প্রভাত ফেরির আওয়াজেই ঘুমের বারোটা।
স্মরণীয় দিনগুলোর একটি পরিচয় থাকে।
এই যেমন ধরুন না কেন -
কোন এক শারদ প্রভাতে যখন শুনতে পাই,
'শুরু হচ্ছে আকাশবাণীর প্রভাতী অনুষ্ঠান,
চারশো সাতচল্লিশ দশমিক আট মিটারে'।
শিউলি ফোটা সেই সকালে,
মনের মধ্যে ঢাকের আওয়াজ,
আর কেমন যেন পুজোর গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে,
নয় কি?
তেমনই করে শ্রাবণ আকাশে,
স্বাধীন মেঘের আনাগোনায় প্রভাত ফেরি-
ক্যালেন্ডারের পাতা না উল্টেও,
ঠিকই বোঝা যায়।
আর তার মধ্যে যেটি সুবর্ণরঞ্জিত,
অবশ্যই তা বিশেষ মর্যাদার অধিকারী-
এ কী আর কোনো বলার অপেক্ষা রাখে?
প্রাইমারি স্কুলের গনিত শিক্ষক ভুবনবাবু -
একসময়ে ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের সৈনিক,
তাঁর উদাত্তকণ্ঠের ভাষণ,
শ্রদ্ধেয় শহীদদের আত্মত্যাগের বর্ণনা,
আমাদের চেতনা উদ্দীপ্ত করে তুলতো,
সেই স্বাধীনতার সকালে।
"Give me blood, I shall give you freedom "
কথাগুলি তাঁর নান্দনিক সুগম্ভীর আওয়াজে,
মনে হতো নেতাজির কণ্ঠনিঃসৃত বাণী।
বিনয়,বাদল, দীনেশের আত্মবলিদান,
বাঘাযতীন বা ক্ষুদিরামের দেশপ্রেমের সম্পর্কে,
তাঁর বর্ণনা -
আমাদের চোখে ছবি আঁকতো,
এক স্বপ্নের পুরুষের।
মনে হতো, ওরাই ছিলো যেন,
স্বাধীনতার এক একটি উৎস সোপান।
(ক্রমশঃ... দ্বাদশ খণ্ডে সমাপ্য।)