সেদিন পাহাড়ের সাথে কথা হলো আমার।
দূর থেকে দেখেই ইশারায় কাছে ডাকলো,
কাছে যেতেই হেসে বললো, "কি ব্যাপার হে কবি!
এতো পথ পারি দিয়ে আসলে আমার কাছে,
তুলবে নাকি ছবি?"
আমি বললাম, "ভালোবাসি বলেই তো দেখতে আসা।"
পাহাড় বললো, "তাই বলে এতদূর, এ তো ম্যালা!"
আমি মনে মনে ভাবলাম লও ঠ্যালা,
ভালবাসি তাও দিতে হবে কৈফিয়ত, এতো ভীষণ জ্বালা।
মুখে শুধু বললাম, "তোমাকে বুঝি কেউ ভালোবাসে না!
নাকি আমাতে আস্থা নেই তোমার তেমন একটা?
ভাবছো,ভালবাসলে অল্পতেই হারিয়ে ফেলবো খেই!
জেনে রাখো, আমি পালাবার পাত্রও তেমন নই।
তোমার গায়ে হাজারো বৃক্ষ যেমন থাকে এঁটে,
আমি তেমনি তোমাকে আমার বুকেতে রাখবো সেঁটে।"
পাহাড় একগাল হেসে বলল,"বৃক্ষ আমায় ভালোবাসে না,
ভালোবাসে আমার দেহের নরম গন্ধ শোঁকা মাটি,
আমি ওর আপন হলেও, ওর ভালোবাসা তেমন নয় খাঁটি।"
তারপর অনেকক্ষণ আর কথা হয়নি,
আমি পাহাড়ের পূর্ব থেকে পশ্চিম উত্তর থেকে দক্ষিণ
উপর থেকে নীচ হাত বুলিয়ে করলাম প্রদক্ষিন।
পাহাড় তার নির্মল বাতাস আর সূর্যাস্তের লালআভায় মন ভরিয়ে আপ্যায়ন সাড়লো।
আমি যতোটুকু পারি স্বার্থপরের মতো বুকে ভরে
খানিকটা তার মগজে লুকালাম।
সন্ধে হতেই আবার যখন ফিরবো বলে বাড়ালাম পা,
পিছন থেকে বন্ধু ডেকে বললো,
"এই বুঝি তোমার ভালোবাসা! যাচ্ছো তাই একা?"
আমি বিষন্নের হাসি হেসে বললাম,
"সব ভালোবাসা বুঝি চলে গেলেই শেষ হয়!
কিছুই বাকী থাকে না?
ফিরবো বলেই তো যাচ্ছি, পিছু ডাকতে হবে না। "
১২/০১/২০২১