লাবণ্য,
দুপুরের চকচকে রোদের আলো
বারান্দায় উঁকি দিয়ে দেখছে তোমাকে
আমার মত ওরাও যে ভালবাসে তোমাকে !
দুপুরটাকে ভীষন দু:খী মনে হয়
যে দুপুরে তোমাকে  দেখিনা
উঠানের দড়িতে ঝুলছে তোমার ওড়না আর গাউন
স্লান করে শুকোতে দিয়েছ
দেখে মনটা ভীষন ভাবে আতঁকে উঠে
যাক তুমি তো বাড়িতে আছো;
চুল শুকোতে  বারান্দায় হাটাহাটি করো রোজ
আজ ও এসেছ, তবে একটু দেরিতে ৷
লাবণ্য,
তোমাকে দেখি দ্বিপ্রহরে
বিকেল বেলায় একটু বেশী ৷
ইলেকট্রিক পাখার নিচে যখন বসে থাকতে
আর ভাললাগেনা তোমার
খোলা চুলে চলে এসো উঠোন কোনের
দেবদারুর তলায়৷
ভাগ্যক্রমে দু-এক পলক দেখা
হয়ে যায় তোমার মুখ৷
আমি জানি, রোজ বিকালে টবের গাছে
তুমি জল দাও;
পয়রা গুলিকে পরম যত্নে শস্যদানা ছিটিয়ে দাও
মনে হয় আমি পায়রা হয়ে যাই
খুটে খুটে খাই তোমার দেওয়া প্রতিটি শস্যকণা
তাদের জন্য তোমার ভীষন মায়া, ভালবাসা
আমি জানি,সুন্দরী নারীর মন হয় নরম
নদীর মত ,ফুলের মত, দখিনা বাতাসের মত
তবে কেন তা আমার জন্য শ্বেতপাথর ৷
উৎসবে প্রতিবেশী খুকিদের হাত সাজিয়ে দাও
মেহেদী রঙে,দুর থেকে দেখে মুগ্ধ হই
স্বপ্নলোকে হাতবাড়িয়ে দেই সাজাও তুমি ইচ্ছে মত৷


লাবণ্য,
তোমার প্রতিটি বসন্ত কেটেছে আমার চোখে
দেখেছি তোমাকে বালিকা থেকে কিশোরী হওয়া
কিশোরী থেকে হয়ে ওঠা যৌবনবতী কোন এক নারী ৷
যার স্রোতে  নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার কথা
ভেবেছি আমি কতবার, যা তুমি স্বপ্নে ও ভাবোনি ৷
মুখোমুখি দাড়িয়েই কেঁপে উঠেছে চোখ,
গভীর চোখে তাকাতে পারিনি হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে
অনাকাংখিত স্পর্শে শিহরিত হয়েছি কতবার
তবুও পেয়েছি  ঘৃনার উপহাস ৷


লাবণ্য,
সেদিন তোমার প্রিয় দুলজোড়া হারিয়ে
অনেক কষ্ট পেয়েছিলে,
মন খারাপ করে ছিলে সারা বিকেল
ইচ্ছে হয়ে ছিল দুল হয়ে যাই
মন খারাপের কারন হই ৷
সহস্রাধিক পথ পেরিয়ে নগ্ন পায়ে
হেটে গিয়ে ছিলাম তার সন্ধানে
শূন্য হাতে ফিরে এসেছি
যে উদ্যান আমার না তাতে কি খুজে পাওয়া যায়?
লাবণ্য,
নিজেকে আজ বড্ড বেশী প্রকৃতির সাথে
মেশাতে ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে নিমিষেই হয়ে যাই
শরৎ এর কাশফুল অথবা শেষ বিকালের
পানকৌড়ির ক্লান্ত ডানার ঝাপটানি
সুজোগ পেলেই হয়ে যাই মধ্যরাতের তিমির আধাঁর
জরিয়ে ধরি আষ্টেপিষ্টে
আজকাল আধাঁর নাকি তোমার বড্ড প্রিয় ৷


মানুষ হয়ে বড্ড বেমানান নিজেকে
কাল থেকে ঠিক চাঁদ হবো, তিমির রাতের আধাঁর
শরৎকালের ফুল হবো,
প্রতিক্ষায় রইবো লাবণ্যের ভালবাসার ৷৷