শরতের স্বর্ণালী সন্ধ্যার উজ্জ্বল আভাকে
কৃষ্ণতায় নিষ্প্রভ করে দিয়ে –
ঝরে গেল যে তারা অসীম গগন হতে
শুধু স্মৃতির পাহাড় পেছনে ফেলে।


সৌরভোচ্ছ্বল যে কলি হয়েছিল বিকশিত
রাত্রির আলো-আঁধারিতে লজ্জা-রাঙা মুখে
চারিদিকে তার সুরভী ছড়ায়ে –
ভোর হতে না হতেই এক প্রবল ঝড়ে
সুরভী তার হাওয়ায় হলো বিমলিন।


চঞ্চলা যে ঝর্ণা বয়ে চলেছিল নিরবধি
সজীব প্রাণের হিল্লোলে – হিন্দোলে
রিক্ত, নিষ্প্রাণ পর্বতমালাকে সিক্ত করবে বলে
আপন প্রীতিরসের সজীবতার পরশে
আচমকা এক প্রবল ভূ-কম্পে
থেমে গেল তার এগিয়ে চলার রথ।


নিষ্ঠুর এ প্রকৃতির এটাই তো নিয়ম
ঝরে যাবে সে তারা, যার স্বর্ণালী আবির্ভাবে
শরৎ সন্ধ্যা রাঙা হয়েছিল অরূণরাগে—
কিংবা সুরভী হারাবে সে কলি—
যার সুরভী উদ্দাম জাগিয়েছিল
মধ্য-রজনীর ঘুমন্ত চরাচরে—
কিংবা পথ হারাবে দুরন্ত চপলা ঝর্ণা
যার উচ্ছ্বল চলন মাতম জাগিয়েছিল
শ্রান্ত, নিঃসাড় পাহাড়ী জনপদে।


তবু তাদের ভালোবাসার রেশ
হৃদয়-ছোঁয়া প্রাণের আকুতি, সজীবতা
পাতার মর্মরতা, প্রাণের স্পন্দন
অজান্তেই দোলা দেবে—
বেঁচে থাকা লক্ষ-কোটি হৃদয়ে—
পরম মমতা-রসে সিক্ত হবে মরুময় মাঠ।


তোমার স্মৃতি বেঁচে রবে—
লাখো তারার মাঝে
অবারিত কলির ব্যথাহত হৃদয়ে
আশাহত ঝর্ণার পথহারা গতিতে
আমাদের অশ্রুসিক্ত আহত হৃদে
রবে তোমার স্মৃতি অমলিন।।