ত্রিশ বছর চুরি গেছে, দেখিনি আমি তোরে।
আজ নিরালায় লিখছি তাই, পত্রখানি ভরে।
যন্ত্রণারঐ ঝড়টা বুকে, দুমড়ে মুচড়ে দেয়।
মোর হৃদয়ের গোপন কথা, জেলের ধুলোয় লুটায়।


জানি মা খুঁজেছিলি, কুয়াশা ভরা ভোরে!
খুঁজিস বুঝি আজো মোরে, পাথর চোখের পরে!
যেদিন আমি হারিয়ে গেলাম কাঁটা তারের ফাঁকে,
তোর মুখটাই বুকের মাঝে, ডুগরে ওঠে কেঁদে।


ইচ্ছে করে যাইনি আমি, তোকে রেখে একা।
কেমন করে হৃদয়ে মোর, পড়লো পাথর চাপা।
আজকে আমি লিখছি মা'রে, তিনটে যুগ পরে।
কিজানি বোধহয় হারিয়ে গেছিস, নেইতো আজ ঘরে!


এই দেশের জেলের থেকে, মুক্তি আমি পাবো।
তোকে দেখার জন্য ব্যাকুল, চক্ষু হৃদয় তব!
বুকের মাঝে শঙ্কা হয় বেঁচে আছিস কিনা!
ঠিকানাটাও ভুলে গেছি, সব যেন অচেনা।


চেনা যেন তোরই মুখ, তোর আদর স্নেহ।
বাকিটা সব চুরি করেছে,  কালো রাত্রির কেহ!
মোর যৌবন মোর দুপুর, ধুলায় রইলো ঢাকা!
জানিনা কোন দোষে আজ, সব কিছুযে ফাঁকা।


তৃষিতএ বুকের মাঝে, তেরঙা আজও উড়ছে।
চিনতে মোরে পারবেনা কেউ, চোখে স্মৃতি ভরছে।
তখন ছিল দেহে যৌবন, আজ সন্ধ্যার শেষে,
মোদের ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্ন কোথায় গেল ভেসে!


পৃথিবী যখন সুখ নিদ্রায়, মোর জন্য জাগিস,
বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে দিয়ে, মোরে বুঝি খুঁজিস।
বেঁচে থাকলে ধুলোর মাঝে প্রতীক্ষা করবি একা।
কেমনে দেব  তার প্রতিদান, রেখে গেলে একা।


তোর জন্য এতটা কাল, জেগে আমি রই,
তোর জন্য প্রতিদিন মৃত্যুতেও বেঁচে রই।
স্বাধীনতার দীর্ঘ প্রতীক্ষা, তোকে ঘিরে রয়।
বুক চিড়লে দেখবি তোকেই, স্বার্থপর নই।


আবেগে মোর হৃদয়খানা থরথর করে কাঁপে,
কাঁদবো ফিরে মা ছেলেতে বুকের মধ্যে চেপে।
যাসনা মা'রে ছেড়ে তুই, এইটুকু শুধু প্রার্থনা,
বড় আশায় ফিরছি ঘরে, নিরাশ তুই করিসনা।