বাংলাদেশে যারা বিল্ডিং কান্ডে চাপা পরেছেন, তাদের মধ্যে ছিল রূপা আর হিমু । ওদের শেষ কথা কেউ শোনে কিনা জানি না । আবার অনেকে হয়তো শুনতে পায়।


পাঁজর ফুটো করে বের হয়েছে
এখনো হৃদয় ছোঁয় নি, থেমে গেছে
জংধরা লোহার সলতে, তোমার থ্যতলে জাওয়া
মাথায়, ফিনকি শোণিতের ফল্গু, কথা বল রূপা
শেষ কথা - এতদিনে একবারও বলা হয়ে ওঠেনি যা।


আজ আমাদের বাসর রাত, তোমার হিমু
আজ তোমার শরীরে মিশে যাবে, পিষে যাবে
রক্তের বিছানায় গোলাপি মৃত্যু আমাদের শিয়রে।
একদম থ্যতলে যাওয়া কোমরে নিচের অংশ
অসার প্রেমের হাতছানি এখনো রবে আমাদের সন্তানের স্বপ্ন
আগামীর খামে ভরা একমুঠো বাদামি রোদ্দুর সন্তান,
সন্তানের সন্তান - যেন এক অশ্বত্থ তোমার ভবিষ্যতে প্রণতি।
ভবিষ্যতে ছিল না আমার কোন ঝোঁক, কতবার বলেছি একবার এস
একবার চন্দনে রাখি এই ঠোঁটে বিষের প্রেম।
ষড়যন্ত্র, এই মৃত্যুর চেয়েও হয়তো হয়ে থাকবে, ভেবেছিলে তখন।


আবার কি আসবো জন্ম নিয়ে ? এই দেশে ? এই নিরন্তর মানুষের মৃত দেশে?
তুমি আমি - এই ফসিলের দগদগে ইতিহাসে, একবার
মানুষ কি দেবে ভার, দেশ ভার রাজ সম্মানে, দেবে ভার দেশ চালাবার?
এই দেশে তখনি কি এত শব চেখে চেখে আমিও শকুন হব
নাকি আরও কিছু মৃত জড় হলে, এযুগের মোমবাতি মিছিলে পা নাড়াবো
কিছু দিন - সব শুধু কিছু দিনের এই ইতিহাসে?


দোহাই রূপা দেখ, এই দেখ আঙ্গুলগুলো রেখেছি তোমার অসাড় স্তনে
কামনা, বাসনা - মৃত্যুর মিশে জাওয়া শবেবরাতের আতরে
রেখেছি প্রেমের স্পর্শ এই বিশ্বাসে - এক সন্তান আসুক এই স্পর্শে
হোক সে একবার দেশ নেত্রী বা দেশ নেতা - মুখ তার
সাদা মৃত্যুর বর্ণে শ্বেত শীতল, ক্ষমা হীন বুকে পূর্ণ
এক হাহাকার বাক্যশূন্য কর্মযোগ।


কথা বলেনা জানে না সে কথা বলা, শুধু সকলের কুশলে
রাত নামে, যে রাতে সে জানে ঘুমোতে - আমাদের মত ঘুম নয়।
এক চিরঘুম অথবা চির জেগে থাকা - আজ রাতে ...
অসংখ্য রূপা - হিমুও ঘুমবে তবু- কেউ কেউ জাগবে না আর ।



ভোরের কাগজে খবর হব সংখ্যায়
তারপর যথারীতি বাক্য যোগ, বাক্য বিয়োগ
এ নগরের তোমার মত রূপা আর আমার মত হিমু
আবার বানাবে এত ইমারত ।


আবার শকুন হব কোন এক জনমে বটেই ।