কয়েকশ বছর শেষ হতে না হতেই,সব কিছু উধাও।
ভাঙা বাস,ট্রেন ট্রামে ধুলো জমে,মাকড়সা জাল বোনে ,
হয়তো এমনই হওয়ার ছিল কয়েকশ বছর পর ।
শহরের ভাঙা অট্টালিকার প্রতিটি অন্ধকারে কত রাত
কত গল্প , কত কাহিনী লুকিয়ে আছে, কয়েকশ বছর আগের
কত মানুষের স্মৃতি এই শহরের অলিতে গলিতে ছড়িয়ে আছে ।


দেওয়ালে কান পাতলে আজ শোনা যাবে না...
কোনো বাড়িতে মা তার দুরন্ত ছেলেকে ডাকছে
কোনো বাড়িতে খুশির আমেজে অনুষ্ঠানের তোড়জোড় চলছে
কোনো বাড়ির ছাদে প্রেমিক প্রেমিকা গোপন আলাপ
বিকেলের শেষ সূর্যের মিঠে আলোয় শেষ চুম্বন ।
কোনো রাতের অন্ধকার গলিতে কয়েকশ খুন
চাপা পড়া ধুলোর নীচে আজও হয়তো রক্তের দাগ লেগে আছে
কোথাও ধর্ষণের বুক ফাটা চিৎকার,ছেড়া কাপড়ে দলা পাকা ভয়
কোনো দরজার ওপাশে চুপিসারে দাবার শেষ চাল
কোথাও রাতের অন্ধকারে যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে
বাতাসে বারুদ গন্ধ ! ভারী বুটের আওয়াজে গমগম শহর
দূরে কোনো বস্তি তে আগুন লাগে,চারিদিকে চিৎকার
শহরের আনাচে কানাচে সশস্ত্র সেনাবাহিনী
কোথাও বোমার আঘাতে ভেঙে পড়ে অট্টালিকা
কোথাও বুলেটের আঘাতে বুকের এফোঁড় অফোঁড়
ঘর পোড়ে দেহ পোড়ে গোঙানির শব্দ মাথা ঠোকে দেয়ালে দেয়ালে ।
একসময় সব ঠান্ডা হয়ে যায়, যতটা ঠাণ্ডা হলে মানুষ লাশ হয়ে যায়
ঠিক ততটাই ঠান্ডা হয় শহর টা,চুপচাপ লাশ ডিঙিয়ে কয়েকশ বছর যায় কেটে
আজ ধুলো সরিয়ে দেখলে হয়তো শহরের কঙ্কাল দেখা যাবে ।


আজ কয়েকশ বছর পরে এখানে ওখানে কংক্রিট চিৎ হয়ে শুয়ে আছে
কোনো মানুষ আজ নেই এই ভাঙা চোরা খেলনা পৃথিবীতে
এখানে ওখানে বালির মাঝে ছোট ছোট বাবলা গাছ
যেন আমৃত্যু প্রহরীর মতো সারাদিন সারারাত জাগে
ইঁট কড়িকাঠ মুখ বের করে হাঁসফাঁস করে বাঁচার রসদ খোঁজে
শেষ হওয়ারই ছিল একদিন, আজ ধ্বংসস্তূপ এর পাহাড়
এক ফোঁটা বাঁচার জন্য মারা গেল কয়েকশ বছর আগে ।