শুন শুন মেয়ে চিঠি লিখেছে,,,
লিখেছে,,বাবা কাল দুর্গা পূজা,,,,
মা আসছেন ফিরে ঘরে,,পুজা খেতে,,,
সঙ্গে কার্তিক, গণেশ লক্ষ্মী সসরস্বতী সবাই আসছেন,,
তুমি আসবে না বাবা,,?
বাড়িতে কত পুরুনো বাতিও জ্বলে উঠেছে,,,
না হাসা লোকটার মুখেও একটা হাসি এসেছে
যে কোনদিন চোখ মেলে দেখেনি বাইর পানে,,,
তার চোখেও আজ এত বড় পৃথিবী,,,
কিন্ত তোমার স্টেশন হতে
আমাদের বাড়ির পাশের স্টেশন কত দূর বাবা
বাবা,ও বাবা শুনো,,,
আমাদের বাড়িতে হাসটার না অনেক গুলি বাচ্চা
একটা বাচ্চাকেও সে কভু দূরে নিতে দেয় না,,
আমি একটু আদর করব,,,তাও পারি না
তুমি বাড়ি আসলে হাসটার কাছ থেকে
একটা বাচ্চা এনে দিতে পারবে বাবা,,,পারবে তো?


আপনাদের কি মনে হয়,, পারবো?
আচ্ছা পারি বা নাই পারি কি উত্তর
লিখে পাঠাই মেয়েটাকে,,একটু বলতে পারো,,,
মেয়েটার বয়স কবে যে পাঁচ বছর হয়ে গেল,,,
তাই জানি না,,,জন্ম নিয়েছে যেদিন
ঠিক সেদিনই একটা গুলি,
চলে গিয়েছিল মাথাটার পাশ দিয়ে,,,
কাশ্মীরের মাটিতে কিছু পোকা ধরেছে
এই পোকা গুলি না সারিয়ে,,,
কি এমন লিখি বলতো,,,?
কি ই বা লেখার আছে,,,?


কিন্তু একটা পাঁচ বছরের মেয়ে
কেমন করে চিঠি লিখতেই বা পারে,,,,?
নিশ্চয়ই সব তার মায়ের হাতে লিখা,,,,
নিজের মনের কথা মেয়ের নাম দিয়ে চালিয়ে দিল,,
এই আর কি,,হা হা হা,,,
তবে আমার মনের কথা কারে দিয়ে চালাব?
কারে দিয়ে?
কোন নদীরে জলের সাথে মিশিয়ে দিব
আমার মনের বাতাস,,,
না কি আমার কোন মনই নেই,,,
আমার কোন আশাই নেই,,,
আমার ভেতরে কোন রঙ ই নেই,,
কারন আমি যে এক ফৌজি,,,,।
আমি পাথরের চেয়েও পাথর,,,
আগুনের চেয়েও আগুন।
আমি যে মাটির সীমানায় থাকি
সেখানে মালির চাষ হয়,,ফুলের না।


সীমানার পাশে সীমানা হয়ে  দাঁড়িয়ে থেকে
যখন কোন একদিন যাব ফিরে ঘরে,,,
তখন জানব,, আমার মা ই নেই পৃথিবীতে,,,
শুনেছেন আমার মা,,গর্বধারিনী মা ই নেই পৃথিবীতে
আমার বাবা হঠাৎ ঘুমের মধ্যেই চলে গেছে পরদেশে,,,
আর আমি তখন সীমানায়
বুক পাতিয়ে বন্দুকের নিশানায়,,,
শত্রুর সম্মুখে শত্রু শত্রু বেলায়।।


আমি ফৌজি,,,এক পতাকার ফৌজি
তাই আমার কোন অধিকার নেই
একটা পাখির মত ডানা মেলে উড়ে গিয়ে
মায়ের মুখে শেষ জল তুলে দেবার,,,
আমার অধিকার নেই বাবার চিতায় আগুন জ্বালাবার,,,
আমার  কোন অধিকার নেই
তাদের লাশ কাঁধে নেবার,,
আমি ফৌজি,,,,,,
আমার কোন সুখ নেই,সংসার নেই,,,
আমার কোন বন্ধু নেই,কোন আত্মীয় নেই,,,
আমি শুকনো কাঠের মত এক দেয়াল,,,
আমার ইচ্ছে হয় না গঙ্গার বুকে সাঁতরানোর,,,
আমার মনেই হয় না মেলায় মেলায় বেড়ানোর,,,
আমার সাধ ই জাগে না কারো হাতে  কিছু খাওয়ার
আমার ভালই লাগে না,,,ভালোভাবে একটু ঘুমাবার
আমার ভাই পড়ে থাকবে হাসপাতালে,,,
বোন চলে যাবে কোমায়,,,
আমার ঘরের গবাদি পশুটাও থাকবে আরো বোবা
আমার কোন মন্দির নেই,নেই মসজিদ কিবা কাবা।
আমার গাওয়ের মাটি পাবে না,  দেখা আমার
আমাকে পাশে বসিয়ে গল্প করার অধিকার
নেই দিদিমার,,,


কারন আমি এক ফৌজি
আমি এক পতাকার প্রহরী
আমার জন্য আছে,  জয় হিন্দ
আমার জন্য আছে,, বন্দে মাতরম
আমার জন্য আছে,,, আমার জন্মমাটি
যে মাটি ই আমার সব,,
মাটি ই আমার দুর্গাপূজা
আমার একান্ত রব।