আমার ছেলে খুব মেধাবী ক্লাসে প্রথম হতো,
আমার মেয়েও যায়না পিছে দাদাকে টেক্কা দিত।
অভাবের সংসারেতে সুখ দুঃখ ভরা
একটি স্বপ্ন উঁকি দিত মানুষ হবে ওরা।
উচ্চ শিক্ষায় মেয়ে আমার স্কালর্শিপ পেলো,
ছেলেকে পড়াতে গিয়ে জায়গা জমি গেলো।
বসতটুকু আছে মোটে আরতো কিছু নাই,
কেমনে দেবো মেয়ের বিয়ে, চিন্তাটা নেয় ঠাঁই।
গিন্নী বলে ছেলে আমার হয়েছে মস্ত ডাক্তার,
এবার বুঝি যাবে নিশ্চয় এই সংকট ভার।
ছেলে বললো কদিন পরে দেব বিদেশ পাড়ি,
সেখান থেকে ডাক এসেছে ভিসা হয়েছে তারি।
বাবা বলেন তুইতো জানিস সংসারের হাল,
মনে রাখিস সেই কথাটা কি আর বলি বল।
মাসের পরে মাস যায়, দিনের পরে দিন...
ছেলে আর খোঁজ রাখেনা এলোনা সুদিন।
ছেলের ফোন এলো যখন, তখন ছিল প্রভাত,
বলে বাবা আছি ভালো, তখন সেথায় রাত।
বলে ছেলে খুব ব্যস্ত, এখানে অনেক কাজ।
সময় করে তোমার খবর, নিলাম আমি আজ।
বলে তোমরা কেমন আছো, মা নিশ্চয় ভালো?
পুরো কথা হলনা শেষ, ফোনটা কেটে গেলো!
তারপরে বহু দিন হয়ে গেলো পার,
অভাবগুলো ঘিরে ধরে কষ্টের সংসার।
মেয়ের চলছে পড়াশোনা, হয়নি তখন শেষ।
কি করবে পায়না দিশা, চিন্তা ঘনায় বেশ।
মেয়ে একদিন বলে বাবা, সুখবরটা জানো?
পেয়েছি এক বড় চাকরী, অভাব যাবে শোনো।
মনের মতো পারেনি পড়তে মেয়েটা আমার মোটে,
এই অভাবে সেই ধরলো সংসারের হাল বটে।
স্বপ্নগুলো ভাগ করে, মোদের বিলিয়ে দেয়...
মেয়েরা ঠিক মায়ের মতো, সত্যকে বুঝে নেয়।
ছেলের জন্য গেলো সবই, সেই হলো পর,
এই বয়েসে মেয়েটা আমার, আলো করে ঘর।