ঐ একটি দিন’ই ছিল
যেদিন আমাকে পুলকে ভাসিয়ে
না পাওয়ার শূন্যতায় কাঁদিয়ে ছিলে ।
.
যেদিন তুমি আমি ছিলুম
মেঘনায় ভাসমান লঞ্চের কামড়ায় ।
.
তোমার বর্তমান যখন তোমাকে বড্ড বেশী কাতর করে দিয়েছিল ।
.
তোমার কাজল কালো চোখ দুটি যখন
নোনা জলে  দশ মাসের পোয়াতী ছিল .....
বৈকালিক রোদ যখন নদীর জলে আলো ছড়িয়ে
মহানন্দে দোল ছিল ।
.
আর তুমি আমি  মুখোমুখি  বসে  আমাবস্যার আঁধারে  ডুবতেই ছিলাম  ।
.
ঠিক ঐ মুহূর্তেই  জানালার ফাঁক  খোঁজে
এক টুকরো সোনালী রোদ এসে
তোমার গালে  তিড়িং  বেড়িং  নাচছে শুরু করে  ।
এই যেন  সদ্য ভূমিষ্ঠ  হরিণ শাবক  !
.
হায় ! বিষাদ ভরা বুক --- আনমনা  অগোছালো  চোখ
অপলক তাকিয়ে  মজি ....
তোমার  হিরণ্ময়য় গালে ,
চড়ে বসি আলোর সাথে ।
গেয়ে উঠি আমি নেচে যায় সোনালী রোদ.... !
দর্শক সারিতে আমার  তৃতীয় চোখ .... ।
.
তখনো লঞ্চ চলছিল তার আপন মহিমায় ।
মেঘনার বুক ছিঁড়ে.....
দু- যুগল  চোখের অপলক মিলনে
হৃদ – দুটি ভিজে ছিল মনের অজান্তেই ।
.
যদি ও তোমার ঝরে ,
ঘরের ছাউনি ছুঁয়ে  টুপুর টাপুর জল পরার মতন
তোমার পাপড়ি  ভেজা কাজল ধুয়ে পড়ছিল গড়িয়ে গড়িয়ে ।
কামড়া জুড়ে  না পাওয়ার শোকে কাতরাচ্ছিলাম  তুমি আর আমি !!
.
জানো ?
ঐ দিন  আমার  ও ভিজে ছিল
ভেতর জুড়ে বয়ে ছিল বিষাদের ঝড় !
শুধু দৃশ্যমান ছিল না তোমার মতন ।
কিন্তু ।  রোদ আর মেঘনায় বহমান মৃদু বাতাস
শুকিয়ে দিয়েছিল তোমার গাল ভর্তি জল ।
.
অথচ ঃ আমার ভেতরে আদৌ রোদের সঙ্গম মেলেনি বলে ...
কাঁদা মাখা হৃদের  উপর দিয়ে হেঁটেই চলছি .. হেঁটেই চলছি..
তোমাকে  না পাওয়ার আক্ষেপ  বয়ে... ।  
.
যখন চোখে চোখ রেখে  বলেছিলে  
আমাকেই  ঘিরেই  সংসারী স্বপ্ন বুনে ছিলে !
এই সময়টায় ছিল আমার চরম দুঃসময়  ।
.
সেই থেকে আমি আর স্বপ্ন দেখি না
বাহ্যিক হাঁসি ছাড়া হৃদ হাঁসে না
প্রাণ ছাড়া  কী আর প্রাণ বাঁচে  ?
তুমিই  বল ?  আমি আর কেমন করে বাঁচি  ?      
.
তবে ! হ্যাঁ বেঁচে আছি মমি হয়ে ।
কিংবা দেয়ালে টাঙ্গানো ফ্রেমে বাধা ছবি হয়ে ....
এও বলতে পার ।
মোনালিসার পুং- লিঙ্গ হয়ে !


.
কী আশ্চর্য দ্যাখ  !
তোমার আমার যাযাবর  মিলন ।
যখনই তোমার আমার মাঝে
দু-জন দু- জনকে পাওয়ার বাসনা আকড়ে ধরে ছিল ...
তখন ও আমার আয়োজন ছিল তোমাকে সপে দিতে অন্যের হাতে !
.
যেখানে তুমি বাঁধা ছিলে সংসার  ডোরে........ ।
.
সেই দিন হতে তোমায় না পাওয়ার অনলে
হৃদয় জ্বলে দগ্ধ লাভা খসে পড়ছে ....
যদি আবারো বিধির কোন এক  আলৌক নিয়মে
লঞ্চের কামড়ায় তোমার পাশে বসে পড়ি আগের মতন ।
তখন ও  যদি চোখে রাখ চোখ ।
দেখবে ...
আমার হৃদ পুড়া গন্ধে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়বে আমার বুকে ।
যেমন চাওয়া ছিল তোমার ।
যেমন আদৌ খোঁজে ফিরি  আমি  ..........
.
রচনা – ১০ মাঘ ১৪২৩ বাংলা
২৩/ ০১/২০১৭ ইং – সোমবার
.
গোকর্ণ ঘাট – ব্রাহ্মনবাড়িয়া  ।