এক হাতে খাতা-কলম আর হাতে বকুল-মালা
তুষার ক্লিষ্ট অথবা বৈশাখী ঘামে ভিজে
নীরবে দ’লে যায় জল-কাদা অথবা গরম ধূলা
আঁধারের পথে চেতনায় ঢালে জোছনার আলো নিজে।
সকল বেদনায় পাশে এসে দাঁড়ায় আনন্দ গান গেয়ে-
কত যুগ থেকে, দেখে আসছি তাকে-ব্রতচারী একাকী মেয়ে!


রেললাইনের ধারে ছিন্নমূল ইস্কুলে,
পণ-প্রথার প্রতিবাদে প্রতি জনপদে তাকে দেখেছি
শিশু পল্লীতে দেখেছি কান্নারত উলঙ্গ শিশুটি কোলে
মানব প্রেমের দুধে ভরা তার বুক- কথাটি ভাল জেনেছি!
চলে তার অবিকার সংগ্রাম নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে-
খাতা-কলম আর মালা খানি হাতে-ব্রতচারী একাকী মেয়ে!


খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে তার তবু দেয় কাঙালী ভোজ
একাকী খোলে ত্রাণের শিবির চরম সংকট দুর্দিনে-
সৃজনানন্দে নূতন সৃষ্টি ক’রে ক’রে রোজ রোজ-
সুখের দিনে না থাকলেও সে দুঃখের দিন নেয় ঠিকই চিনে।
দল-মত-দেশ, দেখে অনিমেষ সমান সমান চেয়ে-
জ্ঞানে আর ফুলে, দেয় প্রাণ খুলে - ব্রতচারী একাকী মেয়ে!


জন সভায় সকলকে শেখায়- মানব সেবার কথা
সুরে সুরে গায় মানবাত্মার নির্ভয় বিজয়-মুক্তি,
ভুল করেও সে নষ্ট করে না একটি মিনিট অযথা
সৃষ্টির সেবাই সর্বোত্তম: শেখায় শ্রেষ্ঠ উক্তি!
একদিন আমি জানতে চাইলাম: কে তুমি ব্রতচারী মেয়ে?
নীরব মুখে রাখলো সব ঢে’কে- অশ্রু ঝ’রলো দু’গাল বেয়ে!