সামনেই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন।আমার আজকের লেখাটি এই নির্বাচনের ভোটারদের কাছে উৎসর্গ করলাম।



মা,,,তুমি না বলেছিলে চিঠি লিখবে,,,
সকালে যে চিঠিটা লিখিছিলে,,
ওই ডালিম গাছের ছায়ার নিচে বসে,,,
সেই ডালিম গাছে অজস্র কলি এসেছে মা,,,
কয়েকটা কলি ফুলও হয়ে গেছে,,
এবার যে বাকী কলি গুলিকে ফুল বানাতে হবে,,,
সারা গাছ ভরিয়ে দিতে হবে ফলে ফলে।


তাই বলছিলাম আবার কি লিখবে মা
এমন আরেকটা চিঠি,,,,?
যে চিঠির ভেতর লিখবে,,,,
আমাদের পায়ের নিচের মাটির কথা,,,
মাটির জন্ম কথা,,,
যে চিঠিতে লিখবে এই মাটির উপর
আকাশ ছায়ার কথা,,,,
বর্ষা বাদল,কাল বৈশাখী ঝড়দের কথাও লিখিও,,
ওরা তো আমাদেরই তাই না?
ছয়টা ঋতুর সাথে মেলামেশা করেইতো
তোমার নদী গুলির জল বাড়ে আর কমে!


ওমা বলো না,, লিখবে কিনা এমন,,,!
যদি লিখো,,,তাহলে একটা দাবী করি মা,,,,
লেখার সময় তোমার হাতে যেন কাদা মাখা থাকে,,,
পাট ডুবানো জলের ঘ্রাণ যেন
তোমার আচলে লেগে থাকে,,
শুনেছি অনেক দাইমা তোমার জন্মের সময়
দিয়েছিল আত্মাহুতি,,,
কষ্ট করে হলেও তাদের জন্য এক ফোটা জল
চিঠিটার উপর ফেলে,,,,, লিখিও,,,
যদি সম্ভব হয়,,রেসকোর্স ময়দানে বসেই নাহয়
চিঠিটা লিখিও,,,,


লিখিও আম গাছের কথা,,
কাঁঠাল দেশের কাঁঠাল ফলের কথা,,
ও মা তোমার শাপলা ফুল গুলি কেমন আছে,,?
রোজ ফোটেত,,,
বিলের বুকে জলটা একটু বাড়িয়ে দিও মা
যেভাবে চারদিকে উষ্ণতা বাড়ছে,,,,
সেখানে শাপলাদের নিয়ে অনেক চিন্তা হয়,,,।
বাঁচবে তো ওরা,,,?
তবে কেন জানি বিশ্বাস করতে বিশ্বাস হয়
ওরা বাঁচবে,,,
বিজয় দিবস বাঁচলে ওরা বাঁচবে।
মুক্তিযোদ্ধারা বাঁচলে ওরা বাঁচবে!!


আচ্ছা মা তোমার দোয়েল পাখি গান গায়,,
ওই যে যেদিন আমাকে
স্বরবর্ণ,ব্যঞ্জনবর্ণ শিখিয়ে বলেছিলে,,
"দোয়েল সোনা লেজ নাড়ি
গান গায় মনের সুখে।
দেশ ভর্তি হাসি খুশি
আনলো মুজিব শেখে।"


সেদিন থেকেই এই ছড়াটাকেই
আমি গান বানিয়ে নিয়েছিলাম,,,
আজো আমি গাই,,
আমার পাশে দিনের আলোটাও রাতের মত
তবু আমি গাই,,,আমি চিৎকার করে গাই,,,
মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে জীবনসন্ধানী এই গানটাই গাই,,,
পাতাল রেল পথে চড়ে চড়ে,, রেল কে
ঠিক এই গানটাই শুনাই,,,
তুষারে আবৃত্ত ঘাস লতাপাতাকেও শুনাই,,
মন ভরে শুনাই,,,
পাশ দিয়ে হন হন করে চলে যায়
পাগলা ঘোড়া,,,
চার্চের ঘন্টিটাও বেশ বাজে দমে দমে,,
এর মধ্যেই বিদেশের গাছ গুলি
পাতা ঝেড়ে ফেলে হয়েছে বিধবা বারংবার,,
কিন্তু আমি,,গেয়েই যাচ্ছি,, গেয়েই যাচ্ছি,,,
হয়ত আমার গান তুমি শুনো না,,মা
কিন্তু তোমার অন্তর,,অবশ্যই শুনে।
মায়ের সাথে সন্তানের অন্তর যে
সদা কথা বলে মা,,,সদা কথা বলে।


এই দেখ,,চোখ দিয়ে এক ফোটা জল চলে আসলো,,
দাঁড়াও জল টা ফ্রিজে রেখে আসি,,,
এমন অমুল্য ধন,,,যদি আবার কোনদিন
দেখতে হয়,,,,, নিজেরই এক ভিন্ন বেশে।
সময়ের যে,,, বদল গো মা,,,
কে জানে আমিই কি হয়ে যাই,,,!!
৭১ যদি ৭৫ হতে পারে
তাহলে আমাকেও বিশ্বাস করা পাপ মা,,পাপ।


যাই হোক,,,এবার চিঠিটা লিখেই ফেলো,,,
তুমি তোমার জন্য নয়,,,
আমার জন্য,তার জন্য,,তাদের জন্য
কোন পথে যাবে?
জন্মের পথে,,নাকি
যারা আতুর ঘরে তোমার মুখে
দিতে চেয়েছিল নুন!!
তোমার আঁচলে তোমাকেই দিতে চেয়েছিল ফাঁসি
তোমাকে করতে চেয়েছিল আজন্ম দাসী,,শুধু দাসী,,,


তুমি কি তাদের পথে যাবে?
লিখো মা,,বড় বড় করে লিখো,,
তুমি আজ কাদের পথে যাবে?


লিখিও মা,,?লিখতে থাকিও,,,
আজ,,, কাল,,কিবা পরশু।
লিখতেই থাকিও,,,লিখতেই থাকিও,,
লিখতেই থাকিও!!
লিখবে তো?


############
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
২৭/১২/১৮