অনেক কথাই তোকে বলব বলব বলে
আর বলা হয় না ইতি।
কত চিঠি দিলি অতীতের স্মৃতি হতে,,,
কিন্তু আমি নিরুত্তর!
আকাশের মেঘ হতে বৃষ্টি ঝরবে ঝরবে বলেও
আর যে ঝরলো  না,,,
তাই বলে কুসুম কি হবে না প্রস্ফুটিত?
পুকুরের ব্যাঙ ছাড়বে না আর গলা?
দেখ,দেখ,,,
পাশের বাড়ির উঠানে এর মাঝেই
পুঁথি নিয়ে বসে গেল কোন এক বৃদ্ধা।
আর তখনি মনে হল,,আজ তোকে বলেই ফেলি,,


জানিস আমি একটা ঘরের মাঝে আবদ্ধ আছি।
চারদিকে চারটা দেয়াল,,
মাথার উপরে একটা শক্ত মজবুত ছাদ,,
পায়ের নিচে লোহার কংক্রিট,,,
আর এর আয়তনেই আমার ছোট্ট একটা বিছানা
নানান রঙের নানান ফুলের বিছানা,,
কেউ বলে এটা নাকি ছোট্ট একটা স্বপ্ন,
ছোট্ট একটা  জীবন আর তার সাধনা।


ভাবছিস এমন সাধনায় সাধনায় কেমন করে
বেঁচে আছি সেই দূরন্ত হরিণী,, তাই না?
রান্না ঘরের ধোয়ায় চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়,,
দরজা জানালা দিয়ে বাইরের শব্দ উকি দেয়,,
সত্যি এর মাঝে মাছিরও বেঁচে থাকা খুব কঠিন,,,!
কিন্তু আমি,,,হা হা হা!!!আমি বেঁচে আছি!


শুন শুন অবাক হয়ে যাবি,,
আমার এই ঘরে একুরিয়ামের মাঝেই
মাছ গুলিও বেশ সাঁতার কাটে,,,
কত সুন্দর এক নিরাপদ সাগরের সন্ধান সাঁতার!
ঠিক এমনি একটা বিশাল বড় আকাশ
এই ঘরেরই ভেতরেই বিরাজ করেরে!
আমার চারদিকে যে দেয়াল
সেখানে দিন রাত বাগানের ফুল প্রস্ফুটিত হয়,,
হাজার পাঠশালার জন্ম হয় বিবেকে!
আমার যে ছাঁদ, সেখানে তারাদের
মেলা বসানোর সে যে কি হিরিক,,,!
কীভাবে বলব,,আমার মেঝের উপর দিয়েই,,
বয়ে যায় গঙ্গা,যমুনা,সরস্বতী আর কত কি,,,
আমার ঘরের বাতাসে এত শুদ্ধতার সাগর শব্দ,,
যা আর কোথাও পেলাম না অতীতের পায়ে হেটে।
তাই এই ঘরের ভেতরেই কয়েকটা টবে
কিছু গাছ লাগিয়েছি,,ঠিক মনের আশার মত।
জানিস গাছ গুলি না এত সতেজ, এত জীবন্ত,,
আমার হাতের ছোয়া পেয়ে,,,
মাঝে মাঝে বাইরের উদ্যানের প্রতি মায়া হয়,,


সে  মায়ায় মায়ায় তোকে আর কি বলব,,
আমার রান্না ঘরের প্রতিটা কৌটার মাঝেই
নানান মমতা ভর্তি সুখের মশল্লা।
আমার যে শৌচাগার ,, যেখানে দুটি সাপ
জন্ম স্নান করে অনিঃশেষ!
সেখানে অনেক গুলি আয়না লাগানো,,
বিশ্বাস করবি কিনা জানি না,,,
স্নান করার সময় আয়নার মাঝে নিজের গায়ের
কালো কালো তিল দেখার যে কি অতৃপ্ত আনন্দ
তা আর কি বলব!
বুঝাতেই পারব না,,,
ঘরের টিভির ভেতর এত মানুষের ছবি
বাহির থেকে আসে যে কীভাবে?
কেমনে বাতির আলো গুলি শপথনিয়ে
ভুলিয়ে রাখে দিনের আলোর কথা,,,,!


খুব বেশি কিছু বলছি তাই ভাবছিস,, ,,!
ভাবছিস কার্তিক মাসে বসে শ্রাবণের গান শুনাচ্ছি,,এইতো,,,!
শুন শুন যখন চাকু দিয়ে সবজি কাটি, মাছ কাটি
কিবা অন্য কিছু তখন মনে হয়,,,
বেঁচে থাকার জন্য সত্যি কিছু না কিছু কাটার
অবশ্যই দরকার-রে,,,
প্রেমের জন্য অমৃতের বিসর্জন হলেও
তাও দরকার।


তাই আমি শ্বাস দিয়ে শ্বাস স্পর্শ টাকেই
নিলাম কেটে
নজর দিয়ে পৌছে গেলাম
সুদূর হতে সুদূরে, ঠিক তার কাছে।
অনুভবের প্রজাপতি দিয়ে
ধরে আনলাম হৃদয়ের প্রজাপতি,,।
ধরে আনলাম আমার সুখ,আমার স্বাচ্ছন্দ্য
আমার মুক্তি আর একগুচ্ছ আপন স্বাধীনতা।

প্রেমের মন্দিরে অদৃশ্য দেবতার দৃশ্যগত পূজার
এটাই যে সার্থকতা।