ভবার  একদিন  হইল  জ্বর ,
                         শীতলপাটিতে শুইয়া
                                           কাঁপে  থর থর ।
ভূমিতে  করে  গড়া - গড়ি ,
                            ডাকিল  গ্রাম্য বৈদ্য  তাড়াতাড়ি
                                             জ্বর  ধরিল  ঘর ।।


ভবা  শয়ন  করিল  ভূমে
                        হইয়া  উপুড়  ।
অঘোর  নিদ্রায়  দেখিল  স্বপন ,
                            তখন  ভর  দুপুর ।।


রাজা  হইয়াছে  সে
              বসিয়াছে  সিংহাসনে ।
হুকুম  করিতেছ  তামিল ,
               যত  বিদ্বজ্জনে ।।


দরিদ্রতা  করিবে  দূর
                 রাজা  চিন্তায়  ভরপুর ।
ধন্য  হবেন  অন্ন  দিয়ে ,
                   তাই  করিতে  পারেনা  সবুর ।।


দুই  কাঞ্চনে  দিয়া  চাল ,
                    দরিদ্রের  ফেরাবে  হাল ।
লুটিয়া  খাইল  তারা ,
                       অট্টালিকায়  আছেন  যারা ,
সর্ব্বহারার  গোপাল ,
                      তারই  সেই  ফাটা  কপাল ।।


বৃদ্ধি  হইল  খাজানার  পরিমাণ ,
                      কানা - বাদশার  সমান -সমান ।
বাদশা  হইল  আমির ,
                        কানা  হারাইয়া  লাঠি  ,
                                   বেদম  জোরে  হোঁচট  খান ।।


কঙ্কাল  সার  স্বাস্থ্য  সেবা ,
                        চামড়ার  ঢাকিতে  ভবা ,
রাজ  বৈদ্যদের  দিল  ডাক ।
                          গ্রাম্য  বৈদ্যদের  রাঙাইয়া  চোখ ,
শ্রীঘরে  পুরীতে  পাঠাইলেন  লোক ,
                           ঊদ্যত হইল  কাটিতে  নাক ।।


বৈদিক  যুগ  হতে  যারা ,
                             প্রবল  দুর্যোগ  মাথায়  লয়ে  তারা ,
হ্যরিকেন  হাতে  রাতের  অন্ধকারে 
                                ঘুরিছে  রুগীর  দ্বারে - দ্বারে ।
রাজা  তাদের  করিতে  নাশ ,
                                   শ্বাস  রোধ  করিবার  হেতু 
                                                বানাইলা  ফাঁস ,
                                           আইনের  লড়াই  করে ।।


যারা বসিয়া  রাজার পাশে ,
                                উত্কোচ  পাওয়ার  আশে ,
                                        রাজ  বৈদ্যে  দিল  ভোট ।
কি  ভাবে  তাড়া  - তাড়ি  নিঙ্গাড়িয়া  লবে  কড়ি ,
                                 গোপনে পাকায়  ঘোঁট ।।


অগত্যা  আসিল  রাজার  জ্বর ,
                                   আইনি  বৈদ্য  ফিরিস্তি  দিল  পর -  
                                                                                 পর ।
জ্বরতো  অজানা  , পরীক্ষা  নানা ,
                               রাজ  কোষ  খালি
                                           রাজা  মর - মর ।।
কড়ি  যখন  টান - টান ,
                    আইন  বৈদ্য  পালিয়ে  যান ।
হ্যারিকেন  ডাক্তার  যিনি ,
                      রাজায়  দেখিতে  আসিলেন  তিনি ,
                                  সঙ্গে  লয়ে  জড়ি- বুটি ।
তিনি  শুধাইয়া  পারিষদে  ,অনুমতি  দাও  তবে ,
                খাইয়ে  দেখি  শিউলি  রস  আর  চটি ।।


রাজার  সারিল  জ্বর ,ভবার  ভাঙ্গিল ঘুম ,
                               গ্রাম্য  বৈদ্য  পাশে ।
শিরে  রাখিয়া  হাত ,জাগিয়া  দিন - রাত ,
                                 বসিয়া  আছে  সুস্থ্যর  আশে ।।
                                                                    ---  রঞ্জন  গিরি ।


*প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্য্যন্ত প্রত্যন্ত গ্রামে যেখানে
রাস্তা নেই,আজও বিদ্যুত পৌঁছয় নি,সেখানে মানুষ অসুস্থ হয়ে গেলে সেখানে গ্রামীণ ডাক্তারই ভরসা।যত গভীর রাত
হোক,হোক অঝোর ঝরে বৃষ্টি,হোক না এক হাঁটু কাদা, তবুও সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সেই প্রতিকুলতায়
হ্যারিকেন হাতে রাস্তার কুকুর তাড়ানোর লাঠি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে অসুস্থ রুগীর পাশে দাঁড়াতে।আর তখন A.C ঘরে তুলতুলে চেয়ারে বসে কিছু সরকারি লেবেল সাঁটা ডাক্তার যারা লোভী শেয়ালের মতো জিভ বার করে চেয়ে থাকে কখন অসুস্থ রুগী আসবে তাঁকে নিয়ে ব্যবসা করবে,আর সেই গ্রামীণ সমাজসেবীকে পরিহাস করে বলে "হাতুড়ে ডাক্তার" ওরা কি জানেনা ওই হাতুড়ে ডাক্তার ওদের মতো ডাক্তারের কাছে 5থেকে 10বছর প্রাকটিস করে গ্রামের সেবায় এসেছে হয়ত তারা কোটি টাকা খরচ করে কাগজে কলমে পড়েনি।গুরু মুখী হাতে নাতে শিক্ষা ।তাঁরা সারা রাত চোখের পলক না ফেলে রুগীর নিকট জেগে থাকে।আর যারা রুগীর কি হল না খবর রেখে আরাম করে  DND বোর্ড লাগিয়ে বিছানায় শুয়ে নাক ডেকে ঘুমায়। বলুন সেই গ্রামীণ সমাজসেবী -র খবর কে রাখে।
              আপনিও কি খবর রাখেন ?