তোমার কর্মের ক্ষেত্রে আছ যেথা অহরহ মাতি
ব্যস্ত মন ন্যস্ত নিজ কাজে
হে বন্ধু সেথায় তুমি কর নাই মোরে তব সাথী
ডাক নাই সে ভুবন মাঝে।


আননে বুদ্ধির দীপ্তি, ললাটে চিন্তার দিব্য রেখা
দুর্জ্ঞেয় সন্ধানে যবে, যোগীসম মগ্ন রহ একা
জটিল সমস্যা মাঝে সমাহিত সেই মূর্তি দেখা
কী মোহ সে কিছু জানি না যে।


হে জ্ঞানী! তোমার জ্ঞান কর্ম মাঝে সমন্বয় লভি
রচে যেথা ধ্যানলব্ধ ফল
সেথা তো আপনি তুমি দেখ নাই আপনার ছবি
অপরূপ সে রূপ উজ্জ্বল।


দুর্গম সুদূর তীর্থে মন্দিরের রত্মদেবী পরে
দূর হতে দেবতারে দেখেছ কি ক্ষণেকের তরে?
দেখেছ সূর্যের দীপ্তি, দিবসের দ্বিতীয় প্রহরে?
চিত্ত তাহে হয়নি বিহবল।


দূর হতে শ্রদ্ধা ভরে সবিস্ময় গরব-গৌরবে
সসম্ভ্রমে করি নমস্কার।
সমস্ত হৃদয়খানি ভরি ওঠে সৌভাগ্য সৌরভে
উথলে পুলক পারাবার।


তোমার সকাল-সন্ধ্যা রূপে-রসে বর্ণে-গন্ধে গানে
সুন্দর করি যে আমি প্রাণের পরমামৃত দানে।
প্রহরের খরদাহ জুড়াইতে এস এইখানে
সার্থকতা সেই তো আমার।


হেথায় যখন থাকো প্রভাতের স্নিগ্ধ সমীরণে
সে রূপ একান্ত মম চিনা
প্রশান্ত মুরতি তব ভরি রহে আনন্দি কিরণে
মুহূর্ত চলে না আমা বিনা।


সন্ধ্যায় সুখের পাত্রে পূর্ণ হয় মাধুর্যের ভার
মর্মের গোপন হর্মে মুক্ত করি দাও রুদ্ধ দ্বার।
সেখানে কেবল শুধু তুমি আমি, কেহ নাহি আর
ধরণী বাহিরে রহে দীনা।


কাছে এলে ভালোবাসি কাছে পেলে সুনিবিড় প্রেমে
নিবেদিয়া ধরি মোর সব
দূর হতে শ্রদ্ধাভরে লভি তব দীপ্যমান ক্ষেমে
মনে হয় তুমি সুদুর্লভ
জীবন প্রাঙ্গণ তব সুদূর বিস্তৃত, তারি মাঝে
আমারে আননি টানি জনতার কোলাহলে কাজে
দিয়েছ সেথায় ঠাই যেথা তব সুখ দুখ রাজে
সেই মম চরম গরব।