আমার শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে,
হিম বাতাসে যতটা ঠান্ডা হয় গাছের পাতা
কিংবা ঘরের চাল, জানালার লোহার শিক।
আমার শরীর অসার হয়ে আসছে,
যতটা দুর্বল হলে চোখের পাতা মেলা যায় না,
কিংবা খোলা যায় না প্রেমিকার ভেজা চিঠির ভাজ।
আমার শ্রবণ শক্তি ক্ষীণ হয়ে আসছে,
কানে কানে বলা কথা এখন শুধুই ফিসফিসানি
কিংবা মনে হচ্ছে বাড়ির নেড়ি কুকুরটা কাঁদছে খুব।  


আজ বৃষ্টি হচ্ছে ভীষণ-
স্যাঁতস্যাঁত মাটির গন্ধ বেরিয়েছে।
শেষবার দেখেছিলাম, ভেজা নরম মাটি পেয়ে-
দেদার বেরুচ্ছে কেঁচো, বিটল, তুর্ফুলা।  
লিলির হাতে ছয়টা কদমফুল,
দুটো ফুলের হলুদ-সাদা পাপড়ি ছিঁড়ে টাক করে ফেলেছে।
বাড়ির পেছনের কালো জাম গাছটায়-
এবার জাম হয়েছে প্রচুর।
বুড়ো আঙ্গুলের সাইজের জাম, স্বাদ নেইনি।
বাড়ির নেড়ি কুকুরটা নরম মনের,
প্রিয়জন হারানোর ব্যথা সইতে পারবে না।
মানুষ কি কখনো কুকুরের প্রিয়জন হয়?
পুকুর পাড়ের তাল গাছটায় এবার শাঁস আসবে-
দৃঢ় বিশ্বাস; রোপণকারীর জীবদ্দশায় তাল হয়না।


বৃষ্টিতে ভেজা বারণ আছে,
সর্দি জ্বর হয়; মৃত মানুষেরও কি হয়?
মৃতরা আদৌ মানুষ না-কি শুধুই লাশ?
বৃষ্টি থেমে গেলে আমাকে কবরস্ত করা হবে
ভেজা মাটিতে, জলে-কাদায়; আমার সর্দি লাগবে না-তো?


১৫ শ্রাবণ ১৪২৮ / ৩০ জুলাই ২০২১ / শুক্রবার
নারায়ণগঞ্জ