ইতিহাসের ঘাড়ে চেপে আজোও ফেরে তারা,
যাদের কথায় সভ্যতা মাথা নীচু করে আজো,
যাদের স্মৃতি মনে করায় জমানো ঘৃণা।
যা আজো ভাগিরথীর স্রোতে বয়ে যায়…
প্রাসাদ পারে নিস্তব্ধ আঁধার আজো ভারাক্রান্ত,
বাতাস আজো মাথা কুটে শোকে।
এই বাতাস জানেনা দিন ক্ষন সময়,
সে শুধু ফেরি করে,কালের পরে কাল।
কখন সুখের,কখন দুখের কোনো স্মৃতি।
হায় মহম্মদী বেগ,আর সেই ছুরিকা!
যার আঘাতে টুকরো হল রাজার দেহ।
যে ছুরিকা রাজাকে রক্ষা করার  জন্য,
মনের মমতা দিয়ে,কামার তৈরি করেছিল।
তার প্রিয় রাজাকে উপহার দিয়েছিল।
না,তা আর হলো না...
ছুরিকা হাত বদলাল,এলো ইংরেজদের হাতে।
দায়িত্ব দিল মহম্মদী বেগকে,
কিন্তু সেদিন তার হাত কি কেঁপেছিল?
বিবেক কি দংশেছিল? অন্তরাত্মা কি কেঁদেছিল?
কে দেবে উত্তর…তবে তার চোখে জল ছিল,
আর হাতে ছিল ছুরিকা!
অপেক্ষা করছিল আর এক প্রধানের
আদেশের অপেক্ষায়,ঘন্টা বাজার
সাথে সাথে  ছিন্ন করলো রাজাকে।
রাজা বাঁচতে চেয়েছিল,আশা জেগেছিল
তার আপনজনকে দেখতে পেয়ে।
বলছিল,"আমি রাজা হতে চাইনা বেগ
বাঁচতে দাও, বাঁচতে দাও শুধু আমাকে”।
ছুরিকাটা বোধহয় চোখ খুলে দেখতে পারেনি,
তার অসহায় রাজার মৃত্যু!
হায় মহম্মদী বেগ…


মীরমদন আর মোহোনলালের তরবারী
বুঝিয়ে ছিল সেদিন,
দেশপ্রেম কাকে বলে।
মাটিকে ভালোবেসে ছিল তারা,
ভালোবেসেছিল প্রিয় রাজাকে।
তাদের বলিদানের রক্তের ঋন
মাটি বহন করে আদরে...
যত্নে নিজের বুকে স্থান দেয় তাদের।
আর মীরজাফর নামটায় আজো রক্তের দাগ।
কালিমালিপ্ত অন্ধোকার,ঘৃনার স্তুপে ঢাকা!
ইতিহাসের বোঝা,সভ্যতার কলঙ্ক।
ইতিহাসের ইচ্ছেনা থাকলেও তাকে বইতেই হবে,
ঐ স্বার্থপর বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরের নাম।
ইতিহাস বড় অসহায়!
মানুষ যখন ঘৃনায় ছুড়ে ফেলে...
এই পৃথিবীর সবাই যখন মুখ ফিরিয়ে নেয়।
ছুঁড়ে ফেলতে পারেনা ঐ অসহায় ইতিহাস।
বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর, আজও তাই ইতিহাসের পাতায়।।