিল দু’চোখের প্রান্তর।
ঘোলাটে গভীর হয়ে বিদীর্ণ তন্দ্রাময় করেছে-
জীবনের চাকার লোকিত বলয় জুড়ে অহর্নিশ খেলা করেছে-
বিষবাষ্প; প্রোথিত হয়েছে ধীরে ধীরে-
টুকরো টুকরো সাদা পাতার উপর লেখা লাল কালির ধূপছায়া।
ঘূর্ণি খেলেছে অবিশ্রান্ত; এখনো যে তাই চলছে।
হিসেবের বাহিরে জীবনযুদ্ধের প্রতি মাতম-
নন্দিত থেকে নিন্দিতের পরাশ্রয়ে পুড়ে হয়েছে ছাই হৃদয়ের স্বপ্নিল প্রতিচ্ছবি।
অব্যক্ত সে অনুভব ঠিক তখন থেকে।
মুখের ভাষায় যায় না যে বলা ছবি এঁকে বলতে হয়।
নিষ্পাপ সময়ের প্রতি খেয়ালে বুনো জিঘাংসার রক্তাক্ত তরবারি-
চোখের সামনে তুলে ধরা হয়েছে-
জেগে থাকা কিংবা ঘুমন্ত নির্জীব নিষ্প্রভ দৃষ্টির নিঃসরণে!
বুকের পাটাতন থেকে সাহসের বাতিঘর গুঁড়িয়ে-
দিকবিদিক বেমালুম বিশূন্য করে আহাজারির দুকূলে ভাসিয়ে-
নির্মমভাবে রক্তবিন্দুগুলোকে নিষ্পেষিত করে-
পর্যটকের বেশে এসে হত্যাযজ্ঞের নীলমুখ-
দুষ্প্রাপ্য প্রবেশিত উত্যক্তের বিরূপ আয়নায়-
দেখানো হয়েছে পরোক্ষে প্রত্যক্ষে।
অবশেষেরও শেষ যেন নেই লঙ্কাকাণ্ডের ত্রিয়শ্রীতে পর্যুদস্ত-
এখনো অবাকে চেতনেও; তবুও মন স্বরূপে ঘোষণা করে-
আমরণ চাতকের চাহনির মতো অসম্ভব অপেক্ষা-
সুনয়নিত জীবনের আস্বাদের প্রজ্ঞাময় বিচরণ-
দূরে বহুদূরে তার ঠিকানা বিস্ময়েও-
আজ এক্ষণের স্মৃতিময় দর্শিত অনুভবে মুহূর্তের অগ্নিজ্বলা অবলোকন।