যুদ্ধের পর-
কালো মেঘের আড়াল থেকে উঁকি মারে নামহীন নির্মেদ রবিকর;
ইতস্তত ছড়িয়ে রয়েছে চেনা-অচেনা মৃতদেহের স্তুপ
কিছু লোভী শকুনের দল অদূরেই অপেক্ষায় নিশ্চুপ,
আছে কিছু উড়ে আসা ছাই, আছে কিছু পুড়ে যাওয়া ঘাস-
ঘন কুয়াশার কুণ্ডলীতে মুখ লুকিয়ে আছে বারুদের চেনা প্রতিভাস।


এখানে ক্লান্তির শব্দ, শ্মশানে-শান্তির শব্দ মিলে মিশে একাকার
তবু কে যেন প্রতিবার
ছুঁচালো মানদন্ড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে যাচাই করে নেয় মৃতদেহ গুলো,
উড়ন্ত চিল ডানা ঝাপটায়; পড়ন্ত গোধুলীর ধুলো
উড়িয়ে চলে যায় যুদ্ধের ট্যাঙ্ক আর সবুজ গাড়ি,
নিথর দেহ থেকে মুন্ডুগুলো কেটে নিয়ে যায় বিষাক্ত নীল তরবারি।


সূর্য বসে পাটে, সন্ধ্যাকালে
চুনকালি মাখিয়ে সভ্যতার অসভ্য গালে
কারা যেন এবড়ো খেবড়ো পায়ে
প্রতিটি অর্ধভুক্ত লাশ হাতড়ে বাকী যা ছিল সবকিছু নিয়ে চলে যায়,
পড়ে থাকে উড়ে আসা ছাই, পড়ে থাকে পুড়ে যাওয়া ঘাস-
পড়ে থাকে পরিত্যক্ত দেহ, আর কিছু আকুল দীর্ঘশ্বাস...


অবশেষে রাত্রি নামে, ঘামের গন্ধ ততক্ষণে হারিয়েছে অন্ধকার
তবু কে যেন প্রতিবার
উবু হয়ে বসে বিমূঢ় দেহগুলোর গায়ে ছিটিয়ে দেয় শান্তির জল
আহত-নিহতের সংখ্যাগুলো হিসেবের খাতায় লিখে রাখে অবিকল,
অক্ষর হারিয়ে গেছে; নাম? সে তো সভ্যতার পরিচয়-
সভ্যতা হারিয়েছে পরাকাষ্ঠা; তাই আবারো সকাল হয়....