কি গো,,,আবার যদি আমি ফিরে আসি
ফিরে আসি শীতের পীপিলিকার গর্ত ছেড়ে
গ্রীষ্মের আঙ্গিনায় আলিঙ্গন বিলাসে
ফিরে আসি আমার জীবন ময়দানে
পাখির ডানায়,,, হরিণের পায়ে ভর করে
ফিরে আসি আমার উঠানে,,
স্বাধীন পতাকার স্বাধীন রঙ গায়ে মেখে,,
তাহলে পা কি আমার মিলে যাবে ঠিক আগের মত,,
আমারই পায়ের পুরাতন ছাপে ছাপে??
বল না,, আবার যদি আমি ফিরিতে চাই
পড়ার টেবিলে,,লাইব্রেরিতে,,,খেলার মাঠে
আমি কি সেথায় ফিরতে পারব?
ধুলা বালি, মাকড়সার জাল সরিয়ে
আবার,, আবার কি খোঁজে পাব আমার
সেদিনের বই,,আর বইয়ের পাশে জ্বলন্ত মোমবাতি?  


বল না ,,আমি যদি আবার
ঘর ছেড়ে সেই রাস্তাটার পাশে দাঁড়াই
সেখানকার মাটি আমাকে চিনতে পারবে?
রাস্তা,,সেও কি আমাকে দাঁড়াতে দিবে তার পাশে?
যদি রিক্সা করে  হাওয়া ধরে ধরে ঘুরতে চাই
শহরের পার্কের আশে পাশে,,  
শহর কি আমাকে মেনে নিবে তার পুরুনো অভ্যাসে?
আমার চোখের জল যদি মিশিয়ে দিতে চাই
পার্কের বুকের সবুজ ঘাসে জমা শিশিরের সাথে,,
শিশির কি বুঝতে পারবে,,,চোখের জলের
দুঃখের কথা,,,বিচ্ছেদের কথা ঠিক আগের মত?


কি জানি,,,হয়ত বুঝবে,, হয়ত বুঝবে না,,
তবে ফেরা যার একমাত্র গতি,,
তাকে শ্মশানপুরীও কি রুখতে পারে,,
মৃত্যুর চিহ্ন দিয়ে?
পারে না,,, গো,,,কভু পারে না,,
জীবনের চাকার কাঁছে,, আদর অনাদর,,
সবই যে সমান,,,সবই যে সমান।
সবক্ষেত্রেই যে তাকে চলতে হয়,,,ফিরতে হয়,,,
ঘুরতে হয়,,,সামনে এগিয়ে যেতে হয়,,,।
তাই আমি ফিরব,,আনন্দ করতে করতেই ফিরব,,
সদর ঘাটের লঞ্চের মাঝে বেধে দিব মন
বুড়িগঙ্গার সামান্য বিশুদ্ধ হওয়া দুষিত জলে
ডুবে ডুবে চলে যাবে,,, শহর ছেড়ে প্রান্তে।
আবার গাড়ির শব্দের মাঝে খোঁজে বেড়াব শহর,,
রাজনৈতিক মিছিল মিঠিংয়ের ভাষায় আবার দেব ডুব,,,
আবার হয়ত ফার্মগেট হতে
ধাক্কাধাক্কা করি বাস ধরব আরবের খেজুর তলার।
আবার বাটখারার ওজনে দিব কিঞ্চিত কমিয়ে
আবার কালো টাকার গদিতে বানাব শুভ্র রাজপ্রাসাদ
আবার প্রেম হবে জমিয়ে,,,
আবার অপ্রেমও আসবে তাড়িয়ে,!
কিন্তু সব , সবখানেকি খুঁজে পাব সেই আমাকে?
সোনার মাঝে কি সোনাই থাকবে?
অমৃতের মাঝে অমৃত,,,!
কসাই পাড়াটা কি কসাই পাড়াই থাকবে,,,অন্ধ বিশ্বাসে,,
ভাঙ্গা কংক্রিটের ফাঁকে জমা উঠা ঘাস গুলি তখনো
থাকবে সবুজ,,?
আমার মায়ের চোখের জল যাবে না তো শুকিয়ে?
বোনের হাতের মেহেদি রঙ থাকবেত রঙ হয়ে,,
ভাইয়ের কাছে ভাইয়ের আবদার,,
বলিষ্ট সন্তানের কাছে প্রৌঢ় পিতামাতার অসহায় চাহনি
বিন্দু মাত্র আদর পেয়ে
পারবে তো গলাতে,, মেঘ হতে জল,,
ঠিক কবেকার পৌরাণিক কাহিনীর মত?
কিছু ডাস্টবিন অন্দরে ময়লা রেখেও
বাইরে থাকবে ত পরিষ্কার?
কিছু নাকের নোলক,পায়ের শিকল,দাসত্বের লাঠি
যাবে তো হারিয়ে সময়ের অগ্নি লগনে?
নাকি তারাই রবে কেবল আগের মত বলীয়ান
সব শিয়াল একত্রে মিলে মিশে হবে পশুরাজ সিংহ,,
জং ধরা লোহার জং গলাগলি করে
হয়ে যাবে পাথরের চেয়েও পাথর,,,
নদীর পথ দখল নিয়ে নিবে নালার গতি?
ধর্ষণের বিশ্বাসে মাংসলোভী সমাজ
বুঝবে না ব্যবধান,,বালক কিবা বালিকায়,,
বুঝবে না তেতুল প্রিয় অসভ্য আস্তিক
ছয় বছরের শিশু,,যুবতী নয়,,,তবে ঈশ্বরী।
মেঝেতে পড়ে থাকা চিরন্তন ভুলগুলি
গাছের ডগায় ঝুলবেই,,, হয়ে ফুল,,,বাহারী ?


কি জানি গো,,,,জানি না।
তবে আমি ফিরে এসে,,
ঘরের ভেতর হতে তুলে নিব ঘরের গোপন মাটি
রাখব আকাশ ঘেরা উন্মুক্ত মাঠের পরে,,,
অতঃপর  সেই মাটিতে নিজ হাতে মিশিয়ে দিব
বুকের তরতাজা রক্তিম  রক্ত"!
জানি সেথায় জমাট বাঁধা কিছু
কালো রক্তও থাকবে,,,,আপন নিয়মে,,,
তবু বিশ্বাস কর আমি দেখব,,,আমি দেখব
অন্ধকার এই অসুর সময়ে
কোনটি এখনো নিখাদ,,, নিরেট,,,,সতেজ
ঠিক আগের মত,,


আমার ঘরের মাটি?
নাকি বুকের রক্ত?
রক্তিম রক্ত,,,নাকি কালো জমাট বাঁধা রক্ত?