কাজী সাফকাত হোসেন-এর কবিতাwww.bangla-kobita.com ওয়েবসাইটে কাজী সাফকাত হোসেন-এর প্রকাশিত কবিতাসমূহ।uuid:2782cc4c-711d-4403-b8f7-50c47540831c;id=2572024-03-28T08:27:13Zhttps://www.bangla-kobita.com/qazi1995/jaliye-dao/জ্বালিয়ে দাও2017-09-09T20:43:42-04:002023-06-25T21:58:41-04:00কাজী সাফকাত হোসেনhttps://www.bangla-kobita.com/qazi1995/<p>প্রতিদিন মরতে মরতে ক্লান্ত হলে খুঁজে নেবো ছুরি<br />বেডসাইড টেবিলে পড়ে রইবে ইস্তফাপত্র।<br />ভয়ে আমার বুক শুকিয়ে যাবে।<br />আরো একটা সকাল দেখতে সাধ হবে বড়।<br />পরক্ষণেই মাথাঝাড়া দিয়ে সে অবান্তর চিন্তা সরিয়ে ফেলে ছুরিটা উঁচিয়ে ধরবো।<br />আমি প্রস্তুত। হাত কাঁপবে থরোথরো? কাঁপুক।<br />সে অন্তিম মুহূর্তে জানালার ভারী পর্দা ঠেলে কানে আসবে চিৎকার।<br />ছুরিটা নামিয়ে চট করে রাতের পোশাকটা বদলে নেবো।<br />চৌকাঠ মাড়িয়ে দেখে নেবো দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার।<br />‘ ফাঁসি চাই’<br />‘ উপড়ে ফেল ও চোখজোড়া '<br />‘ কালো হাত ভেঙে দাও '<br />হাত দুটো বাড়িয়ে ধরবো চোখের সামনে,<br />কোথায়, খুব একটা কালো তো নয়।<br />এবার আমার চোখ পড়বে কুশপুত্তলিকাটার ওপর।<br />আমি পড়িমড়ি করে ছুটে যাবো। <br />“ জ্বলজ্যান্ত মানুষটা থাকতে খড়ের পুতুল পুড়িয়ে কি কাজ? "<br />দড়ি হাতে এগিয়ে আসবে কেউ, চোখের পলকে বেঁধে ফেলবে হাত-পা।<br />ধীরে ধীরে কেরোসিনের বোতলটা উপুড় করবে মাথায়।<br />তার উদ্ধত স্তনযুগলে আমার চোখ পড়বে।<br />অবধারিতভাবেই মনে পড়বে কোন এক অপরাধী স্বপ্ন। <br />জ্বলে উঠবে লাইটার, সে আলোয় দেখে নেব মায়াকাড়া তার মুখ।<br />শুধাবো, “ জীবন নদীর ওপারে কি বিক্ষোভ হয়? <br />অনেকখানি অভিমান বুকে নিয়ে<br />রাত-বিরাতে জ্বলে ওঠে খড়ের পুতুল? "<br />যমটুপিটা আলতো করে পরিয়ে দিতে দিতে বলবে,<br />“ ধরাধামে যে করেছে নরকবাস<br />ভয় কিসে তার ? <br />মৃত্যু-উল্লাসে করো হাস্য-পরিহাস। “<br />অন্ধকার নেমে আসা আমার দুনিয়ায় জ্বলে উঠবে আগুন।<br />লকলকে শিখাগুলো সাপের মত এঁকেবেঁকে উঠবে গা বেয়ে।<br />চমৎকারভাবে পুড়ে যাবো, শেষবারের মত হয়ে নেব শুদ্ধ। </p>
<br /><p>হঠাৎ ঘামতে ঘামতে ঘুম থেকে জেগে উঠবো,<br />খোলা জানালা দিয়ে কানে আসবে হট্টগোল।<br /> বরাবরের মত ওরা আজও জড় হয়েছে।<br />জানালা দিয়ে বাইরে একবার তাকাবো।<br />একটা কুশপুত্তলিকা পুড়ছে, চেহারাটা অবিকল আমার মত।<br />পাশে দাঁড়িয়ে যারা উল্লাসে নাচছে, তাদের গায়ে এক টুকরো সুতো পর্যন্ত নেই।<br />হাতের এক ধাক্কায় জানালাটা বন্ধ করে ফের ঘুমিয়ে পড়লাম।</p>
<br /><p>মরতে মরতে একদিন আমি ক্লান্ত হয়ে যাবো,<br />চৌকাঠ পেরিয়ে বেরিয়ে আসবো জ্বলেপুড়ে ছাই হতে।<br />কেরোসিনের বোতলটা সযত্নে আগলে রেখে<br />তুমি থাকবে তো সেই রাতে?</p>@ 2024 - কাজী সাফকাত হোসেনhttps://www.bangla-kobita.com/qazi1995/protikkha/প্রতীক্ষা2017-07-18T23:44:46-04:002023-06-25T21:58:40-04:00কাজী সাফকাত হোসেনhttps://www.bangla-kobita.com/qazi1995/<p>সাতটা বই আর শত শত ফটোকপির পাতা গড়াগড়ি যায় বিছানায়।<br />আর আমি? হতাশ বসে আছি ব্যালকনির চেয়ারটায়।<br />হাতে আধপোড়া শলাকা, চোখ সমুদ্রগামী জাহাজের ক্যাপ্টেনের মতো<br />কুয়াশার চাদরে মোড়া সাইরেন দ্বীপে আটকে আছে।<br />সময় যে শেষ হয়ে এল।<br />প্রিয় গ্লাসের ধুমায়িত কফিটা কখন যেন জুড়িয়ে গেছে, একটুও টের পাইনি।<br />আমার কবিতাগুলোও এখন ছোট ; বাক্যসর্বস্ব।<br />ভাবালুতার রক্তলাল মদিরা কবেই ফুরিয়ে গেছে।<br />সময় যে শেষ হয়ে এসেছে।</p>
<br /><p>শুচিস্মিতা, আমার একটা অনুরোধ রাখবে?<br />একটিবার, স্রেফ একটিবার নেমে এসো দু'চোখ বেয়ে।<br />বাস্তবে নয়, অতোটা চেয়ে নিতে আমি অপারগ।<br />আর তাছাড়া, এখন আমি সাদাকালো বাস্তব ছুঁড়ে ফেলে<br />কল্পনার অমরাবতীতেই সুখ খুঁজে নিতে শিখেছি।<br />নেমে এসো, নেমে এসো তুমি<br />ধরা দাও আমার কল্পনারাজ্যের প্রেরণাদাত্রী হয়ে।</p>
<br /><p>বহুদিন, বহুকাল আমি ওই লাল ঠোঁটের শরাব পান করিনি।<br />পেলব হাতের পাঁচটি আঙুল ছুঁয়ে গেছে আমায়, কিন্তু আঁকড়ে ধরেনি।</p>
<br /><p>আমার ভাষা হারিয়েছে ভাব।<br />তুমি কি পারোনা, ওই বাঁকা চাহনি একবার হেনে<br />ওই নুপুরের ঝঙ্কার তুলে<br />মরুর বুকে এনে দিতে মরূদ্যান?</p>
<br /><p>তবো বলো, তুমি আজ আসবে কি?</p>@ 2024 - কাজী সাফকাত হোসেনhttps://www.bangla-kobita.com/qazi1995/kothopokothon/কথোপকথন 2017-07-16T18:19:48-04:002023-06-25T21:58:41-04:00কাজী সাফকাত হোসেনhttps://www.bangla-kobita.com/qazi1995/<p>তুমি আমার সর্বস্ব নিয়ে যাও।<br />ছেঁড়া টিশার্ট কিংবা শুকিয়ে যাওয়া অশ্রু। <br />আমার মনন, আমার স্বপ্ন, <br />শ্রাবণের অবিরল জলধারা।<br />দিতে রাজি ফেলে আসা সব ক'টি কালবৈশাখী। <br />চশমা নেবে? যৌবনের রঙিন চশমা?<br />দিয়ে দেবো তাও। দেবো কৃষ্ণচূড়ায় শাখায়<br />বসন্তের প্রথম ফুলের গাঢ় লালটিও।<br />হ্যাঁ, আমি সব দিতে রাজি আছি।</p>
<br /><p>শতবর্ষী বৃদ্ধের মতো,<br />যদি হই কুঁজের ভারে ন্যুজ, <br />রাজি আছি তাতেও; আমি চাই শুধুই বাঁচতে।<br />"শত বর্ষ? সহস্র? "<br />জানিনা তা। শুধু জানি, মহাকালের<br />শেষ দিনটির সূর্যাস্ত আমি দেখতে চাই।<br />সহস্রবর্ষ প্রাচীন সুরার বোতলে ঠোঁট ছুঁইয়ে<br />পান করবো শেষ বিন্দুটিও।<br />হ্যাঁ, আমি হতে চাই হিমালয়ের মতোই অমর, অজর।</p>
<br /><p>"কিন্তু সে তো হওয়ার নয় ; হয়নি কখনোই।<br />ধরায় জন্ম নিয়ে<br />রয়নি তো কোনো প্রাণ অবিনাশী হয়ে।<br />অজানার পথ ধরে এসেছিলে,<br />চলে যাবে অজানায় কোনো এক বিষন্ন সন্ধ্যার আলোয়। "</p>
<br /><p>ধ্বংসেই পূর্ণতা? বিনাশেই সৃষ্টি? <br />তবে তাই হোক। পথিক আমি, <br />পথ বেয়ে পৌঁছে যাবো আমার গন্তব্যে।<br />আমার এ বর্ণময় জীবন তবে কি রয়ে যাবে বৃথাই?<br />না না ; কখনো নয়।<br />নশ্বর আমি, অর্ঘ্যদান করে যাবো<br />আমার মতোই নশ্বর কোন এক সৌন্দর্যে।</p>@ 2024 - কাজী সাফকাত হোসেন