হাইঞ্জা বেলা কুপি বাত্তি জ্বালাইয়া রইছি বইয়া,
কোনসুম আইবো বাজান!
গঞ্জে গেছইন হেই দুহুর বেলা, হাতত ব্যাগ লইয়া
আর মাতাত ছালা বইরা আডাইস ধান।
কইছিলাইন ধান বেইচ্চা আইব তারাতাড়ি
ফিরার সময় আনব আমার লাইগ্যা একগোছা চুড়ি
আর পরনের লাল একখান পিরান।
মায়েরা জিগাইছিলাইন কোনতা লাগবো কিনা,
মায়ে শরমে মুখ লুকাইয়া খালি হাসছইন,
কোনোতা কইছইন না।
কুন্তু আমি জানি বাজান মার লাইগ্গা ঠিহই কুছতা আনবো,
আর রাইতের বেলা লুহাইয়া মায়েরে দিবো।
আইজ বাজানের ওত্তো দেরি অইতাছে ক্যারে!
কুনোদিন তো এত্তো রাইত হয়না!
যাই জিগাইগা মায়েরে।
মায়ে হুইন্না হাইস্সা কইলো,
"দেহো ছেরির কতা, দেরি অইবো ক্যারে,
নয়া পিরানের লাইগ্গা দেহি ছেরির তর সয়না।"
মায় হাইন্জার আগেই চ্যাপা হুটকির বর্তা
আর কচুর মুহি দিয়া ছুডু মাছ রাইন্দা রাখছইন,
বাজান আইলেই আমরা খাইয়ালবাম এইডাই কতা।
কতোক্ষন পরে চাইয়া দেহি মায় আছে ঝিমায়া
বাত্তির তেল শেষ ওইলো বইলা দিলাম কমাইয়া।
বাজান যহন গঞ্জেত্তে আইলো তহন দুহুর রাইত,
মুখটা পাইনসা হাতটা খালি,
ধান বেইচ্চা পিরান কিনার সময় পহডো হাত দিয়া দেহইন পহড খালি।
হারা বাজার খুইজ্জাও টেহা আর না পাইলান,
আর মনটা চাইলো না লইতাম ভাতর থালি।
আমি কানবাম দেইক্কা বাজান মাতাত হাত দিয়া কইলাইন,
"আগামী হপ্তাহ পিরান কিন্যা দিমু আমার মায়েরে।"
আমি বাজানরে জড়ায়া মনেমনে কানলাম।
আসমানের দিহে তাকায়া আল্লারে কইলাম,
"তুমি বাজানের লগে এমন করো ক্যারে?"
০৮/০১/২০২১
(বৃহত্তর ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায় রচিত)