ভাইয়া / রইসউদ্দিন গায়েন
‘শিউলি’,
অনেক আশা, অনেক স্বপ্ন বুকে নিয়ে ,
তুমি কলেজে পড়তে চেয়েছিলে ।
ম্যাট্রিক পরীক্ষায় এ প্লাস (+) পাওয়ায়,
‘মাসুদ’ আনন্দে আত্মহারা ।
এক সীমাহীন ভালবাসার টানে,
তোমার মতো লক্ষ্মীসোনা বোনকে,
আদরে-সোহাগে বড় ক’রে তুলেছিল সে ।
সেসব শৈশব-স্মৃতি আজ ইতিহাস ।...
তুমি চেয়েছিলে সুন্দর পৃথিবীর নির্মল আলো ।
কিন্তু গ্রামের অশিক্ষিত সমাজে,
‘সুলতান’ নামের নর-পশুরা তা’ চাইল না ।
‘শিক্ষা’,সভ্যতা ওদের কাছে অর্থহীন ।
এই  অসুস্থ সমাজ, আজও পৃথিবীর জঞ্জাল।
জানি না, কবে উঠবে নতুন সূর্য—
দেখতে পাব দুষণুক্ত এক নতুন পৃথিবী !.....
তোমাকে রোজ সাইকেলে নিয়ে যেত ভাইয়া,
সে জানত ওদের অসভ্য আচরণ ।
জ্বরে আক্রান্ত মাসুদ অসহায় সেদিন ।
আত্ম-বিশ্বাসে ভর করেই তুমি,
বেরিয়েছিলে কলেজের পথে,
কিন্তু ফেরার পথে ছিল একদল কালো মুখ ।
দূরভাষে তোমার কম্পিত কন্ঠধ্বণি ।
অজানা অশনি সঙ্কেত মাসুদের মনে ।
নর-পশুরা যখন তোমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল,
নির্ভীক মাসুদের প্রাণান্ত প্রয়াস,
তোমাকে রক্ষা করার ।
ঝড়ের গতিতে পালিয়ে গেল ওরা—
তবে, রেখে গেল ছুরিকাঘাতে—
প্রাণহীণ, মাসুদের দেহ !....
শিউলি,...
তোমার ভাইয়া, আজ নেই—তা’ নির্মম সত্য !
তোমার মতো অসংখ্য শিউলি ফুল
আজও ঝ’রে পড়ে থাকে পথের ধুলোয় ।
পায়ে পিষে চলে যায় অসুন্দরের দল ।
তবু আজও ভোরবেলাকার ঝ’রে পড়া—
শিউলি ফুলগুলি দিয়ে ভালবাসার মালা গাঁথে,
তোমার মতো শুভ্র-সুন্দর শিউলি বালিকা-রা ।
......ভাল থেকো !!