বাঁ দিকে ঘাড়ের ব্যথাটা বড্ড বেড়েছিল,
তবুও তোকে তুলে যখন ছুঁড়তাম উপরে,
তোর হাসির দমকটা মলম হয়ে ছুঁয়ে যেত অবাধ্য ব্যথার প্রতি কোণে...
আয়নায় মুখ দেখলে,দেখতে পেতাম তোর ছোট্ট ছোট্ট নোখের আঁচড়
আমার গোটা মুখটার চারধারে ছড়ানো…
তবুও কত সুখ সেই আঁচড়ে!
রাতের পর রাত, তোর অসুস্থতায় তোর মাথার কাছে বসতাম,
তারপর তুই সেরে উঠলে, আমার সুখের বাঁধ ভাঙতো...
তোর স্কুল ফিরতে দেরী হলে অজানা আশঙ্কায়
আমি পঞ্চাশবার ব্যালকুনি আর ঘর করতাম! কারণ আমিযে তোর মা।
তোকে দেখেই আমার সুখ…
তোর ভালো থাকাতেই আমার সুখ।


আজ তোর জন্য আর অপেক্ষা করিনা!
শুধু কোনো লুকানোর জায়গা পেলে,
তোর ফটো বুকে নিয়ে,অনেক জমানো কথায়,
জমানো ব্যথায় ভাসতে থাকি!
সেই তুই যখন চলে গেলি,আমার দিকে ফিরে না তাকিয়ে,
আমার অসহায় মুখটাকে না দেখে, আমার খুব অভিমান হতো,
বলতাম... আমি তোর কথা আর ভাববোনা।
কিন্তু প্রতিটি ঘণ্টা, আমাকে মনে করাতো, তোর রোজ কার রুটিন…
তোর চুল বাঁধা,তোর মনের মতো রান্না,তোর ড্রেস,তোর স্টাডি...
কি করবো বল।আমিযে তোর মা…
একটা সুন্দর বাক্সে... তোর শেষের দিন পরা জামাটা তুলে রেখেছি।
তাতে তোর গায়ের ঘাম আজও লেগে আছে,
জামাটা বুঝি আজ ঘামের সাথে নোনা জলে ভেজা,
সেটা আমি ভিজিয়ে রাখবো যতদিন আমার প্রাণ থাকবে!
আজ ওই টুকু সুখ অবশিষ্ট,এটা তুই আর ছিনিয়ে নিতে পারবিনা...
তুই কখনো বলতে পারবিনা, তোর মা তোকে ভুলেছে…
তোকে মিস করি প্রতি পল...
পৃথিবী যখন শুয়ে যাবে,
তোর মা তখনও জেগে থাকবে তোর অপেক্ষায়…
আজ তোর জন্মদিন বেঁচে থাকলে অঠারহতে পা দিতিস…
আজ একটা কাক কখন থেকে মা মা…করে আমার আনমনা মনে ব্যাঘাত করছিল,
জানিনা কে…
আমার সুখকে আমি তোর সাথে জ্বালিয়ে দিয়েছি…
নতুন কোনো সুখ আর আমাকে স্পর্শ করেনা…


দরজায় কলিং বেলের শব্দ,একরাশ উৎকণ্ঠা...
দেখি বর্তমান এসে দাঁড়িয়ে।
যেকটা দিন বাকি
তাকে অস্বীকার করি কি করে...