কবি ফিরে গেলেন অনন্তে, শ্রাবণের সিঁড়ি বেয়ে
একা পথে, একতারা হাতে  ২২শে...
কণ্ঠে ছিলো বজ্র খোচিত হার
চোখে তার  বৈকুন্ঠপুরের ঠিকানা...
কঠিন সভ্যতার পটে সৃষ্টির কাঠ ঘষে ঘষে
যে  চন্দন তিনি ছড়িয়ে দিলেন,
তার সুবাসে আচ্ছন্ন জাতির হৃদয়,
মৈত্রীর বন্ধনে জুড়ে দিলেন জীবন আর মৃত্যু...
আমার তোমার হৃদে উঁকি দিয়ে লিখলেন,
জীবন নিংরানো গান।
অসংখ্য মৃত্যু মাঝে সৃষ্টির দীপ, কাঁপেনি এক তিল,
এগিয়ে চলার বার্তা নতুন কবিদের সৃষ্টির কলমে,
পাঠিয়েছিলেন সম্মান ফুল সমারোহে!
১৪০০ সালের কিংবা  ১৪০০ হাজার সালের করপূটে রাখলেন  সুধাকর জ্যোৎস্না…


যাওয়ার পথের সব বেদন শ্রাবনের ছাঁট বুঝি লুকিয়ে দিলো,
জন্মের নিগড় কাটলো বজ্রের ঘায়ে, তড়িৎ শিখায় আলোকিত হলো শেষ  চলার পথ...
আজ ২২শে শ্রাবণ, মেঘ ফাটা আকাশে একটা তারা আজ
অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে,
কি যেন সুর বাজে ঝরঝর বায়ে...
কে বলেগো নেই আমি ওই...


বারুদের নেশায় মগ্ন যখন পৃথিবী,
মানুষের মনুষত্ব লোপ পায় হিংসায়,
তখন  সচেতন করে অন্ধ জাতিকে কহেন,
"অন্তর হতে বিদ্বেষ বিষ নাশো"…


জীবন সমুদ্রে হাল ভেঙে যে নবিক হারায়েছে পথ
বাতাসের প্রাণে সে শোনে,একলা চলার গান...
ক্লান্তি কে জয় করার মন্ত্র বুঝি দেহের সব প্রান্তে ছোঁয়,
ক্লান্তিহীন মানুষটির স্বরলিপি।
নারী মুক্তির সুর ছড়ায় তাঁর সৃষ্টির ডালে ডালে।
দুর্গম পথে অবলারা কেমন আছে...
তাদের মনের ক্ষয় কথা জমা হয় প্রতিদিন নীরবতায়...
লিখে দিওগো কবি আরবার, জীবন লিপি…
ওই বাতাসের কানে কানে!
চরণ ধরিতে দিওগো সদা হে চিরন্তন মহাপুরুষ,
জীবন পথের কালজয়ী নেতা।
অচ্ছুতের কাছে কর বাড়িয়ে দিলে,
জীবন তৃষার প্রার্থনা নিয়ে।
কি অপূর্ব অমৃত জাদুগর, হেলায় ভাঙেন সব বাঁধ।
ভাবনার জালে ছেঁকে যে রত্নরাজি সৃষ্টির নায়ে উঠালেন
তা ছড়িয়ে দিলেন মাটির পৃথিবীতে...


মাতার খালি আসন ভাবনার কুসুমে আবৃত করে
মনের সহস্র  লিপি দিয়ে গাঁথলেন মালা,
মাকে না পেয়েও মায়ের হৃদের অতলে
তলিয়ে  গেলেন বারবার!
হয়তো তাঁর মা তারার গহনে বেঁচে থেকে
বারবার ভাবছেন "এ কেমন পুত্র ...
মোরে বাঁচিয়ে রেখে দিলো সারা জীবনের সাধনায়,  
বেঁচে থেকে সত্যি কি পারতাম, তার মতো করে মা হতে"…


কূলে বসে সোনার ধানের ব্যাপারী আজ,  
কোন নন্দনে পারিজাতের মালা গাঁথছেন
আর জমা করছেন সোনালী সৃষ্টি!
জানতে ইচ্ছুক মন আজ পাড়ি দেবে শ্রবণের পাখায়,
কিংবা স্বপ্নের মেঘে ছুটে মনের পক্ষীরাজ!
মেঘ ছাড়িয়ে কল্পলোকের সব স্তর ফেলে তারপর…
ওই তব অবিনশ্বর  ভাণ্ডারের প্রত্যাশী নিচের পৃথিবী,
ছড়িয়ে দিওগো কবি সব রঙ, রস, গন্ধ, বর্ণে…


হে শাশ্বত মহাপুরুষ, আজ তব প্রতীক্ষায় হাজার শ্রাবণেও
তৃষ্ণার্ত  ধরা!
                                                                                                                                                                                                         শ্যাম না বুঝে তার গণ্ডির মাঝে যে অমৃত সৃজন স্রষ্টাকে আটকে দিলেন,
22শে শ্রাবণ তাঁকে হাত ধরে বার করে দিলো চির মুক্তির বৈকুণ্ঠ পথে!
ওগো আমি অখ্যাত কবি,বলে যাই আরবার,
সহস্র ১৪০০ সালের পরও,
এ মহা কবি সমাজ দৌবারিক, ভুবন মাতাবেন সবুজ সৃষ্টির অক্সিজেনে...
জাতির কাণ্ডে  কিশলয় হয়ে ছেয়ে রইবে তার নির্মাণ,
অনন্ত কাল… পৃথিবীর শেয প্রহরে!!