আজও ফ্যানটা থেমে আছে,
সেদিনও থেমেছিলো।
আমিই থামিয়েছিলাম,
ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠেই,
বিদ্যুৎ বাঁচাতে?
না না;
বিদ্যুৎ বাঁচাতে নয়,
নিজেকে বাঁচাতে।
মরে গিয়েও বাঁচা যায় তা
সেদিনই তো জানলাম।


চার-পাখার সাদা ফ্যানটা
আজও ঘুরছে না,
সেদিনের মতোই।
পার্থক্য একটাই।
ঝুলন্ত কোন ভার আজ নেই এতে,
মণ দেড়মণের কোন নারী দেহ,
সহস্র মণ ভারী বিষন্ন কোন মন
ওতে ঝুলে নেই আজ।


সাধারণ ফ্যানেও যে আকর্ষণ থাকে
সেটা ফ্যান ও আমি সেদিনই জেনেছি।
মহল্লার লোক বাড়িটা মাথায় তোলেছে
ফ্যানটা দেখবে বলে!
হয়তোবা সরল দোলকের মতো,
দেয়াল ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো
ঝুলন্ত নিথর দেহটাও একটা বড্ড
দর্শনীয় বস্তু হয়েছিলো তখন!


গরম লাগলে পাখাটা ছাড়ো তো?
পাখার দিকে তাকালে মনে পড়ে না?
মনে হয় না,
পাখার সাথে ভারী কিছু ঝুলছে,
ঘুরছে?
কেন্দ্রাভিমুখী একটা বল ছুটে এসে
আঘাত করতে চাইছে তোমায়?
ফ্যান চালুর কিছুক্ষণ পর দৈব ভাবে
বার বার বন্ধ-চালু হলে ভয় হয়?


ভয়ের কিছু নেই,
মাথাটা বেশি ঘুরালে বন্ধ করে দিই।
মৃতেরও গা গুলোয়, বমি আসে,
মাথায় ঘুরায়।
তুমি তো ইঞ্জিনিয়ার,
ও তুমি বুঝবে না।
আমি তো ডাক্তার তাই বুঝি;
শুধু এই যা,
কতো রুগীকে বাঁচাতে পারলেও
নিজেকে বাঁচাতে পারলাম না।
শেষ মূহুর্তে বাঁচতে চেয়েছিলাম জানো?
নিজের জন্য,
বাচ্চাটার জন্য খুব বাঁচতে চাইছিলাম
কিন্তু,
ততক্ষণে প্রাণ চলে গেল শরীরের বাইরে!


গরম লাগছে না?
আমাদের জানলার সোজা জানলায়
দাড়ানো কবির ভীষণ গরম লাগছে,
ফ্যানটা ছাড়ো।
কবি আমাদের ফ্যানের বাতাস অনুভব করে,
যেমনটা আজও অনুভব করে আমার হৃদয়।


১৬/০৯/২০২০.