অতসী বাড়িতে আছো...


অতসী ছুটে গিয়ে ব্যালকনির জানালাটা খুলে বলে
ও… তুমি…


পরিচিত যুবক অনেক দিন ধরে
এ বাড়িতে আসা যাওয়া।
পাড়ার  লোকেরা জানতো সে অতসীর ছেলেবেলার সাথী।


বন্ধুটি  হেসে বলতো আমি ছাড়া কে ডাকবে এত জোরে!
অতসী প্রাণ খুলে হাসতো  মনে হতো
বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।


অতসী এসে কখনো কখনো ব্যালকনি জানালা দিয়েই প্রয়োজনীয় কথা  সেরে নিত,
বরের সাথে ঝামেলা হলেও বন্ধুটি মধ্যস্থতা করতো।
এখানে  বন্ধুটি ছিল অতসীর বরেরও ঘনিষ্ঠ।
অতসীর বর রাগ করে বলতো
তোর কাছে কে আগে, আমি না অতসী?


এরকম হাজার কথা আজ অতসীর মনে দোল খাচ্ছিল...
সারা দিনের ব্যস্ত অতসী আজ সারা দিন চুপ,
চোখের উদাস দৃষ্টি ব্যলকনি পেড়িয়ে কোন নিলীমায় পৌঁছে গিয়ে খুঁজছিল
হারানো দিনের স্মৃতি!
বুকের গভীরেও  হাজার অশান্ত ঢেউ!


অতসী ভাবতে পারছিলনা তার এ বন্ধুটিকে
এভাবে হারাতে হবে চিরকালের মতো, এত তাড়াতাড়ি।
তার মৃত্যু খবরে অতসী বিচলিত মন শান্ত করতে পারছিলনা,
চলে গেছে তার বড় আপনজন।
রাত নিঝুম পৌষের ভাঙা চাঁদের নীচে সে দাঁড়িয়ে,
কনকনে উদাসী বাতাসের কামড়
যতই বাড়ুকনা কেন, তাকে ছুঁতে পাড়েনি !
মনের আগুন সেঁকে দিচ্ছিল তাকে...
চোখের সামনে ভাসছে বন্ধুটির নিথর চোখদুটো।
সে কখন এসে আর বলবেনা,
অতসী বাড়িতে আছো…


তার জন্য ওপরের পথ এত তাড়াতাড়ি খুলে গেল…
অতসী সারাদিন ভেবে যাচ্ছে কেবল ভেবেই গেল
পরের দিন সব স্বাভাবিক হলেও
ফাঁকা জায়গা পূরণ করেছে হতাশা!
ফ্রক পড়া অতসীর আজ চুলে পাক,
মাঝখানে এতগুলো বছরের সুখ দুঃখর কথা বন্ধুটির সাথে
জমা হয়ে থাক কালের কৌটায়।
কোনো ঝড়ের রাত কিংবা উদাস ক্লান্ত দুপুরে মনে পড়ে যাবে তার কথা
মনে পড়বে
আন্তরিক সেই ডাক… অতসী….