ফেব্রুয়ারী এলেই সবারই দেখি ভাষা প্রীতি
কালো ব্যাচ আর ফুলের তোড়ায় ভীষণ রেসপেক্ট,
সারা বছর সাইলেন্ট থাকা মনের হঠাৎ জেগে উঠে  কমনসেন্স,
যেনো বাধভাঙ্গা ভালোবাসার এত্তো এত্তো এফেক্ট।
বাংলা বাংলা বলে যারা দিলো প্রান,
তাদের জন্যে হলেও এটলিষ্ট বুঝাতো উচিত
বাংলা ভাষা হলো মাদার টাঙ।
বুঝিনা কথায় কথায় কেন এতো এলার্জি ইগো
ভাষার কথা শোনলেই নাক সিঁটকাও বলো, "গো গো"।


আবার দেখি জন্মের আগেই শিশুর রাখো ফরেন নাম,
নেগলেট খালি করো বাংলা ভাষা!
বাংলায় তো আছে রফিক জব্বার বরকত কালাম।
আর ভাষা শিখবেই বা কি করে তোমার সান?
ওর তো সকালটাই শুরু হয় গুড মর্নিং আর ডান।
পাঠাও ইংরেজি স্কুলে শিখাতে বাংলা মাধ্যম
ফিউচারটা গড়ে দিয়ে বিদেশে ভাবো এটাই উত্তম।
এজজাষ্টমেন্টটাতো করার একটু দিয়ো সময় অল্পতেই হয়োনা ক্লান্ত,
মনে আছে তো, নিজের রুট ভূলে মাইকেলও হয়েছিল বিভ্রান্ত?
সবকটা বাড়ি গাড়ি দোকানের নামফলকে কেন লেখ
হাউস কার আর নেইম-প্লেট?
আদিখ্যেতা দেখে ধরে জ্বালা
বাঙালির ঘরে খেতে বসেও শোনতে হয় রাইচ কাকলেট।
যেনো বাঙালি বাংলা শিখে নি,
অথচ ওয়াল্ডে আমাদেরই আছে ভাষার আত্ম কাহিনি।
বাঙালি হয়েও কথায় বার্তায় পোশাকে দেখাও ভাব
যেনো ফরেন ডেলিগেট,
বাংলা কবিতা বাংলা গান শুনে ভরে না মন
তাইতো খোঁজ হিন্দি মারাঠি অভিযানে চালাও নেট।


আচ্ছা, ফেব্রুয়ারী এলেই ভাষা নিয়ে যে হয় টকশো,
ক'জন তাতে বাংলায় থাকে অনার্স মাষ্টার্স?
তাহলে তাদের নিয়ে কেন হবে কাঁদা ছুড়াছুঁড়ি
আবার পর্দায় দেখি "শাটআপ"!
তারই মুখে শুনি ভাষা নিয়ে মিষ্টি বুলি।
ভাষা নিয়ে কটা হয় গবেষণা হয় রিসার্চ!
চুরি বিদ্যায় সবাই তো করে কাট কপি পেষ্ট।
ফেব্রুয়ারীর একুশ শুধু মুখে নয় থাকুক বুকে।
ভাষা শহীদের রক্ত থাকুক চেতনায় বছর জুড়ে
যেন লোক দেখানো না হয় চোখের বর্ষা।
ঘরে বাইরে খাঁটি বাংলায় বলতে হবে কথা,
মাতৃভাষা বাংলাটা শিখে তবেই চালাতে হবে বিদেশি ভাষায় চর্চা।


(বাংলা বাংলা চিৎকার করতে করতে আমার প্রতিটা বাক্যেও ঢুকে গেছে বিদেশি শব্দ। তাতে একদিন হয়তো আমরাই হবো জব্দ।)