দাদারে তোর, আমায় মনে পড়ে...
   বুঝি তুই ভুলেই গেছিস মোরে!
তোর আঙুল শক্ত করে ধরে
   ছুটতাম সেই রেল লাইনের ধারে,
দেখতাম সেই অবাক হওয়া চোখে...
   আকাশ পাড়ে  রামধনু রং মেখে।
আকাশের ঐ নীবিড় ঘন নীল,
   উড়ে যাওয়া কতো সোনালী চিল!


দাদারে তুই নিতিস কাঁধের পরে,
   ফুটতো কাঁটা যখন পায়ের পরে
ধরতে যেতাম নীল আকাশের শেষ,
   সবুজ মনে ঢেউ উঠতো বেশ ।
চিবিয়ে নিতাম শুনতাম না মানা,
   সবুজ ধানের কচিকচি  সোনা...
কালবৈশাখীর দুর্বার সেই ঝড়ে,
   কুড়িয়ে আম দিতিস আঁচল ভরে।


এক্কা দোক্কা খেলতে গিয়ে মাঠে,
   মায়ের লাঠি নিতিস নিজের পিঠে।
তোর পিঠে লুকিয়ে ঘরে যেতাম
   জড়িয়ে গলা ভয়ে ভীত হতাম,
দাদারে ঐ দূর আকাশের শেষে,
   তারা গুনতাম দুজন রাতে বসে।
উড়িয়ে দিতাম সবুজ ফরিং ধরে,
   আকাশের ঐ দূর নীলের ঘরে।


পড়ছে মনে যাত্রা দেখতে গিয়ে,
   কাঁদছিলাম সেই রাক্ষসেরই ভয়ে
তুই বললি  দুর বোকা মেয়ে,
   এযে মানুষ নেবেনা তোকে খেয়ে
তারপর তোর ছোট্ট কোলে বসে,
   লুটোপুটি খেতাম আমি হেসে।
ঘুমিয়ে যেতাম মায়ের কোল ভেবে
   গভীর ঘুম আসতো যখন নেমে।


জোনাকির সেই সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালা,
   আমি গাঁথতাম বকুল ফুলের মালা,
টুকরো টুকরো হাজার মোদের কথা,
   স্মৃতির মালা জানায় দিয়ে ব্যথা।
তোরা আমায় বিয়ে দিলি যবে,
   তখন আমার   বছর বারো হবে
পাঠিয়ে দিলি কোন সুদূর পারে,
   তোর কথাযে শধুই মনে পড়ে।


আজকে আমি ঠিক বিশের কোঠায়,
   সংসার কাজ শুধু আঁধার চাকায়,
বিয়ে দিলি রাজার মতো ঘরে,
   কি হবেযে টাকার পাহাড় নিয়ে।
দিতিস বিয়ে মোদের মতো ঘরে,
   চাষার ঘরেও রাজা মনের পরে।
রয়না মন পাথর অট্টালিায়
   হীরে সোনা মুক্ত পরে গায়।


মাটির মানুষ মাটি মোর প্রাণ,
   ফুল আলপনা, জীবন পথের গান...
দাদারে আমি চাই নীল আকাশ!
   চাইযে প্রাণ দখিন খোলা বাতাস!
তোর ঘরের সজীবতার ঘ্রান!
   ছাদের আলোর আধখানা সেই প্রাণ!
কত দিনযে সূর্য আলো মাখিনি !
   কত কাল আকাশটা আমি দেখিনি...