খেয়া ঘাটে আজ
বারো বছর পর দেখা কৃষ্ণকলির সাথে,
দেখতেই একটা হাসি খেলে গেলো ঠোঁটের কোনে
অথচ তার-ও সংসার হয়েছে আমারও আছে স্ত্রী,
তবুও কোথায় যেনো কিছু একটা রয়ে গেছে এতো দিনেও।
আমাকে দেখতে পেয়ে সেও হাসলো মৃদু
সামনে এগিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "কেমন আছো তুমি?"
উত্তর দিলো কিনা বুঝা গেলো না, হাসলে শুধু।
বুঝলাম, স্থান আর সময়টা বদলে গেলেও
হাসির রংটা বদলায়নি।
কিছুক্ষণ পর আমার দিকে তাকিয়ে কেবল বললে,
"সাদা শার্টটায় রং লাগালে!"
আমি হাসলাম,
মনে মনে বললাম, এ আর এমন কি কৃষ্ণকলি!
ধুঁয়ে দিলেই চলে যাবে। কিন্তু মনের রং!
বারো বছরেও তো মুছে যায়নি, ফিকেও হয়নি
কেবল ঘুমিয়ে ছিলো আরেকটা উজ্জ্বল নক্ষত্রের আড়ালে।
কিছুদূর এগিয়েই দেখলাম দাঁড়িয়ে তাঁর পরের যাত্রার রথ
বিদায় নিয়ে বললাম, "এবার আসি। চিনে যেতে পারবে তো?"
বুঝলাম, প্রশ্নটা অনর্থক,
বারো বছর যে পথ চলতে চলতে পথচ্যুত হয়নি,
তাঁকে চেনাচ্ছি পথ!
গোধূলির আলোয় তাঁর অভিব্যক্তি না দেখতে পেলেও
বুঝেছিলাম আমায় বাসায় ফিরতে হবে জলদি
রংটা মুছতে হবে।


১৯/০৪/২০২২
চট্টগ্রাম।


(তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের "হাঁসুলি বাকের উপকথা" উপন্যাস পড়ে "রং" ও "বারো বছর" শব্দ গুলো মনে ধরেছিল। সেই অণুপ্রেরণাতেই লেখা এই কবিতা।)