হে বন্ধু, বলতে পার - আমার এ জীবন কিসের জীবন?


এই আমি তো হতে পারতাম প্রাণহীন, অনুভূতিহীন কোন এক পাথর
অথবা তো হতে পারতাম অজস্র মৃত ঝিনুক ছড়িয়ে দেয়া সাগরের উত্তাল ঢেউ।
এই আমি হতে পারতাম অনর্থক, অবিরাম বৃষ্টির কান্না
অথবা রাতের আকাশে অনেক আগেই মরে যাওয়া কোন তারার আলো।  


এ জীবন হতে তো পারত কোন কীট পতঙ্গের জীবন
অথবা উল্লেখ না করার মতো সরল কোষী কোন অনুজীবীর জীবন ।
কিন্তু কি আশ্চর্য ব্যাপার দেখ বন্ধু -
প্রায়শই আমার বুকের গভীর থেকে,
কখনবা মগজের কোন বাঁক থেকে -
কেউ একজন যেন ক্ষণে ক্ষণে বলে ওঠে -  
আমার এ জীবন -
মৃত জমিতে স্বপ্ন ফলানোর জীবন।
আমার এ জীবন -
জোনাকির আলোয় অন্ধকার টানেলের ওপাশটা দেখার জীবন।
আমার এ জীবন -
ডুবে যাওয়া সূর্যটাকে বুকে পূরে এগিয়ে যাওয়ার জীবন।

হে বন্ধু তোমার এ জীবন, কিসের জীবন?
তোমার এ জীবনটাও তো হতে পারত ভাঙ্গা ইট কাঠের জীবন  
অথবা পায়ের নিচে পিষে যাওয়া খুদ্র কোন পিপীলিকার জীবন।


কিন্তু তোমার-আমার জীবন তো তা নয়।
আমাদের জীবন তো রংহীন সপ্নগুলোকে রঙিন করার জীবন  
পেছনে স্পষ্ট পদচিহ্ন রেখে এগিয়ে যাওয়ার জীবন।    


আমাদের জীবনতো মানুষের জীবন।
আমরা তো মানুষ।  
যে কখনই - নিজে বেঁচে থাকার জন্য বাঁচে না, বাঁচতে পারে না।  
বেচে থাকে তার ভালবাসার জন্য –  
কখনও জন্মদানকারী পিতা-মাতার জন্য  
কখনওবা পাশে চলা সঙ্গিটির জন্য
কখনও সন্তানদের জন্য।  
কখনওবা নিজের বিশ্বাসের জন্য
অথবা পায়ের নিচে আত্মবিশ্বাস দেয়া শক্ত নিরেট স্বস্তিকর মাটিটুকুর জন্য।  


হে বন্ধু, বলতে পার - তোমার এ জীবন কিসের জীবন?  
- তোমার এ বেঁচে থাকা কিসের বেঁচে থাকা ?
   কিসের জন্য তুমি আজ অস্তিত্বময় এই তুমি?