প্রিয় কবি শেলির "হারানো পথের বাঁকে" কবিতাটি আসলে জীবনবোধে ঋদ্ধ কবির গভীর জীবনানুভূতি ।চলার পথে কতো কিছুই তো হারিয়ে যায় সে পথ,মত,আদর্শ,বস্তু এমনকি প্রিয়জনও।হারানো ব্যক্তি বা বস্তু ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা কিন্তু মানুষের মনে থাকে । যখনই মানুষ কোনও অনুষঙ্গের মুখোমুখি হয় তখনই স্মৃতি জেগে ওঠে । সেই পথের বাঁক যেখানে দুজন মানুষ হাতে হাত রেখেছিলো, হয়তো বা আরও নিবিড় ।হয়তো কোনও দুর্বল মূহুর্তে আগামীতে কাছাকাছি জীবন কাটানোর শপথ নিয়েছিলো ।কিন্তু সময় তাদেরকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।


কবি জানেন পৃথিবী গোলাকার । চলার পথে কোনও
এক বাঁকে  কখনও না কখনও ঠিক হারানো প্রিয় জনের সাথে দেখা হবেই ।তখন হয়তো অতীতের কথা ভেবে মধুর আবেশে কেউ কোনও কথাও বলেনি। তবু নীরবতার মাঝে বিরাজ করছে গভীর এক সুখানুভূতি । কবির মনে সংশয়, এও কি আর এক নতুন বাঁক আবার হারিয়ে যাবে আগের মতো


কবি একদিকে ভয় পান পুনরায় হারানোর ,অন্য দিকে কাছাকাছি হওয়ার আনন্দ কবিকে অতীত দিনের কথা মনে করায় । হয়তো সেখানে বঞ্চনা আছে ,কথা দিয়ে কথা না রাখতে পারার ইতিহাস । তবু কবি বর্তমান কে আঁকড়ে ধরতে চান।


কারণ তিনি জানেন এই জীবন নশ্বর।পদ্ম পাতার জলের মতো এই আছে এই নেই ।শুধুই বৃত্তাকার পথে ঘুর্ণন।শেষে সরণ শূন্য ।আমানত কিছুই নেই। যেটুকু ওই জীবন মৃত্যুর মাঝের সময়টুকুই।তাই তিনি পড়ন্ত বিকেলের নরম আলোয় হারানো পথের বাঁকে এসে আবার প্রিয়জনের সামনাসামনি দাঁড়াতে চান।রাখতে চান হাতে হাত ।


আর একটি কথা না বললেই নয়,তা হলো কবি সুনিপুণ ভাবে একটা বাঁককে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছেন ।আসলে আমরা জীবনের  প্রতি   পলে পলে পথে কতো কতো বাঁকে কতোকিছুই যে হারাই তার ইয়ত্তা নেই ।


এছাড়া চমত্কার শব্দচয়ন,কাব্যিকতা কবিতাটির আলাদা প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছে ।যা কবির গভীর শিল্প চেতনা ও নান্দনিক রসবোধের পরিচায়ক ।এমন সুন্দর রসোত্তীর্ণ কবিতা উপহার দেওয়ার জন্যে প্রিয় কবিকে ধন্যবাদ জানাই ।কলম চলুক ।অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অগাধ ভালোবাসা জানাই কবিবর