পতাকা নেবেন মা পতাকা?
কে যেন ডাকে মোরে,
বলি কে বাছা তুই?
যেন স্বর্গভ্রষ্ট দেব শিশু!
অর্ধনগ্ন দেহ, হাতে ধরা
একগোছা তেরঙা পতাকা।
খুব মানিয়ে ছিল তাকে,
যেখান হতে ফিরছি, সেখানেও
পতাকা দেখলাম।
লোভী শেয়াল শকুনদের হাতে,
তাদের মধ্যে কেউ সমাজ বিরোধী,
কেউ লোভী জনতার প্রতিনিধি।


বললাম আমাকে একটা পতাকা দিবি?
বললো দাও দু’টাকা,
দিলাম চার টাকা।
বললো তাহলে দুটো নাও,
বললাম নারে আমার একটা দরকার,
বললো তাহলে চার টাকা কেন?
আমাকে দুটাকা দাও,
বললাম, মনে করনা
পতাকাটার দাম চার,
ছেলেটি বললো তাহলে
তোমাকে আমি বিক্রী করবোনা,
আমি ন্যায্য মূল্য নিই।


তাকে দেখে মনে পরলো ক্ষুদিরামকে
বললাম তোর নাম কি সূর্য সন্তান ক্ষুদিরাম?
ও অবাক হয়ে বললো না যতীন,
মনে বললাম ঠিক কাছাকাছি ধরেছি,
ওর কাছে ওর হাতের মুঠোর
সব পতাকা চাইলাম,
জানতে চাইলো  কি করবো এতো,
বললাম ঘরে টাঙাবো,  
বললো, তোমার ঘর বুঝি অনেক বড়,
বললাম নারে, তোর মনের মতো ওত বড়
আমাদের কারোর কিছুই নেই।
তারপর চললাম পথে,
হাতের মুঠোয় ধরা সেই পতাকাগুলো,
মনের মধ্যে শিশুটির কথা প্রতিধ্বনিত করছিল,
ন্যায্য অধিকার চায়, ও এক পয়সা বেশি নেবেনা,
ওরা যদি ন্যায্য অধিকার পেত তাহলে…


আজকে ওর মুখটা বারবার চোখে ভাসছে
আজকে বুঝি শিশুটি স্বাধীনতার মুখ,
স্বাধীনতা যেন শিশুটির মতো অর্ধনগ্ন।
বাদল বিনয় দীনেশের পাশে তাকে মানিয়ে যায়,
খুব মানায় ওকে নেতাজীকে ছুঁবার স্পর্ধা,
ওরাই যেন চলতি হাওয়া, বহমান নদী!
মনে হলো  এপৃথিবীতে বাকি সব জড়!
আর মরুভূমির উদ্যান ঐ শিশুটি!
মনে হলো, যে হাতে এখন খেলনা মানায়,
আদর,স্নেহ মানায়, বই মানায়
কিন্তু ওদের অধিকারগুলো
চুরি হয়েছে কালো রাতে!


শেয়াল শকুন গুলো তাদের
সবকিছু চুরি করেছে!
তাদের বাঁচার অধিকার...
তাদের খাবার, তাদের খেলনা
ছোট্ট ছোট্ট কচি ওই হাতগুলোতে বই নয়
খেলনা নয়!
শুধু বাঁচার জন্য সংগ্রামের হাতিয়ার!
আর কাঁধে পতাকা, স্বাধীনতার মুমুর্ষু শরীর।।