এক হাতে ফুল আর অন্য হাতে আমার ভরা কোল
আমার ছোট্ট মেয়ে মাথা হেলিয়ে খুব খাচ্ছে দোল।
আমার উৎসাহী চোখ দেখছে দূরে ঐ শহীদ মিনার,
কতো ভালোবাসা তাতে আর কতো ফুলের বাহার!
আর মেয়ে আমার চাইছে জানতে খুলে মনের দ্বার
"বাবা!! রাস্তায় কেন গাইছো গান?
আছে কি কেউ রেগে? তুমি কার ভাঙাইছো মান?"
শুনে আমি হাসি।
"শুন মেয়ে, অনেক আগে এইখানে ছিল মস্ত রাক্ষস
চেয়েছিল কেড়ে সবার মুখের ভাষা, ভাষায় দেবে ফাঁসি।"
"বাবা!! রাক্ষস টা তো খুব পাঁজি?
তুমি দাওনি কি তারে বকে? আরো দিতে দুটো কান মলে?"
"দিয়েছিলো তো, এই রাস্তায় রাক্ষসে করে পরাজিত
ছিনিয়ে এনেছিল যে ভাইয়েরা বিজয় রক্ত লালে?
তাঁরা ঘুমিয়ে আছে ঐ শহীদ মিনার এখনো এই সকালে!
তাঁদের স্মরনে তাইতো এই গান সবার মুখ আর বুকে।"


শুনে মেয়ে চমকে উঠে!
"বাবা, তাহলে আমিও হেঁটে তোমার মতো গাইবো গান
আমিও যাবো ভাষা স্মৃতির শহীদ মিনার
বলবো কথা ভাইয়েদের সাথে
আমার মতো উঠেনি কেন আজ তাঁরা এই সকালে?
কেন আছে এখনো ঘুমিয়ে! করেছে কি অভিমান?"


বাবা মেয়ে ফেলছি চরণ যাচ্ছি ধীরে এগিয়ে,
"হি হি হি....
কি ভূলো মন তোমার বাবা! জুতা পরনি পায়ে।"
বললাম, "এই প্রভাতে হাঁটতে হয় খালি পায়
যে পথ ভাইয়েদের লাল রক্তে হয়েছে লাল
সেই একুশে জুতো পায়ে কেউ হাঁটে? মানায়?"
"বাবা, একুশ কি?"
"একুশ হলো তোমার কবিতার বই ফুল পাখালি,
আর মায়ের মুখে তোমার শেখা মিষ্টি মিষ্টি বুলি।"
১৯/০২/২০২২
ময়মনসিংহ।