পৃথিবীর বুকে নতুন মানচিত্র হবার দু’দিন আগে তাঁরা নেই।
বর্বরতার সীমাহীন আঘাতে আঘাতে নয়টি মাসের অকল্পনীয় বিলাপ।
সত্যিই তো এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমাদের অর্জিত-
প্রাণের চেয়ে প্রিয় স্বাধীনতা।
বাংলাদেশের উর্বর মস্তিষ্ক নীলমণি বেছে বেছে ধরে নিয়ে-
পেছনে দু’হাত চোখ বেঁধে এক এক করে ঝাঁজরা করা বুলেটের বিষাক্ত যন্ত্রণায়-
তাঁদের শেষ প্রশ্বাসেও ছিল বাংলাদেশের নাম।
স্বাধীনতার উল্লাসে আকাশ-বাতাস এক করে বিজয়ধ্বনি শুনবার-
বারবার সুবর্ণ মুহূর্তটুকু দু’চোখে দেখার আর সুযোগ হলো না।
তাঁদের কোন দোষ ছিলো না।
বর্বরদের লক্ষ্য ছিলো একটিই-
নব্য জাতিকে মেধাশূন্য করে কিছুটা হলেও পঙ্গু করা।
অত্যাচারের তাজা বেমালুম রক্তের ঘ্রাণে-
সৃষ্টিকর্তাও নাখোশ হয়ে বেঁকে বসেছিলেন।
ক্ষণিকেই স্বাধীনতা ঠিক এরপরই।
চোদ্দই ডিসেম্বরকে উপলব্ধি করে আমাদেরকে শিখতে হবে।
ঘাতকদের চোখ কি এখনো এতো সময় পরও আমাদের দিকেই?
প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশের প্রান্তরের পর প্রান্তরের গভীরে রক্তের মাটিচাপা।
বাংলাদেশের মানচিত্রে তাঁরা হয়তো আঁকতে পারতেন-
নতুন সব অপার সম্ভাবনা।
কিন্তু সময়ের কালবৈশাখীতে তা আর হলো না।
এ পৃথ্বীতে অনেক যুদ্ধ হয়েছে-
কিন্তু এমন রক্তাক্ত ঢেউয়ের বহর কেউ দেখেছে কি?
বিধ্বস্ত হয়ে যায় মনের পাথার।
আমরা যদি তাঁদের না হারাতাম কিছুটা ধীরে হলেও-
উঁচু আকাশ দেখতে পারতাম আমরা সময়ের যোজনে।
চোখ বন্ধ করলে নতুন প্রজন্ম এখনো-
তাঁদের মৃত্যুর দৃশ্য দেখে আরও দেখে সবাই।
গভীর ঘুমেও এখনো আঁতকে উঠে তাঁদের পরম্পরা।
বাঙ্গালিরা তাঁদের কখনো ভুলবে না,
ভুলবে না সময়ের দমেরা।