ছায়া ঈশ্বর (14-08-2019)
রণজিৎ মাইতি
--------------------
অনেক দিন পর বিদ্যাসাগর মশাই শান্তিতে পাশ ফিরে ঘুমোলেন;
স্বভূমিতেই কচি বিধবা মেয়েটিকে বিয়ে দিচ্ছে তার শ্বশুরবাড়ি!
খুশির খবরে ইচ্ছে থাকলেও জরা-র ভারে আজকাল একদম বাইরে বেরোতে পারেননা।


এই তো দিন কয়েক আগে তাঁর মূর্তি ভেঙে দিলো রাজনৈতিক মদতপুষ্ট কিছু গুণ্ডা বদমাইশ;
কলকাতা তথা সমগ্র দেশবাসী দেখলো নীরবে!
তিনি কি কিছু করতে পারলেন ?
তাঁর জন্ম মাটিও দর্শকাসনে বসে এই রাজনৈতিক চাপানউতোরের সাক্ষী রইলেন!
তবুও মন্দের ভালো,মাঝেমাঝে কিছু চাষী, শ্রমিক,কৃষকের মধ্যে তিনি জেগে ওঠেন।
যেমন আজ নিজের ছায়া দেখলেন মুকুন্দবাবুর ভেতর।
অনেক দিন পর স্বপ্নের জন্মভূমিতে সশরীরে উপস্থিত থেকে স্বপন রূপী নারায়ণকেই তো আশীবাদ করলেন।


সালটা কতো যেনো ? সেই 24 শে জুলাই 1856 ।
তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল;
এদেশে কতো আইন-ই তো এভাবে পাশ হয়;কতো অধ্যাদেশ!
জানুয়ারির ছাব্বিশ এলেই ঢাক ঢোল পিটিয়ে ফুল দিয়ে প্রকাশ্যে পূজো করি সংবিধান।
খোঁজও নিই না ফুলের ভারে ঢেকে যাওয়া মুখের যন্ত্রণা;
পণপ্রথার চাপে এখনও ছটফট করে কন্যাদায়গ্রস্থ বাবা!
সহ্য করতে না পেরে কতো ফুল যে হায় অকালে ঝরে যায় !


যাক আজ খবরটা জানার পর---
আমাদের ঈশ্বরের মেঘে ঢাকা মুখ স্বস্তিতে প্রসন্ন।
প্রাতরাশ সেরেছেন হাসি হাসি মুখে;সঙ্গে এক কাপ লিকার চা।
অনেক দিন পর রাতেও ঘুমোলেন পরম শান্তিতে।
মাঝে মাঝে শ্বশুর নামক এমন ছায়া ঈশ্বরের জন্ম না হলে আমাদের ঈশ্বর কি আজ শান্তিতে ঘুমাতে পারতেন?