রজত পুরকায়স্থ-এর কবিতাwww.bangla-kobita.com ওয়েবসাইটে রজত পুরকায়স্থ-এর প্রকাশিত কবিতাসমূহ।uuid:2782cc4c-711d-4403-b8f7-50c47540831c;id=11862024-03-28T23:26:57Zhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/daag/দাগ2020-07-31T04:24:22-04:002023-06-25T22:50:30-04:00রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/<p>জন্মাই আমরা নিজের জন্য।</p>
<br /><p>নিজের ছায়াকে ভালোবেসে যে কথা বলি,<br />যে কাজ ক’রি হুজুগের স্রোতে গা ভাসিয়ে,<br />সামনের মুঠো ভরা ঘাস লক্ষ্য ক’রে <br />মিছিলে পদচিহ্ন মাড়াই …….<br />সেতো নিরাপদ আমি’র কব্জি দুধে-ভাতে ডোবাতে।</p>
<br /><p>মহামানবের বাণী <br />বন্দী পাতায় গ্রন্থকীটের রসদ।<br />দাগ যা কাটি সেতো মনে রাখার নয়,<br />ভালোবাসার নয়।</p>
<br /><p>মায়ের বুকে জলের দাগ,<br />রাস্তায় রক্তের দাগ,<br />সকালে আলোর বুকে প্রেত-রাত্রির দাগ।</p>
<br /><p>সব দাগ ছায়া’কে ভালোবেসে।</p>
<br /><p>জন্মাই আমরা নিজের জন্য ,<br />কপালে রসকলি এঁকে<br />“দাগ” বিলাই গৌরাঙ্গ প্রেমের সুরে।</p>@ 2024 - রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/tomra-nilkantha-hao/তোমরা নীলকন্ঠ হও2020-07-29T13:35:04-04:002023-06-26T19:31:04-04:00রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/<p>অস্তিত্ব রক্ষার বাসনায়<br />যাদের জীবন নিয়ে লুকোচুরি খেলছ ........<br />হে মহামান্য দেবতার দল,<br />তারা যদি না দেখে আগামীর সকাল ;<br />বিলুপ্ত হয় তোমাদের বদ অভ্যাসের ভাইরাসে ;<br />কাদের ঠকাবে ?</p>
<br /><p>রঙ্গমঞ্চে তোমাদের নাটক দেখার দর্শকাসন<br />যদি শূণ্য থাকে<br />কারা দেবে ক্রিতদাসত্বের হাততালি ?</p>
<br /><p>তোমাদের মন্দিরে <br />কারা দেবে হাড়, মাংস, রক্তের প্রসাদ ?</p>
<br /><p>হরিরলুঠ'তো মন্দিরে হয় ,<br />তোমাদের মন্দিরে লুঠ ধর্মের মান্যতায়।</p>
<br /><p>ধর্মস্থাপনে ক্ষুদ্র অধর্ম<br />সেতো মহাকাব্যের সম্মান প্রদর্শন ।</p>
<br /><p>তবে একবার দেবতা হও<br />অগণিত দেবতা দেখুক আলোর রাত ,<br />নীলকন্ঠ হও একবার<br />সব বিষ কণ্ঠে জমা রেখে ।</p>
<br /><p>শুধু একবার দেবতা হও ,<br />শরীরের সবটুকু দেবত্বের খোলস পুড়িয়ে ।</p>
<br /><p>.</p>@ 2024 - রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/samoy-nirdosh/সময় নির্দোষ2020-07-27T18:27:40-04:002023-06-26T19:31:00-04:00রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/<p>প্রতি রাতে খাবার টেবিলে বসে ভাবি,<br />আজ ছাদে উঠবো চাঁদ দেখতে।<br />খাওয়া শেষ হলেই ভুলে যাই।</p>
<br /><p>যেদিন মনে থাকে <br />ছাদে উঠে চাঁদ দেখতে পাইনা।<br />কালো মেঘের আঁচলে চাঁদ ঢেকে যায়,<br />কিংবা অমাবস্যার রাতেই যাই ইচ্ছে পূরণ করতে।</p>
<br /><p>চাঁদের কোনো দোষ নেই তাতে ,<br />পক্ষ কালের সংজ্ঞা পড়েছি সে কোন শৈশবে।</p>
<br /><p>সময় বয়ে যায় নিজের নিয়মে,<br />অবসরে সাজাই নিজেকে কাপালিকের বেশে,<br />আলোর সন্ধানে ব্যস্ততার হাটে দু’হাত ভ’রে অন্ধকার কিনি।<br />প্রেমিক হতে পারিনা।</p>
<br /><p>খুব সাধ জাগে প্রেমিক হবার।<br />তাই যমজ ভাইয়ের সাথে ত্রাণ বিতরণের বরাত পেতে লড়াই করি ,বোমা ফাটাই, <br />শিশুর সারল্যে লাশ গুনতে ভুলে যাই।</p>
<br /><p>সময় বয়ে যায় নিজের নিয়মে,<br />অবৈধ ইচ্ছার প্রকোপে রেখে যায় শূণ্যস্থান।<br />মন তাই প্রেমিক হতে পারেনা,<br />শুধু ভাঙা বাঁশিটা ধরা থাকে হাতে পৌরাণিক আদলে।</p>@ 2024 - রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/jagannath-jakhan-sabyasachi/জগন্নাথ যখন সব্যসাচী2020-07-26T13:29:51-04:002023-06-26T19:30:58-04:00রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/<p>দু’হাত ছাড়া জন্মেছিল ছেলেটা।<br />অনেক ভেবে দাদু ওর নাম রেখেছিল সব্যসাচী।</p>
<br /><p>ফুটবল খেলায় কেউ ছিলনা তার সমকক্ষ <br />স্কুলে কিংবা ক্লাবে ।<br />পা দিয়ে ছবি আঁকত, খাবার খেত, ঠাকুরের পায়ে ফুল দিত।</p>
<br /><p>ব্যাঙ্গ ক’রে পাড়ার ছেলেরা বলত,<br />জগন্নাথ ! <br />কয়েক ধাপ এগিয়ে কেউবা মজা করত <br />“হাত কাটা জগা” বলে।</p>
<br /><p>সব্যসাচীর কোনো দুঃখ ছিলনা,<br />অভিমান ভুলে সবসময় হাসতো ।</p>
<br /><p>দুই হাতের গর্বে বন্ধুদের বুক ফুলে উঠত,<br />যখন যা খুশি করত।<br />হাত না থাকার অভিনয় ক’রে<br />সব্যসাচীর শরীরের ভাষা নকলে <br />পারদর্শী ছিল ওরা।<br />কখনোবা হেসে উঠত <br />হো …. হো ….. ক’রে।</p>
<br /><p>দূরদর্শনের পর্দায় যখন সব্যসাচীর গলায় মালা ঝুলছিল<br />নাচের প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে,<br />বন্ধুদের গর্বিত হাতে তখন হাতকড়া<br />গনধর্ষণের অভিযোগে।</p>
<br /><p>গভীর রাতে<br />প্রাত্যহিক কৌশলে মায়ের ছবিতে মালা দিয়ে ডুকরে কেঁদে ওঠে “জগন্নাথ”।<br />-- দুই হাত ছাড়া আমাকে জন্ম দিয়ে ভালো করেছিলে মা।<br />হাত থাকলে হয়তো আমি সব্যসাচী হতে পারতামনা <br />পারতামনা মানুষ হতে, <br />ঠিক যেমনটি তুমি চেয়েছিলে।</p>@ 2024 - রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/ektu-banchar-janya/একটু বাঁচার জন্য2020-07-25T06:08:07-04:002023-08-11T16:33:03-04:00রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/<p>মেয়েটা যখন কাঁদে<br />বৃষ্টি পালিয়ে যায় হার মেনে।</p>
<br /><p>খোলা আকাশের নীচে <br />হাসতে চায় যখন মেয়েটা<br />ফুলেরা মাথা নীচু ক’রে ঘুমিয়ে পড়ে লজ্জায়।</p>
<br /><p>পতঙ্গ যখন শরীরে পরাগ মেখে উড়ে বেড়ায়,<br />মেয়েটার গর্ভপাত হয় <br />সংসারের ফেরারী ভালোবাসায়।</p>
<br /><p>প্রতি রাতে শরীরটা শুধুমাত্র নারী-মাংস হলে <br />মরে যায় মেয়েটা । </p>
<br /><p>বিচিত্র মেয়েটা <br />শুধু চিত্রকরের সামনে উলঙ্গ হয় স্বর্গীয় তৃপ্তিতে, <br />ক্যানভাসে কয়েক মিনিট বাঁচার জন্য।</p>@ 2024 - রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/akal-amabasya/অকাল অমাবস্যা2020-07-24T07:59:52-04:002023-06-26T19:30:48-04:00রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/<p>বেশ বড় ছিল মানুষটা। <br />ব্যক্তিত্ব , আভিজাত্য , মানবিকতায় মোড়া <br />এক পূর্ণাঙ্গ পুরুষ।</p>
<br /><p>চোখে চোখ রেখে কথা বলতে সাহস পেতো না কাছেরজনেরা,<br />পরম শত্রুও চোখ নামিয়ে নিত সম্ভ্রমে।</p>
<br /><p>অফিস থেকে বেরিয়েই <br />হঠাৎ অনেক ছোট হয়ে যায় মানুষটা।</p>
<br /><p>বিকালের পড়ন্ত আলোয় নামে আকাল অন্ধকার ।<br />উঁচু মাথাটা হয় ঘাসের প্রতিবেশী।</p>
<br /><p>বাড়ি ফিরেই নিটোল অভিনয়,<br />শুধু কষ্টগুলো লুকিয়ে থাকে বুকের খাঁচায়।</p>
<br /><p>দেশ জুড়ে বেজে চলেছে বিরতির ঘন্টা ,<br />তালা ঝুলছে অফিসে।<br />উৎপাদনে ব্যঘাত।<br />করোনার সাথে বাড়ছে খালি পেট, অবসাদ, আত্মহত্যা।</p>
<br /><p>কর্ম ছাড়া, লক্ষ্মীছাড়া মানুষটার বেলা কাটে <br />নতুন মন্দিরের খোঁজে ;<br />কখনোবা পার্কের ফাঁকা বেঞ্চে।</p>
<br /><p>অসহায় দৃষ্টি ভাসে আকাশের নীলে। <br />নিঃশব্দ উচ্চারণে <br />মানুষটা খোঁজে পার্থক্যের সুখ,<br />সান্ত্বনার ভাইরাস কিংবা দুর্ঘটনার আশীষ।</p>@ 2024 - রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/dwitiya-shaishab/দ্বিতীয় শৈশব2020-07-23T13:33:59-04:002023-06-27T19:56:41-04:00রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/<p>ছোটবেলায় ছেলেটার জ্বর হলে <br />আমরা দু'জন <br />রাত জেগে মাথায় জলপট্টি দিতাম পালা করে।<br />পূজার সময় নতুন জামা , জুতোয় সাজাতাম ......<br />নিজেদের অসাধ্যকে প্রশ্রয় দিয়ে।<br />ছেঁড়া শাড়ির আঁচল ছিঁড়ে পায়ের ক্ষত বেঁধে দিতাম ছেলেটার । </p>
<br /><p>সেদিন থেকে লোভ একটা ছিল বৌমা।<br />শেষ জীবনে <br />তোমার আঁচলের তলায় ক্লান্তি অবসানের।</p>
<br /><p>তোমাকে ..... "বৌমা" বলে ডাকি।<br />কিন্তু তুমিতো আসলে মা !<br />ফিরিয়ে দিয়েছ আমাদের শৈশব।<br />জীবনের দ্বিতীয় শৈশব । </p>
<br /><p>পান থেকে চুন খসলেই রক্তচক্ষু ,<br />মায়ের শাসন........<br />সময় করে ওষুধ খাওয়া থেকে<br />রাত দশটার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ার <br />কড়া হুকুম ।<br />আমাদের শরীর খারাপে<br />তোমার উতলা মন , না ঘুম রাত......<br />ভুলিয়ে দেয় অতীত কষ্ট ।</p>
<br /><p>মন্দিরে পূজো দিতে গিয়ে <br />মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম মাটিতে ।<br />যমে মানুষে টানাটানির পর বেঁচে গেলাম,<br />কিন্তু পা দুটো <br />অবশিষ্ট জীবনের জন্য অচল হয়েগেল ।</p>
<br /><p>তোমার সচল পা দুটোতে ভর করে আমি হাঁটি বৌমা ।<br />মনে হয় আমি সেই শৈশবে,<br />আমার হাতের মুঠোয় মায়ের হাত !</p>
<br /><p>মা .....<br />তুমি আমার ষাট বছর আগের মা<br />আমার শৈশবের মা ।</p>
<br /><p>.</p>@ 2024 - রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/didir-pora-anchal/দিদির পোড়া আঁচল2020-07-22T09:06:15-04:002023-06-25T22:50:32-04:00রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/<p>পাশের বাড়ির ঘোন্টুর দিদির কোলে <br />বেড়ে উঠেছি আমরা দুজন।<br />সারাদিন দিদির আঁচল ধরে ঘুরতাম, <br />গাছ থেকে পেড়ে দিতাম ডাঁশা পিয়ারা, <br />কখনো বা পাকা কামরাঙা। </p>
<br /><p>সন্ধ্যা হলেই দিদির ঘরটা হয়ে উঠতো তেপান্তরের মাঠ, <br />দিদি তখন ঠাকুরমার ঝুলির ঠাকুরমা, <br />কিংবা আর এক কাজলা দিদি।</p>
<br /><p>রাজকুমার, রাজকন্যা, <br />পক্ষীরাজ ঘোড়া <br />কিংবা সোনার কাঠি রূপোর কাঠি। <br />কখনো বা লাল চোখ ডাকাতের অট্টহাসিতে <br />শরীরের রক্ত হিম হয়ে আসতো।</p>
<br /><p>গল্প শুনতে শুনতে <br />কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম দিদির কোলে <br />বুঝবার অবকাশ পেতামনা।</p>
<br /><p>সকাল হলেই দুজনার কান ধরে <br />পড়াতে বসাতো দিদি,<br />আমার মায়ের শরীরের ঘ্রাণ <br />খুঁজে পেতাম দিদির শরীরে। </p>
<br /><p>শ্বশুর বাড়ি থেকে দিদি ফিরলো <br />শেষবারের মতো, <br />শরীরে পোড়া মাংসের গন্ধ মেখে। </p>
<br /><p>জীবনের অপরাহ্ন বেলায় মনে নেই <br />কে বেশি কেঁদেছিলাম, <br />আমি না ঘোন্টু। </p>
<br /><p>ঠাকুরমার ঝুলি ঢেকে গেছে <br />ধূলোর মলাটে, <br />দিদির ছবিতে মালা......<br />সামনে নতজানু আমি আর ঘোন্টু, <br />হাতে কামরাঙা আর ডাঁশা পিয়ারা, <br />--একটা গল্প বলনা দিদি...একটা..<br />তোকে পুড়িয়ে মারার গল্প, <br />তোর জীবনে নটে শাকটা মুড়িয়ে যাবার গল্প। </p>
<br /><p>নিঃশব্দ ঘরে ভেসে আসে পোড়া মাংসের গন্ধ। </p>
<br /><p>ছবিতে দিদির মমতা ভরা হাসিটা আজও অমলিন, <br />শুধু নেই দিদির সেই আঁচলটা <br />যা ছিল এতকাল আমাদের মাথায়।</p>@ 2024 - রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/somaye-swargo-bhange/সময়ে স্বর্গ ভাঙ্গে2020-07-21T15:53:36-04:002023-06-26T19:31:02-04:00রজত পুরকায়স্থhttps://www.bangla-kobita.com/rajat341965/<p>নিহত বাসনা পুড়ে ছাই হয়<br />প্রতিহিংসার দাবানলে ,<br />শকুনের ডানার ছায়ায় বিশ্রামরত<br />পথিকটার ভুল ভাঙে।<br />চেয়ে দেখে , সূর্যটা চুরি গেছে।</p>
<br /><p>সমতল ভূমিতে তৈরি হয়<br />বিশাল সমুদ্র ,<br />যা দুটো নীল আকাশের জলে পুষ্ট ।</p>
<br /><p>ওর কথা ছিল অমৃত পাবার ,<br />কিন্তু<br />ওকে পেট নামের রেকর্ড প্লেয়ারে<br />পোড়া রুটির রেকর্ড চাপিয়ে<br />শুনতে হয় দেহত্বত্তের গান ।</p>
<br /><p>একদিন সবুজের মিতালিতে নামে<br />কালো রক্তের প্লাবন .......<br />"সমুদ্রের" আয়নায় ভেসে ওঠে<br />কতকগুলো পৈশাচিক মুখ ,<br />তারপর<br />এমনিতেই ভেঙে যায়<br />তালাবন্ধ স্বর্গের সদর দরজা ।</p>@ 2024 - রজত পুরকায়স্থ