পৃথিবী ধ্বংস হবে একদিন
ধ্বংস হবে ফুল পাখি
সঙ্গে আসবুজ বৈচিত্রের নদ -নদী
.......................................
হোরেম হ্যাব হিসাবে চাষাকে আসঙ্গ করে
সারাটা মহাশূন্যে হবে কবিতা মানবের চাষ
কবিতার শিরা-উপশিরা, মগজ-হাড়-অস্থি মজ্জা
খিদে পেলেই আপাদমস্তক কবিতার শরীর খেয়ে
অঘোর ঘুমে ঘুমিয়ে পড়বো চাঁদের বুকে।
(চাঁদে কবিতার চাষ বাস : রীনা তালুকদার)

কবি কেন মহাশূন্যে যাত্রা করবে। করবে এজন্য যে, পৃথিবীর গবেষণায় পৃথিবী ধ্বংসের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে বিভিন্ন ভাবে। তাই মানুষের অস্তিত্বের প্রশ্নে মানুষ আরেকটি বসবাসের জায়গা খুঁজছে। আর কবির কল্পনা পৃথিবীকে ছাড়িয়ে নতুন কোনো নিকেতনের দিকে চলমান। কবির কল্পনা আবর্তিত হয় বা হচ্ছে মহাবিশ্বকে ঘিরে। পৃথিবীর ভূ-ত্বকে আজীবন বসবাসের কোনো ঈঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তাই উর্ধ্বমুখী চিন্তাই করতে হবে। ধর্মীয় ইঙ্গিতও দেয়া আছে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে কিয়ামত হবে। পৃথিবীর বাইরে আরেক মানব পৃথিবীর;  হয়তো পৃথিবী নয় অন্য কোনো নামে। ধারণা করা হয় অন্য কোনো গ্রহ মঙ্গল, শনি, বৃহস্পতি, বুধ বা আরো নতুন কোনো গ্রহে। মহাজাগতিক ইতিহাসের ভাষায় বিশ্বতত্ত্বের (Cosmology)  ইতিহাসে প্রাণ না থাকলে রস থাকবে না। রসিক হবার জন্য একটা প্রাণকে কয়েক বিলিয়ন বছর ধরে বিবর্তিত হতে হয়। মানুষ দীর্ঘ সময় ইতিহাস বলতে মানব সভ্যতার ইতিহাসকে বুঝতো। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায় ইতিহাস বিষয়েও ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। পৃথিবীর ইতিহাস একদিনে তৈরী হয়নি। এর পিছনে অনেক মনীষীর পরিশ্রম জড়িয়ে আছে। মানুষের কল্যাণের জন্য কোনো কিছুই মানুষের অসাধ্য নয়। কেবল দরকার আগ্রহ থাকা। পাশা ও জুয়া মূলত প্রাচীন মিসরীয় খেলা হিসাবে অনেক পণ সুযোগ থাকে। একটি বৃত্তের মধ্যে গুটি চালবে। খেলাটিতে বিভিন্নভাবে বাজি ধরা যেতে পারে। খেলাটি অনেক সময়ের হলেও অল্প সময়ের মধ্যেও খেলা যায়। খেলাটিতে দ্রুত টাকা উঠে আসে। অন্যসব জুয়ার মতো এটিও অনিশ্চিত খেলা। ২০০৯ সালের প্যাট্রিসিয়া ডিমাউরো তার জীবনে শুধু দ্বিতীয়বারের মতো জন্য আটলান্টিক সিটির বোরগাটা ক্যাসিনোতে পাশার জুয়া খেলেন। তার বন্ধু তখন অল্পতেই খেলা শেষ করে। এরপর ডিমাউরো নিজেই পাশা খেলায় বসে ১৫৪ বার ছোড়া পাশা জিতে খেলতেই থাকে; কিন্তু সে জানতো কত বার জিতেছে। মাত্র ১০ডলার দিয়ে খেলা শুরু করে কয়েকশ' গুণ বৃদ্ধি পায়। পাশার কৌশল পণে সবচেয়ে রক্ষণশীল খেলায় সে ৫০ বারের বেশী পরিমাণ অর্থ ফিরে পায়। কৌশল আয়ত্বে থাকলে কোনো কিছুই কঠিন নয়।


মানুষের চন্দ্র বিজয় মজার এক জুয়ার ঘটনা ঘটছে ১৯৬৪ সালে। সে বছর ডেভিড থ্রেলফল একটি ব্রিটিশ কোম্পানির কর্তা উইলিয়াম হিলকে লিখলে- আগামী ৭ বছরের মধ্যে মানুষ চাঁদে হাঁটবে। এ মর্মে তাকে ১০০০ ডলার বাজি ধরতে বললো। বর্তমান সময়ে  বিজ্ঞান বহু অসম্ভবকেই সম্ভবে পরিণত করছে। অবাস্তবকে করে তুলছে বাস্তব। কিন্তু ওই সময় মাত্র দু-এক জনই আকাশ ভ্রমণ করেছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মহাকাশ অভিযান নিয়ে চলছে ঠাণ্ডা লড়াই। ওই সময় চন্দ্র বিজয় নিয়ে বাজি ধরাটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলা চলে। কে জানত নতুন ইতিহাস তৈরি হবে! বদলে যাবে মানুষের মহাকাশ অভিযানের সব গল্প কথা। ডেভিস থ্রেলফল তার পক্ষে ১০ ডলার বিনিয়োগ করেন। আর ১৯৬৯ সালে নিল আর্মস্ট্রং যখন চাঁদের মাটিতে পা রাখলো সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ী গেলো থ্রেলফল। জিতলো ১০ হাজার ডলার।
যারা বাংলা সাহিত্যে জন্ম ইতিহাস জানে, বাংলা ভাষার প্রচলিত ছন্দ জানে আর বাংলা অভিধান চর্চায় রাখে; তার জন্য সুন্দর ও যুগোপযুগি কোনো বিষয়ই কঠিন হয়ে ধরা দেয় না। বিজ্ঞান যত জটিলই হোক তার জন্য সবই কবিতায় ধারণ করা সম্ভব। বিজ্ঞানের আবিস্কার মানুষকে অনেক দূর নিয়ে যাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ যাকে বলেছেন ‘সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য’। এই সত্য অন্বেষণে মানুষ পৃথিবী ছেড়ে পৃথিবীর বাইরেও অভিযান চালাচ্ছে। সফল অভিযান একদিন মহাবিশ্বের মহাশূন্যে এই পৃথিবীর চেয়েও হয়ত কোনো উন্নত আবাস খুঁজে মানুষের জন্য।
মহাশূন্যে গিয়ে কবি কিভাবে সময়কে ভোগ করবেন। সেটি এক রকম স্টিফেন হকিং -এর ‘থিওরী অব এভরিথিং’ এবং আইনস্টাইনের ‘থিওরী অব রিলেটিভিটি’-তে মানুষের প্রাত্যহিক জীবন জগতের কথাই ধ্বনিত হয়েছে। যা নিয়ে বিশ্বব্যাপী অন্তহীন গবেষণা চলমান। সুপার স্ট্রিং তত্বগুলো আমাদেরকে থিওরী অব এভরিথিং এর খোঁজ দিতে সক্ষম। মহাশূন্য নিয়ে কবির উচ্ছাস :
.......................................
সঙ্গীহীন শূন্যতা পেরিয়ে আমি সেই নাক্ষত্রিক উঠানে
মহাশূন্য আন্দোলিত করে
তোমার নক্ষত্রগৃহে নেবো
শেষ উত্তাপ।
(নক্ষত্র মানবী/ মাহবুবুর রহমান বাদশাহ)


যারা বিজ্ঞান কবিতাকে নিয়ে বিভিন্ন অরুচি বক্তব্য ছড়াচ্ছে তারা দেখুক বিজ্ঞান কবিতাকে জয় করবে। কবিতাও বিজ্ঞানকে জয় করবে। মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনের সাথে বিজ্ঞানের ব্যবহারের সাথে কবিতাকেও সঙ্গী করবে। এর সফলতা খুব বেশী দূরে নয়। খুবই নরম ও হালকা বস্তু যে বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। সামান্য সুঁইয়ের খোঁচাতেই ফেটে যায় বলুন। এই নরম বেলুন দিয়ে বর্তমানে গতিশীল বুলেট থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। অবিশ্বাস্য হলেও এমন পরীক্ষা করেছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। পরীক্ষাটির জন্য বেলুনগুলোকে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে পরীক্ষাটির পর গবেষকরা দাবী করে মাত্র ১০টি বেলুন দিয়েই গতিশীল গুলি আটকিয়ে দেয়া সম্ভব। যে গুলি মানুষকে ক্ষতবিক্ষত করে প্রাণ কেড়ে নেয়। সেই গুলি নরম বস্তু দিয়ে রুখে দিচ্ছে। এ কাজও মানুষের মস্তিস্ক থেকেই উদ্ভূত। সমালোচনার তীর যতই কঠিন হোক নরম বাক্যবাণে ঠেকানো সম্ভব। বিজ্ঞান যতই কঠিন হোক মসৃণতার প্রলেপ দিতে জানলে কবিতা বিজ্ঞানকে বশ করে ফেলে। চার্লস ডারউইন প্রাকৃতিক নির্বাচনের ধারণা দেয়ার পর পৃথিবীর জীবকূলের ইতিহাস রচনার চেষ্টা করা হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানের যাত্রা শুরুর পর থেকেই ইতিহাস ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতিহাস একেবারে চরম পর্যায়ে পৌঁছায় মহা বিস্ফোরণের ধারণা পাবার পর মহাবিশ্বের ইতিহাস রচনা করা হয়। বিজ্ঞানের মাধ্যমে রচিত ইতিহাসকে বলা হলো বৈজ্ঞানিক ইতিহাস। বিজ্ঞানের সাথে দর্শনের মিশেলে বৈজ্ঞানিক দর্শনের সৃষ্টি হয়। মহাবিশ্বের ইতিহাসকে বলা হয়েছে মহাজাগতিক ইতিহাস। মহাজাগতিক ইতিহাস রচনার বড় সাফল্য হচ্ছে চমৎকার সংকেত লাভ যার নাম “মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ” বা ‘Cosmic microwave background radiation CMBR’। এই রেডিও টেলিস্কোপ দিয়েই গবেষক পেনজিয়াস ও উইলসন ১৯৬৫ সালে CMBR আবিষ্কার করেছিলেন। যার ইতিহাস তাকেই রচনা করতে হয়। মানবজাতির ইতিহাস মানুষকেই লিখতে হয়েছে। এই সূত্র মেনে মহাবিশ্ব নিজেই নিজের ইতিহাস রচনা করেছে। মানুষের সাধ্য নেই সে ইতিহাস রচনা করার। মানুষ শুধু রচিত ইতিহাসের ভাষা বুঝতে অনেক সময় লেগেছে। পটভূমি বিকিরণকে মহাজাগতিক ইতিহাসের ভাষার বর্ণমালা হিসেবে আখ্যা দেয়া যায়। প্রাচীন মিশরীয় লিপি লেখা হলো হায়ারোগ্লিফিক বর্ণে। বর্ণ পাবার পর লেখার মর্মার্থ উদ্ধার করতে খুব একটা সময় লাগেনি। প্রতিনিয়ত মহাবিশ্ব নিয়ে নতুন নতুন তথ্য বের হচ্ছে। পৃথিবী, সূর্য সব মহাশূন্যে ভাসছে। গ্রহ-নক্ষত্রকেও মৃত্যুর পর ভবঘুরের জীবন কাটাতে হয়। নক্ষত্র নিয়ে কবির ভালোবাসার বসতি :


জেগে আছি ভালবাসা নক্ষত্রের রাত্রিবাস
তুফানের চিত্রদেশ সহজ সত্যের কাছে
নতজানু সংগ্রাম খুঁজে ফিরে পারাপার
চিরচেনা ভাবনার নদী তীর করতল
ছুঁয়ে যায় শতাব্দীর অবশেষ সরাসরি
মাধ্যমের তারকাটা পেরুবার কৌশলের
ঝাড়বাতি জ্বলে ওঠা সময়ের জোড়াতালি
নিয়ে চলা জীবনের খটমল তাড়াবার
লড়াইয়ের আওয়াজ কানে বাজে ছটপট
..............। (নক্ষত্রের রাত্রিবাস : শেখ সামসুল হক)


শূন্যেই সৃষ্টি, শূন্যতেই মৃত্যু, শূন্যেই চিরভ্রমণ, বিচরণ। গবেষকদের ধারণা মহাশূন্যে সামান্য একটি চায়ের কাপ কি-না ভেসে বেড়াচ্ছে অনেক দূরে, যেখানে আলোর গতিতে পৌঁছতে লাগবে কয়েকশ বছর। কিন্তু আলো এক সেকেন্ডে পৃথিবীকে পদক্ষিণ করে ঘুরে আসতে পারে। মানুষ, পৃথিবী, সূযথ সব মহাশূন্যে ভাসছে। জীবনটাই ভবঘুরের ঘুরা। মৃত্যুর পরও গ্রহ-নক্ষত্রকে ভবঘুরে জীবন কাটাতে হয়। নেই উপায় শূন্যে সৃষ্টি, শূন্যেই মৃত্যু, শূন্যে বিচরণ, চিরভ্রমণ। এই মহাশূন্যে বলা হচ্ছে সামান্য চায়ের কাপ ভেসে বেড়াচ্ছে  যার দূরত্ব হচ্ছে কয়েক’শ বছর। অথচ আলো তো এক সেকেন্ডে পৃথিবীকে সাত পাকে ঘুরে আসে। তাহলে শতাধিক আলোকবর্ষ দূরে শূন্যে চায়ের কাপ ভাসলে প্রশ্নটা হচ্ছে এ পৃথিবীতে মানুষ আছে। তাই এখানে চায়ের কাপ বিষয়টি পরিচিত ও অভ্যাসে প্রচলিত। আর খাবারের বিষয়টি কেবল পৃথিবীতেই সম্ভব। পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথাও চায়ের কাপ থাকার অর্থ মানুষ বা মানুষের মতো বুদ্ধিমান কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব থাকার কথা। ১৯৬১ সালে বিখ্যাত এক সমীকরণ তৈরি করে মার্কিন বেতার-জ্যোতি পদার্থবিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক ড্রেক। তার সমীকরণের মাধ্যমে কার্ল সাগানের দাবী- ‘‘মহাবিশ্ব বাদ থাক, শুধু আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে প্রায় ১ কোটি প্রাযুক্তিক সভ্যতা থাকার সম্ভাবনা আছে।” চায়ের কাপটি আছে পৃথিবী থেকে কয়েক’শ আলোকবর্ষ দূরে। সে এলাকার নাম স্যাগিটারিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জ। উষ্ণ গ্রীষ্মের যে কোনো পরিষ্কার সন্ধ্যায় খোলা আকাশে দক্ষিণ দিগন্তে তাকালে দেখা যায় এ নক্ষত্রপুঞ্জ। এ যাবৎ স্বীকৃত নক্ষত্রপুঞ্জ হচ্ছে ৮৮টি। এর মধ্যে ৪৮টি নক্ষত্রপুঞ্জের পরিচয় মানুষ ১৮’শ বছর আগে থেকে জানে। গ্রীক জ্যোতির্বিজ্ঞানী টলেমি তার ‘অ্যালম্যাগেস্ট’ বইতে ৪৮টির কথা বলেছেন। স্যাগিটারিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জ টলেমির তালিকার নক্ষত্রপুঞ্জের একটি। নক্ষত্রপুঞ্জ হিসেবে স্যাগিটারিয়াস মূলত সেন্টার (centaur)  জাতের। যা এক পৌরাণিক সৃষ্টি। গ্রীক পুরাণে এর বর্ণনা পাওয়া যায়। অর্ধেক মানুষ অর্ধেক ঘোড়া। সেন্টারের মাথা, হাত ও ধড় হচ্ছে মানুষের। আর পেট-পিঠ ও পা ঘোড়ার। সাংকেতিক ভাবে এই নক্ষত্রপুঞ্জকে তীর-ধনুক চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। নক্ষত্র নিয়ে রবীন্দ্রনাথ থেকে এখন পর্যন্ত কবিদের প্রিয় শব্দমালা হিসাবে খুব পরিচিত শব্দ হিসাবে  কবিতায় স্বাভাবিক ভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কবি বলছেন :


কোনো এক মধ্য রজনীর নিঃসঙ্গ নক্ষত্রের মৃত্যু
এখনো আমাকে বিহবল করে
দক্ষিণ আকাশে নক্ষত্রটি জ্বলছিলো রাত্রির সমুদ্রে
জ্বলতে জ্বলতে হঠাৎ নিজের আলোর ভেতর
নিজেই ডুবে গেল অকস্মাৎ
আমার মনে হলো মানুষও জ্বলতে জ্বলতে ওই নক্ষত্রের মতোই
নিভে যায় নিজের ছায়ার ভেতর।
(নিঃসঙ্গ নক্ষত্রের মৃত্যু-জাকির আবু জাফর)


নক্ষত্রপুঞ্জেই দেখা গিয়েছে একটি চায়ের কাপের। কাপ না বলে কেটলি বললে সহজ হয়। স্যাগিটারিয়াসে যত নক্ষত্র তার থেকে উজ্জ্বলতর ৮টি নক্ষত্রকে নিয়ে কেটলির চিত্রটা কল্পনা করে নিলে মোটেও কঠিন নয়। বাঁ দিকে কেটলির হাতল, ডান দিকে নল, উপরে ঢাকনা। গরম কেটলির নলে যে উষ্ণ ভাপ বেরোয়, সেরকম স্যাগিটারিয়াসের নক্ষত্রপুঞ্জের কল্পিত কেটলির নল থেকেও উষ্ণ বাষ্পসদৃশ একটা কিছু বের হবার দৃশ্য চোখে পড়বে। কোন কোন নক্ষত্র কল্পরেখায় কেটলির চিত্র আঁকা যায়। কেটলির দেহ তৈরি ৪টি নক্ষত্র দিয়ে। নক্ষত্রগুলোর নাম- ডেলটা স্যাগিটারি, ইপসাইলন স্যাগিটারি, জেটা স্যাগিটারি ও ফাই স্যাগিটারি। এ পৃথিবী থেকে দূরত্ব যথাক্রমে-৩৪৮, ১৪৩, ৮৮ ও ২৩৯ আলোকবর্ষ। জেটা ও ফাই স্যাগিটারির বাঁ দিকের দুটি নক্ষত্র সমন্বয়ে তৈরি করেছে কেটলির হাতল। নক্ষত্র দুটির নাম টাও স্যাগিটারি ও সিগমা স্যাগিটারি। পৃথিবী থেকে দূরত্ব যথাক্রমে ১২২ ও ২২৮ আলোকবর্ষ। ডেলটা ও ফাই স্যাগিটারির উপরে ল্যামডা স্যাগিটারি। এ নক্ষত্র  কেটলির ঢাকনার শীর্ষ ডগা। এটি পৃথিবী থেকে ৭৮ আলোকবর্ষ দূরে। ওদিকে ডেলটা ও ইপসাইলনের ডান দিকের নক্ষত্র গামা স্যাগিটারি। পৃথিবী থেকে ৯৭ আলোকবর্ষ দূরের এই নক্ষত্রটি। এটি যেন কেটলির নল তৈরি করেছে। চায়ের কেটলির নলের মুখে যে গরম বাস্প বের হয়, ঠিক সে রকম কল্পিত এ কেটলির নল থেকেও উষ্ণ বাষ্প বের হয়। আসলে তা আকাশগঙ্গা ছায়াপথ। সূর্যের চারদিকে পৃথিবী আর মঙ্গলগ্রহের মাঝামাঝি কক্ষপথ ধরে অবিরাম ঘুরছে আরেকটি চায়ের কাপ। সৌরজাগতিক এ চায়ের কাপটি একটা বাস্কেট বলের সমান বড়। সবসময় নতুন তথ্যের মাধ্যেমে মানুষ ও গবেষকদের ধারণা বদলে যাচ্ছে। খুঁজছে মহাবিশ্বের ইতিহাস। তবে পটভূমি বিকিরণ পাওয়া গেছে মহাবিশ্বের ইতিহাস জানতেও খুব একটা সময় লাগবে না। জানতে হবে পটভূমি বিকিরণটা কি। আর কি কারণে এটা ইতিহাস লিখনের মূল চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচিত হবে। সবকিছুরই ব্যাকরণ আছে। তাই কবি নক্ষত্রের উদাহরণে বলেছেন -


পশু এবং মানুষের ব্যাকরণ এক নয় বলে
মানুষেরা সভ্যতার সুনিপুণ চাষাবাদ করে
পশুরাও অলিখিত ব্যাকরণ মানে স্ব-সমাজে
পাঠ করে পূর্বপুুরুষের প্রচলিত ইতিহাস
আগুনের শঙ্কা মেনে চলে সব পশুর সমাজ
বারুদের শব্দে বুঝে নেয় তারা সমূহ বিপদ
নিজেদের ভাষা উচ্চারণে সব একত্রিত হয়
কখনোবা দ্রোহে ফেটে পড়ে গড়ে তোলে প্রতিরোধ।
ব্যাকরণহীন কেউ নয় এই বিশ্ব ও সংসারে
সমুদ্র কখনো ক্ষীপ্র হয়ে ধ্বংস করে না পৃথিবী
প্রত্যেকেই চলে স্বীয় ভাষা এবং ব্যাকরণ মেনে
নিজেদের মধ্যে সকলেই পড়ে নিজের নিবাস
ব্যাকরণ আছে বলে নীলিমায় নক্ষত্ররা হাসে
অরণ্যে কাটায় বুনো পশু এবং নদীতে হাঙ্গর
গ্রহ ও নক্ষত্র ছুটে চলে নিজ নিজ কক্ষপথে
সকলেই ব্যাকরণ মানে- ভাঙ্গে মানব সমাজ।
(ব্যাকরণ এবং জাগতিক বিশ্ব -মনি খন্দকার)


বেশীর ভাগ বিজ্ঞানীই একমত যে, কোনো এক মহা বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি। তখন থেকেই মহাজাগতিক ইতিহাসের শুরু। তবে জন্ম ইতিহাস তো অবশ্যই আছে। এজন্য মহা বিস্ফোরণের পূর্বের যুগটাকে বলা হয় অগাস্টাইনীয় যুগ। খ্রিস্টান যাজক সেন্ট অগাস্টাইন মহাবিস্ফোরণের পূর্বের যুগটাকে ঈশ্বরের জন্য নির্দিষ্ট বলে জর্জ গামফের এমন নামের প্রস্তাব করে। বিস্ফোরণের সময় কি ঘটেছে তা মানুষ ভাবতে পারে  না। কারণ স্থান-কালেরই সৃষ্টি হয়েছে মহাবিস্ফোরণের ১০ই-৪৩ (১০ টু দ্য পাওয়ার -৪৩) সেকেন্ড পর। তারপর থেকে মহাবিশ্বের ইতিহাসকে বিভিন্ন যুগে ভাগ করা হয়েছে। সভ্যতার ইতিহাসে- গ্রীক যুগ, রোমানীয় যুগ, মুসলিম যুগ, মধ্যযুগ এরকমই মহাবিশ্বের ইতিহাসে আছে বিভিন্ন ইপক। মহা বিস্ফোরণের পরের ১০ই-৪৩ সেকেন্ড পর্যন্ত যুগটা হলো প্লাংক ইপক। পরবর্তী সময়ে গ্র্যান্ড ইউনিফিকেশন ইপক, হেড্রন ইপক, লেপ্টন ইপক, ফোটন ইপক ইত্যাদি বিভিন্ন যুগকে সংজ্ঞা দেয়া দিয়েছে বিজ্ঞানীরা। এগুলোর মধ্যে ফোটন ইপক নিয়ে এই যুগের পটভূমি বিকিরণের সৃষ্টি হয়। ভৌত বিশ্বতত্ত্বে ফোটন ইপক  মানে একটা যুগ যখন মহাবিশ্বে ফোটন বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিল। এই মহাবিশ্বের মোট শক্তির অধিকাংশ যোগান দিয়েছিল ফোটন। মহা বিস্ফোরণের মাত্র ৩ সেকেন্ড পরই ফোটন যুগের শুরু। প্রথম কয়েক মিনিটে নিউক্লীয় সংশ্লেষণ নামে একটা বিশেষ প্রক্রিয়ায় পরমাণুর কেন্দ্রিন বা নিউক্লিয়াস গঠিত হয়। এরপর দীর্ঘকাল মহাবিশ্বের উপাদান ছিল কেবল পরমাণু কেন্দ্রিন, ইলেকট্রন ও ফোটন। এ সময় মহাবিশ্বের ঘনত্ব ও তাপমাত্রা অনেক বেশী ছিল। ফোটন যুগের বড় বৈশিষ্ট্য ছিল অনচ্ছতা বা অপাসিটি বা অসচ্ছ। তাপমাত্রা অনেক বেশীর জন্য নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রন একত্রিত হতে পারেনি আর ফোটনগুলো মুক্ত ইলেকট্রন থেকে অবিরাম প্রতিফলিত হযেছে। এ অবিরাম বিচ্ছুরণই হচ্ছে অনচ্ছতার কারণ। শক্তিশালী রোমান যুগের যেভাবে পতন ঘটেছে সেভাবেই অবসান ঘটে এ ফোটন যুগের। অবসানটা ঘটেছে মূলত উত্তপ্ত-ঘন মহাবিশ্বে বিভিন্ন ধরণের কণার পাশাপাশি ছিল প্রতিকণা। ইলেকট্রন এক ধরণের কণা, পরমাণু কেন্দ্রিন বিভিন্ন কণার তৈরী। প্রতিটি কণার বিপরীতে যে প্রতিকণা ছিল তা বর্তমানে খুঁজে পাওয়া যায় না। ধারণা করে তাপ ও শক্তি অনেক বেশী হলে কণা-প্রতিকণা জোড়ায় জোড়ায় তৈরী হয়। আদি মহাবিশ্বে যে পরিমাণ তাপ এবং শক্তি ছিল এ জন্য  কণা-প্রতিকণা জোড় অবিরাম সৃষ্টি হয়েছিল। অবশ্য সৃষ্টি হবার সাথে সাথে সেগুলোর পূর্ণবিলয় ঘটেছিলো একে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় এনিহিলেশন বলা হয়। একেবারে প্রাথমিক মহাবিশ্বে কণা-প্রতিকণা জোড়া অবিরাম সৃষ্টি ও পূর্ণবিলয় প্রাপ্ত হয়েছিল। পূর্ণবিলয়ের কারণে বিশুদ্ধ শক্তির সৃষ্টি হয়। বিশুদ্ধ শক্তি মানেই ফোটন। প্রথম যুগে সৃষ্টি আর পূর্ণবিলয়ের চরম লীলা চলাকালীন প্রতিটি পূর্ণবিলয়ের জন্য ফোটন সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এই অবস্থা চিরস্থায়ী ছিল না। মহাবিশ্ব ধীরে ধীরে প্রসারিত আর শীতল হতে থাকে। ফলে অনেকগুলো কণা-প্রতিকণা জোড়ই সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়। আর তা থেকে নতুন কোনো জোড় সৃষ্টি হলো না। তখনই ফোটন যুগের অবসান ঘটে। মহাবিস্ফোরণ নিয়ে প্রতিনিয়তই গবেষণা চলছে। আর নতুন নতুন কৌতুহল তৈরী হচ্ছে। এর পাল্লা দিয়ে স্বপ্ন দেখছে মানুষ। কবির জন্য সুন্দর এক অনুসঙ্গ কবিতায় শব্দ গাঁথুনির কাঁচামাল বা ‘র’ ম্যাটেরিয়াল।
মানব জীবন রহস্যময়। আর মহাবিশ্ব সৃষ্টিও রহস্যময়। গবেষণা যতদূর পৌঁছে সেখান থেকেই নতুন স্বপ্ন এগোতে থাকে। কবির কল্পনা জগত সীমাহীন।  আর সীমাহীন জগতে কবি এই রহস্যময় মহাজগতের স্বপ্নকে কবিতায় প্রোথিত করবেন শক্তিশালী শব্দের ব্যাঞ্জনায়। আরো জানা প্রয়োজন মহাবিশ্ব সম্পর্কে। মহাবিস্ফোরণের ৩৮০,০০০ বছর পর তাপমাত্রা ও ঘনত্ব অবিশ্বাস্য ভাবে কমে যায় যে, নতুন কণা-প্রতিকণা জোড় সৃষ্টি হতো না। শক্তি বলতে ফোটনকেই বোঝায়। প্রতিটি বিলয়ের মাধ্যমে ফোটন সৃষ্টি হয় পুনরায় কণা-প্রতিকণা জোড় সৃষ্টির সময় ফোটন শোষিত হয়। অজ্ঞাত কারণে সেই বিশ্বে প্রতিকণার তুলনায় কণার পরিমাণ ১ বিলিয়ন ভাগের ১ ভাগ বেশী ছিল। প্রতিকণার সংখ্যা ১ বিলিয়ন হলে কণার সংখ্যা ছিল ১ বিলিয়ন ১টি। ১ বিলিয়ন প্রতিকণা ১ বিলিয়ন কণার সাথে মিলে বিলয়প্রাপ্ত হলে প্রতি বিলয়ের জন্য ১টি করে মোট ১ বিলিয়ন ফাটন উৎপন্ন হয়। বাকি ছিল ১টি কণা সাথে এক বিলিয়ন ফোটন। এমন ঘটনাই ঘটেছিল। প্রতিটি কণার পাশাপাশি ফোটনের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ছিল। প্রতিকণা সব শেষ হয়ে গেলে পূর্ণবিলয়ের কোন অবকাশ না থাকায় সেই অবস্থা হয়ে গেল চিরস্থায়ী। মহাবিশ্ব আজও সেই অবস্থায় আছে। এ পরিণতিতেই ফোটন যুগের অবসান ঘটেছে। পরবর্তীতে প্রায় সব ইলেকট্রন কেন্দ্রিনের সাথে মিলে পরমাণু গঠিত হয়। মুক্ত ইলেকট্রন থেকে ফোটনের প্রতিফলনের কারণেই অনচ্ছতার সৃষ্টি হয়। আর মুক্ত ইলেকট্রন না থাকায় অনচ্ছতাও থাকলো না। মহাবিশ্ব হলো একেবারে স্বচ্ছ। এই অবাধ স্বচ্ছতা পেয়ে ফোটনগুলো পুরো মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়লো। প্রথম দিকে ফোটনের তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩ হাজার ডিগ্রি কেলভিন। সেই ফোটনগুলো এখনও টিকে আছে। সব দিক থেকে একরকম থাকলেও মহাবিশ্বের প্রসারণের কারণে তাদের তাপমাত্রা কমে গেছে। বর্তমানে এই তাপমাত্রার পরিমাণ প্রায় ২.৭ ডিগ্রি কেলভিন। তাপমাত্রা কমায় তরঙ্গ দৈর্ঘ্যও পরিবর্তিত হয়ে গেছে। বর্তমানে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য প্রায় ১.৯ মিলিমিটার যা অণু তরঙ্গ তথা মাইক্রোওয়েভ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এই ফোটনগুলোর বর্তমান নাম মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ। পটভূমি বলার কারণ সব দিকে সমানভাবে এগুলো বিস্তৃত আর সকল দিক থেকে একই হারে এই তরঙ্গ পাওয়া যায়। এভাবেই রহস্যময় মহাবিশ্বের ইতিহাসের ভাষার বর্ণমালা হয়ে উঠেছে পটভূমি বিকিরণ। এরা সেই সময় থেকে কোন রকম বিবর্তিত হয়নি। এজন্য এগুলো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সেই আদি উত্তপ্ত-ঘন অবস্থার ধারণা পাওয়া সম্ভব। সেই সাথে এদের তাপমাত্রার পরিবর্তন লক্ষ্য করে মহাবিশ্বের প্রসারণের বিভিন্ন পর্যায় সম্বন্ধেও ধারণা পাওয়া সম্ভব। ইতোমধ্যে পটভূমি বিকিরণ ৩টি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে- (১) মহা বিস্ফোরণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছিল (২) আদি মহাবিশ্ব ছিল অতি উত্তপ্ত-ঘন ও তাতে তাপীয় সাম্যাবস্থা বিরাজ করছিল (৩) কণা-প্রতিকণার পূর্ণবিলয়ের  শেষে এক পর্যায়ে পরমাণুর সৃষ্টি হয়। ১৯৬৫ সালে আরনো অ্যালান পেনজিয়াস ও রবার্ট উড্রো উইলসন এই পটভূমি বিকিরণ আবিষ্কার করেন। এদের পূর্বে জর্জ গামফ এ বিষয়ে ভবিষ্যৎ বাণী করেছে। বলা যায় ১৯৬৫ সাল থেকে মানুষ মহাজাগতিক ইতিহাস বুঝতে  শুরু করেছে। এডওয়ার্ড গিবনের “ডিক্লাইন অ্যান্ড ফল অফ দ্য রোমান এম্পায়ার” আর পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় বইটি ইতিহাসের সেরা বইর মর্যাদায় নেই। বিজ্ঞান কল্পকাহিনী আধুনিক কল্পকাহিনীমূলক সাহিত্যের একটি বিশেষ ধারা যা ভবিষ্যৎ বিজ্ঞান বা প্রযুক্তির আবিষ্কার ও উদ্ভাবন আর মানব সভ্যতার ভবিষ্যৎকে কেন্দ্র করে পটভূমি রচিত হয়। মানব সভ্যতা মধ্যযুগে থেকে আধুনিক যুগে প্রবেশ কালে যে বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছে। এর অনিবার্য বিষয় ছিল বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। ইংরেজিতে একে সাইন্স ফিকশন বলা হয়। বাংলা ভাষায় প্রথম উনবিংশ শতাব্দীতে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখা শুরু হয়। জগদানন্দ রায়কে বাংলা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী সাহিত্যের অগ্রদূত বলা হয়। তিনি শুক্র ভ্রমণ নামক একটি জনপ্রিয় বই লিখেছিলেন। কল্পকাহিনীর বাহ্যিক রূপ হচ্ছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান কল্পকাহিনীমূলক বই লিখেছেন কল্পবিজ্ঞানের গ্রান্ডমাষ্টার আইজাক আসিমভ। শীঘ্রই মহাজাগতিক ইতিহাসের আদ্যোপান্ত জানা যাবে। কবির জন্য নতুন বিষয় এটি।
বলা হয় কবিদের তীর্থ স্থান লন্ডন। সুন্দরের নগরী প্যারিস। মুসলমানদের কাবা, হিন্দুদের গয়া কাশী পবিত্র স্থান আর মন্দির হচ্ছে পবিত্র উপাসনালয়। খ্রিষ্টানদের ভ্যাটিক্যান হচ্ছে ধর্মীয় সর্বোচ্চ পবিত্র স্থান আর উপাসনালয় হচ্ছে গীর্জা। বৌদ্ধদের উপাসনালয় হচ্ছে প্যাগোডা। বাংলা কবিতার ইতিহাস ১৪০০ না ১০০০ বছরের ? এ প্রশ্ন অনেক পিছনে ফিরতে হয়। একদিনে বাংলা কবিতা কবিতা হয়নি। তার জন্য অনেক ভাষা অনেক পথ পেরিয়ে তবেই বাংলা আজ প্রতিষ্ঠিত বিশ্বে। ভাষা বিজ্ঞানের ইতিহাসে বাংলার যেমন ইতিহাসটা অনেক ছড়াই উতরাই পেরোতে হয়েছে। তেমনি কবিতার ইতিহাসও তেমনি কঠিন রাস্তা পেরিয়ে এসেছে। চর্যা থেকে আজ বিজ্ঞান কবিতা। দীর্ঘ পথে খনার বচনও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কেউ স্বীকার করুক না করুক। খনার জ্যোর্তিবিজ্ঞান তার বচনে যেভাবে মানুষের জীবন জগতকে জড়িয়ে রেখেছিল সেটি সাহিত্যের এক উজ্জল দিক।


(আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান কবিতা : প্রবন্ধ গ্রন্থ থেকে)



(সংযোজন, বিয়োজন, সমালোচনা ও আলোচনার অনুরোধ জানানো হলো)