কিশোর, কেমন আছো। আজকাল খুব খবর নিতে ইচ্ছের দুয়ারে উঁকি দেয় অবাধ্য মন বেলা অবেলা। জানি আমাজান ফরেস্টের ব্যস্ততা ঘিরে থাকে তোমাকে চারদিক থেকে। সমতটে চিয়াতলং ঝর্ণা দুই দিকে বহে সমান্তরাল। তোমার কর্মযজ্ঞ এতটা সাধাসিধে নয়। একজন সকলের রকমফের চাওয়া পাওয়া পূরণ করা অন্তত: মাউন্ট এভারেষ্টের চূড়ায় উঠার কষ্টসাধ্য সাধন করতে হয়। তবুও জনারণ্যে হাজারো অভিযোগে অভিযুক্ত হও।


কিশোর, যতই তোমাকে দেখি ততোই যেনো অদ্ভূত সুদর্শন হয়ে ওঠছো। তোমার কেপলার টেলিস্কোপ চোখ পৃথিবীর আর সব মনোযোগ কেড়ে নেয়। ওই আঁখি পল্লবে ময়ূর পেখম তুলে নেচে যায় অবিরত আমার স্বপ্নের উঠোন জুড়ে। মুহূর্ত না দেখলে মন কেঁদে প্রশান্ত মহাসাগরে মিশে। দৃষ্টি হয় দৃষ্টিহীন রাতকানা। হৃদপিণ্ডের ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ বেড়ে যায়। আই লাক্রিম্যাল গ্রন্থির অশ্রু শুকিয়ে ব্রহ্মপুত্রের আড়াই প্যাঁচ ঘুরে আসে।


কিশোর, ওই করমচা ঠোঁটের হাসি লেগে থাকে লিওনার্দ্যর বিখ্যাত চিত্র মোনালিসার চঞ্চু ছুঁয়ে। রক্তিম শীষ দেয় সোনালী ধানের বিস্তারিত সীমানায়। দিগন্ত শেষে ভ্রমণ করে সুন্দরবন।


কিশোর, তুমি দূরে গেলে পরবাসী এ মন ওয়াইল্ড বিস্টের গতি নিয়ে দৌঁড়ায়। খুঁজতে থাকে কিউরিওসিটি রোভার  ইকো পার্ক থেকে সাফারি পার্কে। যতদূরেই যাও আমার নার্ভাস এ্যাকশনের মিরাকল চশমা তোমাকে অনুসরণ করে। তোমার নিরাপত্তায় সদা প্রস্তুত প্রেমের বর্ডার গার্ড । তোমার বিপদ ঠেকাতে লর্ড রেজিজট্যান্স আর্মি সার্বক্ষণিক নিয়োজিত।  


কিশোর, ওই জিভ আফ্রিকার বাওবাব জীবনবৃক্ষ । যা আমার মারাকো দ্বীপের পানির তৃষ্ণা মেটায়। বুকের ভেতরের কারাকোরাম হিমবাহে জুড়িয়ে যায় সমস্ত আপন পর দুঃখ।


কিশোর, তোমার একদণ্ড দেখা পেতে সরীসৃপের তাগুহীন প্রতীক্ষা আমাকে সক্রেটিসের মৃত্যুর মুখোমুখি সময়ের অকৃত্রিম সাহস জোগায়। তোমার দৃঢ়তা আমাকে শাহ্ববাগ প্রজন্ম চত্ত্বরের টানে বিচঞ্চল করে তোলে। তোমার সত্য আমাকে চে’গুয়েভারার বিপ্লবী চেতনায় দীপ্ত করে। জেনে রাখো আমাদের ভালোবাসার গভীরতা গুয়াম দ্বীপের অদূরে বিশ্বখ্যাত গভীরতম মারিয়ানা বিন্দু।


কিশোর, তুমি জানো না তোমার অনুপস্থিতি আমাকে হিরোশিমা-নাগাসাকির কঠিন বাস্তবতার জীবন বোধে ঠেলে দেয়। চেয়ে দ্যাখো দেশাত্ববোধের প্রকাশ বাংলার মহল জুড়ে হাজার তাজমহল। আমরা ভালোবাসার রঙ ছড়িয়ে দিবো রাঙা শিমুল তুলোর গায়ে আদর মেখে; বিশ্ব চরাচরে অনন্তকালের ইতিহাসে।