তোমাকেই দেখতে যাবের কথা ছিল
ওই যে রাস্তার পাশেই বড় একটা খাল আছে,,
সেই খালটায় স্নান করে শুদ্ধ হয়ে,,,
তোমার বাড়ীতে যাবার কথা ছিল,,


আমি এই কথা রাখতেই আসছি
তবে কত দিন ধরে কলমী শাকের সাথে
শিং মাছের ঝোল খাইনা
তাও যে তোমাকে চাই জানাতে।
আমার পাথর শহরে এসব পাওয়া যায় না,,
হাসপাতাল যেখানে কোনায় কোনায়
নিচ্ছে জন্ম সেখানে কলমী,পুই,শিং
মারা যাবে,,,এটাইতো স্বাভাবিক,,!!


তবে আমি এই আমি
স্বাভাবিক হতে গিয়েও বার বার হচ্ছি অস্বাভাবিক!!
পাশের বাড়ি হতে পোলাও বিরানীর গন্ধ আসে
আসে কাটা চামচের গড়াগড়ি শব্দ!
আর আমি ল্যাপটপের সামনে বসে
গুগুলে চার্স দিয়ে থানকুচি পাতার দৃশ্য দেখি,,
বিশ্বাস করো ওই যে ছোটবেলায়
থানকুচি পাতার ভর্তা খাওয়াতে
ভাতের সাথে মাখিয়ে
এর স্বাদ এখনো জিহবা হতে তুলে নিতে পারেনি ভদ্রতা।
আহা কি যে স্বাদ ছিলো সেই কুমড়ো ফুলের ভরা,,
কত যে স্বাদ ছিল বারোয়ারি পাতার শাক,,
নাড়িকেলের ভরার কথা আর কি বলব,,,


কিন্তু আজকাল এসব মানেই,,,
ভদ্র লোকের অভদ্র আয়োজন,,
যা মাটি খুড়েও পাওয়া যায় না,,
পাওয়া যায় না বলেই দেখ না,,
বিড়াল গুলি শহরের হাড্ডি খেয়ে খেয়ে
কত হচ্ছে নাদুস নুদুস,,
ওদের কাছে চুরি করে মাছ খাওয়াটাও
এক কল্পকথা,,জ্ঞানীদের গবেষনা
আর ঠাকুরমার ঝুড়ির গল্প!!
আমারো কতকগুলি গল্প আছে
যেগুলি তোমার কাছে এসেই
হাতে নাতে শুনতে চাই,,,
না না দেখতে চাই,,চাই দেখতে।


তাই তো আইফেল টাওয়ার হতে ঝাপ দিয়েই
সোজাই নেমে গেলাম কাদা ভরা রাস্তায়,,৷
তুমি এবার আর আমাকে বকাঝকা করো না,,,
আমি যে আমার আগত সন্তানকে কথা দিয়েছি
কাদা ভরা পথে কীভাবে হাটতে হয়
তা আমি তাকে শিখাবই,,,
এই সময়ের চাকায় পিষ্ট জীবনের ডামাডোলে
গাড়ি ভরা পথে দূর্ঘটনাময় মৃত্যু ছাড়া
কাদা ভরা কাঠিন্যতা আর কোথায়,,?
মুষলধারের বৃষ্টিতে কচু পাতার ছাতায়
দেহ বাঁচানোর কৌশল,,, মস্তিস্কে আর কোথায়?


জীবনের গতি এখন ভিন্ন,, এখানে
অন্ধকার ভেদ করে আলোর
সন্ধানে যাওয়া জীবন আর কোথায়?
সব যে প্যাকট জাত খাবারের মতই,,,
এই দেখো কে জানি পাশে কোথাও
প্যাকেট খুলছে, মাইক্রোওভেনে ঢুকাচ্ছে
আর টপাটপ খেয়ে নিচ্ছে,,,কত খাবার!!
গাছ হতে কাঠাল পেরে সেই কাঠাল ভেঙ্গে
খাওয়ার শিক্ষাটা আর যে নেই,?
এখন শিক্ষা শুধু বাটন টিপার,,,
যে বাটন টিপলেই
ঝর্ণা কলমের গন্ধ আসছে ধেয়ে ওই পর্দায়,,
যে পর্দাটা বেশ্যাদের দেহের ঠিকানা
আবার সাধু হুজুরদের আড্ডাখানাও বটে।


আমি এই বাটনময় পর্দা হতে,,
একেবারেই ভিন্ন কিছু দিতে চাই
আমার ছায়ার নিচে জন্ম নেওয়া আরেকটা ছায়াকে।
আর তার জন্যেই
আবার আমি গাছে চড়ে নারিকেল খাব,,
আবার আমি ডুব দিয়ে মাছ ধরব,,
আবার আমি বোর ক্ষেতে ধান বুনব
আবার আমি মাছের মাথার মুড়িঘন্ট খাবো,,
আবার আমি পরিমান মত লবন দিয়ে
কাঁচা লঙ্কায় বাঘা তেঁতুল খাবো,,,
আবার আমি ঝড়ের দিনে আম কুড়াব
লাল ফড়িং্যের লেজে বেধে দিব লাল মন,,


কিন্তু তুমি,,,,, হ্যা তুমি কিন্তু  
আমার এই সব পাগলামি ভিডিও করে রাখবে,,,
সভ্যতার এই সূযোগের ভিডিও টা তুমিই করবে
তোমার চামড়া ভাজ হওয়া পুরুনো হাতে।
আর আমি এই ভিডিও টা
ঠিক সেই গাছের নিচে
মাটিতে পুতে রাখব,,, খুব সযতনে রাখব।
যে গাছের ডালে পাখি বাসা বেঁধে ডিম পারছে
আর নিত্যই তা দিচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য,,,
তাও খুব সযতনে ডিমের উপর বসে,,,।
খুবই জেনে শুনে,,,
একটি ডিমের উপর দেওয়া যায় কতটুকু চাপ
আবার কতটুকু তাপ,,,?