ব্যস্ত দুনিয়ায় তাল মেলাবার জন্য,
অপচয়ের মত সময় আজ কম! 
গতিশীল জীবনের ভিড়ে, অসময়ের 
মাপকাঠি হামেশাই বদলাতে থাকে।
পেছনে ফিরে দেখার অবকাশ নেই।


জন্মক্ষণ হতে মরদেহ সৎকার,
সবেতেই গতি বেড়েছে ভীষণভাবে। 
হাসিকান্না সীমাবদ্ধ। প্রান্তিক দুরত্বে-
কলকাতা ওয়াশিংটনের কাছাকাছি।
দূরভাষে নিয়মিত বাক্য বিনিময়।


তবু আজ মনে হয় দুরত্ব বেড়েছে?
বেড়েছে মনের সাথে মনের ফারাক।
লাগোয়া জমির রায়বাবু, রীতিমতো 
মহিমের নাগাল পেড়িয়ে। বসুন্ধরা -
আকাশের মনে কোন দাগ কাটছে না।


আজ উঁনি একমাত্র উদ্বোধন ছাড়া,
পুজোর মণ্ডপে আর পাও রাখেন না।
ঠাকুর প্রণাম! সে দূরদর্শনে হবে। 
মহিম একমাত্র পুজোর সম্পাদক।
গাঁয়ের দৃষ্টিতে সকলের ভরসাও।


বিজয়া দশমী। এনগেজমেন্ট আজ-
হোটেল ম্যাডোনা। পার্টিতে যাবার জন্য,
গাড়ি এসেছে। নীচের তলায় সবাই
বসে আছে। উঁনি সিঁড়ি দিয়ে নামলেন। 
স্যরি, আর্জেন্ট পার্টির জন্য চললাম!


দাঁড়িয়ে সবাই এ ওর নজরে বন্দী,
একরাশ ধোঁয়া তুলে গাড়ি ছেড়ে দিল।
পাড়ার মণ্ডপ থেকে টালিগঞ্জ কাছে! 
কোলাকুলি, সমানে সমানে। নীরবতা
সঙ্গী করে ফেরা। মহিম স্মৃতির মাঝে।


দীঘিতে ডোবা মেয়েকে বাঁচিয়ে যেদিন-
বক্ষে বন্দী করে মহিম ঘরে এনেছিল,
রায়বাবুর চোখে তখনো জল ছিলো। 
আলিঙ্গনে বেঁধেছিল সবে একে একে। 
আজ জল শুকিয়েছে!  দুরত্ব বেড়েছে।


অনিল,অমিয় বলে, চলো তবে যাই-
মাষ্টার মশায়ের প্রণাম সেরে আসি। 
সংখ্যায় তারাও কম নয়, আলিঙ্গনে-
বাঁধে পরস্পরে। আঘাতে ওরা একত্রে
এখন। দলছুট নয় একে অন্যের।


মহিম শুধু নিজের মনে মনে ভাবে,
এটা কি হলো? তবে কি দিন বদলালো?
কাঁধে কাঁধ রেখে বুকের উত্তাপ কই?
তবে কি এলো আজ জাগরণের দিন?
বিজয়া বোধহয় আর সবার নয়!


কটু হলেও কথাটা ভাবতে হবেই।